ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বার বার পরীক্ষায় ফেল করেছি আমি

বার বার পরীক্ষায় ফেল করেছি আমি

আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। ছবি-সংগৃহীত

জ্যাক মা

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৩ | ০৪:৩৯

জ্যাক মা। চীনা ধনকুবের। ১৯৯৯ সালে তাঁর প্রতিষ্ঠিত আলিবাবার বর্তমান বাজারমূল্য ৫০০ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা এ কিংবদন্তির বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণামূলক কথা তুলে এনেছেন মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ

প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে পৃথিবী। এই বদলের প্রভাবও পড়ছে আমাদের ওপর। ফলে সামনে আসছে নতুন নতুন অসংখ্য চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে প্রকৃতিও যাচ্ছে খারাপের দিকে। এতে বাড়ছে আমাদের দুশ্চিন্তা। তবু দরজায় দাঁড়িয়ে টোকা দিচ্ছে নতুন দিন। নতুন হাওয়া। নতুন দিনের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন, তার ব্যাপকতা এবং মানবিকতা। এই তিনটি লক্ষ্য যদি প্রযুক্তির হাত ধরে আমরা অর্জন করতে না পারি, তবে পৃথিবীর আলো-বাতাস আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। প্রতিষ্ঠান এবং মানবিকতার কথা এই চ্যালেঞ্জের সময়ে আপনি নিজেকে বড় প্রতিষ্ঠান বা সেরা প্রতিষ্ঠানে দেখতে না পেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। যে প্রতিষ্ঠানেই থাকুন না কেন, আপনার উদারতাই এখন বড় শক্তি। এই শক্তি বলে আপনি ছোট প্রতিষ্ঠানে থেকেও দুনিয়া জয় করতে পারবেন। কেউ কেউ মনে করেন, বড় প্রতিষ্ঠানে তেমন ভুল হয় না। এটি ভুল ধারণা ছাড়া কিছুই নয়। আশপাশের অন্য দশটি প্রতিষ্ঠানের মতোই আলিবাবার ভুলের স্তূপ অনেক বড়। আমরা এই ভুল থেকে ফুল ফুটিয়েছি। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করেছি। এই ক্ষেত্রে সব সিদ্ধান্ত যে কেবল আর্থিক তা নয়। প্রতিষ্ঠান এবং মানবিকতার কথাও ভাবা হয়েছিল আমাদের সিদ্ধান্তগুলোতে।

ফেল থেকে শিক্ষা অনেকে আমাকে বর্তমানে বিশ্বের সফলতম ব্যবসায়ী ও শীর্ষ ধনীদের একজন মনে করেন। আমি তা মনে করি না! তবে এটি ঠিক, এক সময় আমি ব্যর্থতার পর ব্যর্থতার মুখে পড়েছিলাম। একটু পেছনে ফিরে যদি ছাত্রজীবনের দিকে তাকাই, দেখি, খারাপ রেজাল্টের কারণে আমি প্রাথমিক পরীক্ষায় দু’বার, মাধ্যমিকে তিনবার, পুলিশ হতে গিয়ে একবার, হার্ভার্ডে ভর্তি হতে গিয়ে দশবার এবং কেএফসিতে চাকরি করতে গিয়ে একবার ফেল করেছি। তবু এই ফেল্টুসই হার্ভার্ডে পড়ার সাহস দেখিয়েছি। পারিনি। শুধু তাই নয়, আমার শহরে যখন কেএফসি ব্যবসা করতে আসে, তখন ২৪ জন চাকরির আবেদন করেন। তাদের মধ্যে কেবল আমি ছাড়া বাকি ২৩ জনের চাকরি হয়। তবু আমি থেমে যাইনি। জীবনের শেষ হাসিটা নিজের সাফল্য দিয়েই হাসতে চেয়েছি।

ভালোর জন্যই প্রযুক্তি ভালো এবং খারাপ সব কিছুতেই থাকে। আমি বিশ্বাস করি প্রযুক্তি কেবলই ভালোর জন্য। এটি মানুষের হতাশা তাড়িয়ে নতুন গতির সঞ্চার করে। স্বপ্ন দেখায় নতুন করে। ভাবতে শেখায় তুমুল গতিতে। আলিবাবার যেই জার্নি তাতে চোখ রাখলে বলতেই পারি যে, আগামীর দিন গুলোতেও এই প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তিতে ভর করে তুমুল গতিতে ছুটে চলবে। গতির এই ট্র্যাকে আলিবাবা তুলে আনবে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান ও তাদের কর্মীদের।

 নিজস্ব জগতে সবাই স্বপ্নবাজ প্রত্যেকের নিজস্ব জগৎ থাকে। সেই জগৎজুড়ে ছড়িয়ে থাকে রাজ্যের স্বপ্ন। আলিবাবা আমার তেমনি অসংখ্য স্বপ্নের একটি। মানুষ সেই স্বপ্নের পেছনে ছোটে। আমিও ছুটব। আলিবাবার চেয়ারম্যান পদ ছেড়েছি। সেই ছেড়ে দেওয়া মানেই হাত-পা গুটিয়ে অবসরে চলে যাওয়া নয়। নতুন করে ব্যস্ততায় ডুব দেওয়া। শিক্ষা, পরিবেশ রক্ষা এবং মানুষের মধ্যে মানবিকতা জাগিয়ে তোলার কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চাই। এই কাজগুলোর অপেক্ষাই যেন করেছি এতদিন ধরে। u

আরও পড়ুন

×