ফিট থাকুন সবসময়
-samakal-630eef8f7ea9d.jpg)
কবীর সোহাগ
প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২২ | ২৩:২০
স্বাস্থ্যই সম্পদ। স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রতিনিয়ত নিজের মানসিক ও শারীরিক অবস্থার দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। কেননা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন শুরু হয়। অনেক সময় নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস কমতে থাকে। বয়স হয়ে গেছে, নতুন করে শুরু করার আর সময় নেই- এমন ভাবনা মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। এসব হতাশাজনক ভাবনাকে বিদায় দিন। সব বয়সে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ফিট রাখার চেষ্টা করুন।
মনোশিক্ষাবিদ এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক মোহিত কামালের মতে, সুস্থ থাকতে সব বয়সের মানুষের ফিটনেসের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। তবে বয়স ৩০-৩৫ পেরুলে স্বাস্থ্যের দিকে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। ৩০-৩৫ এর পর শরীর ও মনের যে পরিবর্তন আসে, তা কোনোভাবেই উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। এ সময় একদল প্রতিষ্ঠা পায়, আরেক দল জীবনযুদ্ধে ব্যর্থ হয়। যারা প্রতিষ্ঠা পায় তাদের মধ্যে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আসে। যারা ব্যর্থ তারা হতাশ হয়ে পড়ে। নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে শরীরের উন্নয়ন প্রক্রিয়া কমতে শুরু করে। ক্যান্সার, হার্টের রোগ, ডায়াবেটিসসহ একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই এ সময়ে রক্তের প্রবাহ সচল রাখতে হবে। রক্তপ্রবাহ সচল থাকলে শরীর ও মন সতেজ থাকে। দেহের বিভিন্ন কোষে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে হবে। - জানান এই মনোশিক্ষাবিদ।
তিনি বলেন, 'এই সময় বাড়তি যত্ন না নিলে ৪৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে নিশ্চিতভাবে ডায়াবেটিস-হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে পড়তে হবে। সুতরাং ৪০ থেকে ৫০ বছর যদি সুস্থ থাকতে পারি তাহলে ৬০ বছরেও সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব।'
মিস্টার বাংলাদেশ এবং যমুনা ফিউচার ফিটনেস জিমের প্রশিক্ষক তামীর আনোয়ার বলেন, 'এ সময় শারীরিক নানা পরিবর্তন লক্ষণীয়। বর্তমানে ৩৫-এর পর স্ট্রোক করার প্রবণতা বেড়ে গেছে। মানুষের গড় আয়ু কমতে শুরু করেছে। এর প্রধান কারণ, আমরা নিজের শরীরের যত্ন নিই না।'
তিনি বলেন, 'আমার মতে, সব বয়সে তো বটেই, ৩০-৩৫ বছরের পর থেকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার ওপর। এ সময় সুষম খাবার বেশি খেতে হবে এবং সারাদিনে অন্তত ২-৩ ঘণ্টা পরপর পরিমিত খাবার খেতে হবে। আমরা সাধারণত রাতে বেশি খাই। এটা স্বাস্থ্যের জন্য খুব ক্ষতিকর। রাতে শরীরের বিশ্রাম দরকার। রাতে দেরি করে খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। ভারী খাবার খেলে সহজে হজম হয় না। ফলে বুক জ্বালা, পেট ব্যথা, বমি, গ্যাস এবং ঘুমের সমস্যা হয়।'
৩০-৩৫ বছরের পর থেকে শরীর তার স্বাভাবিক গতি হারাতে থাকে। শরীর গঠনের ক্ষেত্রে ২০ বছরে যে পরিমাণ মাসল ডেভেলপ হয়, ৩৫ বছরে তা সহজে হয় না। সবাই বডি বিল্ডিং করতে জিমে যান না। যাঁরা সুস্থ থাকার জন্য জিমে যান, তাঁরা কার্ডিও, সাইক্লিং এবং ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন। যাঁরা বডি বিল্ডিং করেন তাঁদের এ সময় হেভিওয়েট লিফটিংয়ের ক্ষেত্রেও অধিক সচেতন হতে হবে বলে জানান তামীর আনোয়ার।
এ ফিটনেস প্রশিক্ষক জানান, এ সময় ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমতে থাকে। অনেকের হাড়ের ক্ষয় ও জয়েন্ট পেইন শুরু হয়। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ফলে চেহারায় বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে। যাঁরা জিমে যেতে পারেন না, তাঁরা সাধারণত ঘরে বসে, সুইমিংপুলে বা পার্কে গিয়েও শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন। এ ছাড়াও প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টা হাঁটার অভ্যাস করতে হবে। এ সময় ভিটামিন এবং খনিজের কোনো বিকল্প হয় না। তাই তো শরীরে যাতে এই উপাদানটির ঘাটতি না ঘটে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। া
- বিষয় :
- ফিটনেস