ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবার বিশেষ বার্তা

সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবার বিশেষ বার্তা

কাজী নওশাবা আহমেদ

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৪ | ১৬:১৮ | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৪ | ১৯:০৭

শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়। ধর্মীয়সহ বিশেষ দিন উপলক্ষে ফটোশুটে অংশ নেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। তবে তার প্রত্যেকটি ফটোশুটে থাকে সম্প্রতির বার্তাও। এবার দুর্গাপূজাতেই তার ব্যতিক্রম হল না। শুভ বিজয়ার একদিন আগেই সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে ধরা দিলেন এই অভিনেত্রী।

গত বছর নওশাবা দূর্গারূপে ভূমিকা দেখিয়েছিলেন ব্যস্ত ইটপাথরের রাজধানীর প্রেক্ষাপটে। এবার তার ফটোশুটের থিম ‘দুর্গার সমুদ্র’। তাই তার এবারের ছবিগুলোতে সমূদ্র বড় ভূমিকা পালন করেছে। প্রতিটি ছবিতে উঠে এসেছে সমুদ্র বিষয়ক নানা কার্যক্রম।

এবারের ফটোশুটটির সবচেয়ে বিশেষ দিক হল- সমসাময়িক রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়কে দেবী রূপে নারী শক্তির ঢেউয়ে প্লাবিত করার প্রয়াস করা হয়েছে। নওশাবা দুর্গার বেশে হাজির হয়ে তুলে ধরেছেন ধর্মীয় সম্প্রীতি, সমুদ্রের পরিবেশ দূষণ ইস্যু, দুর্গার মাতৃরূপ, সাহায্যকারী রূপ, ত্রাণকর্তার ভূমিকা ইত্যাদি।

এবারের দুর্গাপূজা উপলক্ষেও বিশেষ ফটোশুট ও ভিডিওচিত্র নির্মাণ করেছে নওশাবার ‘টুগেদার উই ক্যান’ ও ফটোগ্রাফি এজেন্সি ‘মোমেন্টওয়ালা’। পরিচালনা ও ফটোগ্রাফি করেছেন এমডি নাজমুল হোসাইন। নওশাবাকে দেবী দুর্গার বেশে সাজিয়েছেন ইমন হোসেন। ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘অঙ্গরাগ কুটির’-এর শাড়ি আর জুয়েলারি ব্র্যান্ড ‘খুঁত’-এর গয়না পরেছেন তিনি। ভিডিওর সঙ্গীতায়োজন করেছেন ইজাজ ফারাহ। সিনেমাটোগ্রাফি ও এডিটিং-এ ছিলেন ইমরানুজ্জামান সোহাগ। এক্সিকিউটিভ প্রোডিউসার অমিত সিনহা।

আয়োজন প্রসঙ্গে নওশাবা বলেন, “চার বছর ধরে মোমেন্টওয়ালার সঙ্গে দুর্গার ফটোশুট করে আসছি। এবারের থিম ‘দুর্গার সমুদ্র’। তাই তার ছবিগুলোতে সমুদ্রের ভূমিকা অনেক বড়। টুগেদার উই ক্যান ও মোমেন্টওয়ালার যৌথ প্রয়াস এটি। একজন শিল্পীর কাজই হচ্ছে তাঁর শিল্পের মাধ্যমে বার্তা দেওয়া। আমাদের টিমের প্রত্যেক মানুষ শিল্পী। কোলাবরেশনে কাজটি করেছি। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও নারীদের সঙ্গে যা হচ্ছে, শিল্পের মাধ্যমে তার বার্তা দিতে চেয়েছি। একটা ছবি দেখে যদি কারও ভেতরে বোধ জাগ্রত হয়, সেটাই আমাদের প্রাপ্য। আমরা চাই, বাংলাদেশ মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীতে জায়গা পাক।”

নওশাবা বলেন, ‘দুর্গা ভালোবাসা আর সম্প্রীতির আধার। দুর্গা কেবল মন্দিরে পূজনীয় দেবী নন! তিনি প্রত্যেক নারীর আত্মার প্রতিফলন। সমুদ্রের মতো তিনিও সর্বব্যাপী; সবকিছুকে আলিঙ্গন করেন। দুর্গা শান্তি ও বিজয়ের প্রতীক। আমাদের এবারের আয়োজন সমসাময়িক রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়কে দেবীরূপে নারীশক্তির ঢেউয়ে প্লাবিত করার প্রয়াস। শিল্পীরা যে সচেতন– তা সবার সামনে আনারও এটি লক্ষ্য। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে কিছু স্বাধীন শিল্পী সবার কথাগুলো স্বাধীনভাবে বলতে চেয়েছেন এই আয়োজনে। এখানে আমরা ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভালোবাসার  কথা বলেছি। আশা করছি, আয়োজনটি সবার ভালো লাগবে।

কাজটি কতটা চ্যালেঞ্জিং ছিল? জবাবে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘থিয়েটার-নাটক-সিনেমা হচ্ছে না। কারোরই কোনো কাজ নেই। নতুন এক পরিস্থিতিতে শুটটি করেছি। এ সময় নিজেদের অর্থায়নে কাজ করতে যাওয়া এক ধরনের পাগলামিই বটে। শেষ সময়ে কিছু মানুষের উৎসাহে কাজটি সুন্দরভাবে করতে পেরেছি। যারা কাজের সঙ্গে যুক্ত সবাই স্ট্রাগল করছি। প্রতিবছর আমরা একসঙ্গে কিছু করার চেষ্টা করি। বন্ধুদের স্পন্সরে এটি হয়েছে। কাজটি করার আগে এক ধরনের ভয় কাজ করছিল। আগেও মানুষ ভয় পেত। এই সময়ে পূজার শুট আদৌ ঠিক হবে কিনা, এটি ভেবে। এমনকি শুটিংয়ে পাঁচ ঘণ্টা আগেও জানতাম না, আমরা শুটিংয়ে যেতে পারব। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে কাজটি করতে হয়েছে। অল্প বাজেটের এ কাজে আর্ট ওয়ার্কই বেশি ছিল। চার-পাঁচ মাস ধরে পরিকল্পনা করেছি। দেড় দিনে শুট শেষ। পানিতে আমাকে অনেকবার চুবানো হয়েছে। ভেজা অবস্থায় আরেকটি শাড়ি পরে আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছি। এটি তো আমরা লাভের আশায় করিনি। দিন শেষে কাজটি সবার ভালো লেগেছে বলে কষ্ট সার্থক। ৮ জনের টিম মিলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে শুটিং করেছি। সব সময় দেখেছি, কিছু মানুষ পাশে এসে দাঁড়িয়ে যায়। কক্সবাজারের মানুষের অনেক সহযোগিতা পেয়েছি বলে কাজ করাটা সহজ হয়েছে।’

 

আরও পড়ুন

×