শিক্ষা-মননে পাপিয়া সারোয়ার ছিলেন সমৃদ্ধ এক শিল্পী: অদিতি মহসিন

পাপিয়া সারোয়ার। ছবি: ফেসবুক
বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৪:১৮ | আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৫:৪৬
একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুতে দেশের সংগীতাঙ্গনের শোকের ছায়া নেমে এসেছে। কিংবদন্তী এই শিল্পীর মৃত্যুর খবরে শোকাহত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী অদিতি মহসিন।
সমকালকে তিনি বলেন, ‘পাপিয়া সারোয়ারসহ তার সময়ে যারা ছিলেন তারা স্বাধীনতার পরবর্তী প্রথম প্রজন্মের শিল্পী। এদেশের সংগীতে তাদের অনেক অনেক অবদান। সেই সময় যে শ্রোতা তৈরি হয়েছে ওনাদের গান শুনেই তৈরি হয়েছে। তাদের অবদান চিরস্মরণীয়। শিক্ষা-মননে পাপিয়া সারোয়ার ছিলেন সমৃদ্ধ এক শিল্পী। তার চলে যাওয়াটা দেশের সংগীতাঙ্গনের বড় ক্ষতি।’
তিনি বলেন, ‘পাপিয়া সারোয়ারের গান টিভিতে দেখেই আমরা বড় হয়েছি। আমি যখন ভারতের শান্তি নিকেতনে পড়তে গেলাম তখন তাদের কাছে থেকে দেখা। সেই সময় তিনিও সেখানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে পাশ করে চলে আসার পর দেশে গান করা শুরু করি, তখন তো অনেক অনেক স্মৃতি। একসঙ্গে অনুষ্ঠানে যাওয়াসহ অনেক অনেক স্মৃতি।’
পাপিয়া সারোয়ারের স্নেহভাজন ছিলেন অদিতি মহসিন। মাঝে মাঝে বাড়িতে নানা বিষয় নিয়েও আলোচনা হত তাদের। অনেক বিষয় অদিতির সঙ্গে শেয়ারও করতেন পাপিয়া।
অদিতি মহসিন বলেন, ‘বিশেষ করে বলতে হয়, পাপিয়া সারোয়ারের বাড়িতে আমি মাঝে মাঝেই যেতাম। কারণ, ধানমণ্ডিতে আমরা খুব কাছাকছি থাকতাম। তিনি খুব স্নেহ করে, আদর করে কথা বলতেন। সেই সঙ্গে গানের বিষয়ে নানা কথা শেয়ার করতেন। তার সঙ্গে স্মৃতি আসলে বলে শেষ করা যাবে না। তার চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না।’
প্রসঙ্গত, পাপিয়া সারোয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। পরে ১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে ভারত যান। তার আগে তিনি ১৯৬৬ সালে ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন এবং জাহেদুর রহিমের কাছে এবং পরবর্তীতে বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে সংগীতদীক্ষা নেন। পাপিয়া ১৯৯৬ সালে ‘গীতসুধা’ নামে একটি গানের দল প্রতষ্ঠা করেছিলেন।
দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে রবীন্দ্র গানের জন্য কোটি শ্রোতার ভালোবাসা তিনি পেয়েছেন। আধুনিক গানেও আছে তার সাফল্য। ‘নাই টেলিফোন নাইরে পিয়ন নাইরে টেলিগ্রাম’ গানটি তাকে আপামর বাংলা গানের শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা দিয়েছে।
পাপিয়া সারোয়ার ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। ২০২১ সালে পেয়েছেন একুশে পদক।
- বিষয় :
- পাপিয়া সারোয়ার
- সংগীতশিল্পী
- সংগীত