ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

প্রয়োজন আস্থার পরশ

প্রয়োজন আস্থার পরশ

নাহিদা আহমেদ

প্রকাশ: ০৬ আগস্ট ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২২ | ২১:৫৬

জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের শারীরিক বিকাশে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অতিক্রম করতে হয়। সেই ধাপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বয়ঃসন্ধিকাল। সাধারণত ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সকে বলা হয় বয়ঃসন্ধিকাল। এই সময়ে ছেলেমেয়েদের শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তখন দরকার হয় বিশেষ পরিচর্যা।

শারীরিক পরিবর্তন
ছেলেদের ক্ষেত্রে :দেহের উচ্চতা বাড়ে। মাংসপেশি দৃঢ় হতে থাকে। মুখে গোঁফ-দাড়ি, বগল, বুক ও তলপেটে লোম গজায়। ঘামে দুর্গন্ধ বাড়ে। গলার স্বর অল্প সময়ের জন্য ভেঙে যায় ও ভারী হয়। মুখে তেল বাড়ে ও ব্রণ হয়। যৌন কামনা বাড়ে ও স্বপ্নে বীর্যপাত হয়।
মেয়েদের ক্ষেত্রে :দেহের উচ্চতা বাড়ে। মুখে তেল বাড়ে ও ব্রণ হয়। স্তন ও নিতম্ব ভারী হয়। বগলে লোম গজায়। মুখেও সামান্য লোম গজায়। ঘামে দুর্গন্ধ বাড়ে। মাসিক ঋতুস্রাব শুরু হয়।

মানসিক পরিবর্তন
বয়ঃসন্ধিকাল থেকে ছেলেমেয়েদের আত্মপরিচয় গড়ে উঠতে শুরু করে। তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গা তৈরি হয়- তার কী পছন্দ-অপছন্দ, সে কী চায়। এ ছাড়া জীবন, সমাজ, সংস্কৃতি, বিশ্বাস সম্পর্কে তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে। জীবনের এই পর্যায়ে তারা পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন মানুষ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ছোট থেকে বড় হওয়ার এই সময়ে বড় ধরনের মানসিক ভাঙাগড়ার মধ্যে যেতে হয় এই ছেলেমেয়েদের।

পরিবার ও সমাজের ভূমিকা
মানসিক সমস্যাগুলো সমাধানে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজ। ছেলেমেয়েদের কৈশোরে পদার্পণ করার আগেই এ সম্পর্কে অবহিত করা উচিত যে, প্রকৃতিগত কারণে আমাদের সবারই এ ধরনের পরিবর্তন ঘটে থাকে। এতে নিজেকে অপরাধী ভাবার কিছু নেই। এই দায়িত্ব প্রধানত পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিতে হয়। বয়ঃসন্ধিকালের পরিবর্তন শুরু হলে তারা যেন পরিবার বা কাছের নির্ভরযোগ্য অভিভাবক যেমন মা-বাবা, ভাই-বোন বা শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানায়। এ সম্পর্কে তাকে আগে থেকেই বিষয়টি বুঝিয়ে বলতে হবে।

বয়ঃসন্ধিকালের ছেলেমেয়েদের শারীরিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক পরিবর্তন ঘটে। হঠাৎ পরিবর্তনের জন্য তারা সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। তাদের সঙ্গে কোনো প্রকার রাগারাগি বা কঠোর শাসন না দেখিয়ে আদর করে বুঝিয়ে বলতে হয়। এতে তাদের মানসিক চাপ কেটে যাবে।
এ সময়ে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তনের কারণে পুষ্টিকর খাদ্যের চাহিদার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। রক্তস্বল্পতা বা দুর্বলতা যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 

লেখক :পুষ্টিবিদ

আরও পড়ুন

×