'নাটকে বেশি বাজেটের অপব্যবহারও হয়'

অভিনেত্রী দীপা খন্দকার
বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২১ | ০৬:১৯ | আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ | ০৬:২৫
দীপা খন্দকার। নন্দিত অভিনেত্রী। বিনোদন অঙ্গনে এরই মধ্যে তিনি পাড়ি দিয়েছেন দুই দশকেরও বেশি সময়। পেয়েছেন অগণিত মানুষের ভালোবাসা। সমসাময়িক ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে সমকালের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি
২২ বছরের ক্যারিয়ারে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে ভেবেছেন কখনও?
দেখতে দেখতে কখন যে এতটা সময় পার হলো, টেরই পাইনি। এত বছর এই সেক্টরে কাজ করতে পারছি, সেটা বড় বিষয়। তবে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে কখনও মাথা ঘামাইনি। ছোট একটি দেশ। নানা সীমাবদ্ধতার ভেতর দিয়ে আমাদের চলতে হয়। সব মিলিয়ে ভালোই আছি। অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকতে চাই, যত দিন বাঁচব, মন-প্রাণ দিয়ে অভিনয় করব- এটুকুই চাওয়া। সেই চাওয়া থেকেই আজও অভিনয় করছি।
সম্প্রতি 'রিভেঞ্জ' সিনেমায় খল চরিত্রে অভিনয় করেছেন...
শুরু থেকেই সব সময় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছি। এই সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ নেতিবাচক চরিত্র পেয়েছি বলেই অভিনয়ে রাজি হয়েছি। আগের ছবিগুলোতে নায়কের বোন বা মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। চরিত্রগুলো ফুটিয়ে তুলতে আলাদা প্রস্তুতি নিতে হয়নি। কিন্তু নেতিবাচক চরিত্রে এই প্রথম। যেজন্য আলাদা প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। দেশি-বিদেশি খল চরিত্রপ্রধান বেশকিছু সিনেমা দেখেছি। এই ছবিতে আমাকে দেখা যাবে একজন রাজনীতিবিদের ভূমিকায়। যে একসময় তার স্বামীর বিপক্ষে চলে যায়। ঘটে নানা ঘটনা।
টিভি নাটকের পাশাপাশি সিনেমায় নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে?
আমাদের দেশের সিনেমায় সিনিয়রদের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র থাকে না। যেজন্য চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় এতদিন সিনেমায় অভিনয় করিনি। নিয়মিত বা অনিয়মিত বিষয় নয়। ভালো চরিত্র পেলেই কাজ করি।
অনেকেই বলছেন, সিনেমায় দর্শকের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। এর কী কারণ?
করোনার কারণে এখন সব অঙ্গনের অবস্থা খারাপ। তবে সব মিলিয়ে যদি বলি, তা হলে বলব সিনেমা হলের পরিবেশ খারাপ থাকায় দর্শক হলবিমুখ হয়েছেন। পাশাপাশি দেশে ভালো গল্পের সিনেমা নির্মাণও কমেছে। আমার মনে হয়, পারিবারিক গল্প আরও বেশি হওয়া দরকার। পশ্চিমবঙ্গের সিনেমার দিকে তাকালে খেয়াল করবেন, ভালো গল্প নিয়ে কাজ করায় কম বাজেটের সিনেমাও দর্শক ঠিকই দেখছেন। ফলে আমাদের দেশেও ভালো গল্পের মাধ্যমে সিনেমায় দর্শক ফেরাতে হবে।
নাটকেও ব্যস্ত সময় কাটছে নিশ্চয়ই...
হ্যাঁ। এখন এক ঘণ্টার নাটকের পাশাপাশি ধারাবাহিক নাটকের কাজ নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছি। এরই মধ্যে অভিনেত্রী ও নির্মাতা নিমা রহমানের পরিচালনায় 'গুলশান অ্যাভিনিউ টু' ও মীর সাব্বিরের পরিচালনায় 'বাকের খনি' ধারাবাহিকে অভিনয় করছি। এ ছাড়া আসছে কোরবানির ঈদের বেশক'টি নাটকে অভিনয় করার পরিকল্পনা আছে। এগুলোর বাইরে নাগরিক টিভিতে প্রচার হচ্ছে আমার উপস্থাপনায় রান্নাবিষয়ক অনুষ্ঠান। প্রায় পাঁচ বছর পর আবারও উপস্থাপনা করছি।
টিভি নাটকের সংকট ও সম্ভাবনার কথা বলুন?
টিভি মিডিয়ার সংকটের চেয়ে আমি সম্ভাবনাকে বড় করে দেখছি। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ভালো কিছু হচ্ছে। কারিগরি দিক দিয়ে আমরা অনেক উন্নত হচ্ছি। সিনেমার ক্ষেত্রেও বলব, আমাদের সিনেমা এখন কান উৎসবে যাচ্ছে। এটা আমাদের বড় অর্জন। অনেকে নাটকে বাজেট সংকটের কথা জোরেশোরে বলছেন। বেশি বাজেটের অপব্যবহার করতে দেখি চারপাশে। খেয়াল করে দেখুন, কম বাজেটেও ভালো নাটক হচ্ছে। বাজেটের ওপর নির্ভর নাটক বানানো উচিত নির্মাতাদের। বাজেট যখন কম থাকবে, তখন পরিকল্পনাও ছোট করতে হবে। বেছে নিতে হবে ওই রকম গল্পও। আমি বিশাল পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামলাম, বাজেট খুবই অল্প। তখন তো সমস্যা হবেই।
নাটকের পাশাপাশি ওয়েব ছবিতে অভিনয় করছেন। নতুন এ মাধ্যমটিকে কীভাবে দেখছেন?
সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন মাধ্যম আসবে। এটাকে স্বাগত জানাতে হবে। নতুন মানেই খারাপ- এ ধারণা আমাদের পাল্টাতে হবে। আশা করতে হবে নিশ্চয় নতুন কিছুতে অবশ্যই নতুনত্ব থাকবে। তা না হলে আমরা এগোতে পারব না। আমার বেড়ে ওঠা ও সন্তানের বেড়ে ওঠার মধ্যে অনেক পার্থক্য। অনেক নতুন সাপোর্ট নিয়ে সন্তান বড় হচ্ছে। যে সাপোর্টগুলো আমাদের সময় ছিল না। সারাবিশ্বেই ওয়েব ছবির জোয়ার চলছে। দেশেও কিছু ওটিটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে। আমাদের ব্যালেন্স রেখে নিজস্ব সংস্কৃতির সঙ্গে যায়, এমন কিছু কনটেন্ট নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
জীবনে সবচেয়ে বড় পাওয়া কী?
একটি ব্যালেন্স লাইফ পেয়েছি। এখন অভিনয় ও সংসার- দুটিই চালিয়ে যাচ্ছি। সবকিছু মিলিয়ে সম্মানজনক জীবন পার করছি- এটিই বড় পাওয়া।
- বিষয় :
- দীপা খন্দকার
- বিনোদন