শিলিগুড়িতেও চালু হলো বাংলাদেশের ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার

প্রতীকী ছবি
কলকাতা সংবাদদাতা
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২২ | ০৪:২০ | আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২২ | ০৫:০১
কলকাতার পর দ্বিতীয় বাংলাদেশ ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার খোলা হলো পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের শহর শিলিগুড়িতে। দিল্লির একটি বেসরকারি সংস্থার হাত ধরে বুধবার দুপুরে শিলিগুড়ির সেবক রোডে নতুন ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারটির উদ্বোধন করা হয়। এর উদ্বোধন করেন সোনালী ব্যাংক ইন্ডিয়া ভারতীয় বিভাগের সিইও এবং জেনারেল ম্যানেজার রওশনারা জাহান। এতে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি সংস্থা টির এমডি শিবাজ রাই।
অবস্থানগতভাবে কলকাতা থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত শৈলশহর দার্জিলিংয়ের কোলে অবস্থিত ছোট্ট শহর শিলিগুড়ি। ছোট্ট শহর হলেও ভারতের তিন রাজ্য সিকিম, বিহার ও আসাম। অন্যদিকে তিন দেশ, নেপাল, বাংলাদেশ, ভুটানকে সরাসরি যুক্ত করেছে এই জনপদ। কিছু দূরেই আছে চীনের সীমান্ত। রোড ট্রানজিট চুক্তির আওতায় এই শহরের ওপর থেকেই ভুটান এবং নেপালের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য রুট গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ। শৈলশহর দার্জিলিং সিকিম ভ্রমণ করতে হলেও বাংলাদেশ পর্যটকের ঢল নামে এই শহরে। এছাড়াও রয়েছে ঐতিহাসিকভাবে দুই বাংলার হাজার হাজার পরিবারের পারিবারিক এবং আত্মার সম্পর্ক। রয়েছে একাধিক স্থলবন্দর ছাড়াও, রেলপথেও রয়েছে বাংলাদেশের সঙ্গে সংযোগ। প্রস্তাব রয়েছে শিলিগুড়ির সঙ্গে সরাসরি ঢাকা ও চট্টগ্রাম রুটের বিমান চলাচলেরও। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত থাকা এই শহরটির সাধারণ মানুষকে এতদিন বাংলাদেশ ভ্রমণ করতে হলে ভিসা নিতে যেতে হতো ৭০০ কিলোমিটার দূরে কলকাতায়। ভিসা করতে দেওয়ার ঝক্কি এবং ভিসা হাতে করতে শিলিগুড়িতে ফিরতে কম করে তিন থেকে পাঁচ দিন কলকাতায় অবস্থান করতে হতো তাদের। খরচ হতো কয়েক হাজার টাকা। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ থাকলেও বাংলাদেশ ভ্রমণে অনুৎসাহিত হতেন এই এলাকার মানুষজন।
এমন পরিস্থিতি থেকে সাধারণ মানুষকে খানিকটা স্বস্তি দিতে দিল্লির সফদরজং মার্কেটপ্লেসের একটি বেসরকারি সংস্থায় ডিউবিডি-র হাত ধরে শিলিগুড়িতে খোলা হয়েছে নতুন ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার। এতে সুবিধা পাবেন শিলিগুড়ি ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের আট জেলা, পূর্ব বিহার এবং নিম্ন আসাম এবং নেপাল, ভুটানের মানুষজন। এতে পর্যটকদের পাশাপাশি খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও। তবে ভিসা অ্যাপ্লিকেশন এর জন্য খরচ হবে বেশ অনেকটাই। আগে ভারতীয়দের জন্য বাংলাদেশি ভিসা ফ্রিতে মিললেও, গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে কলকাতায় নতুন ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার কার্যকরী হওয়ার পর ভিসা প্রসেসিং বাবদ খরচ হচ্ছে ন্যূনতম ৮২৫ রুপি থেকে ৪০০০ রুপি।
সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের ভারতীয় ব্যবস্থাপক রওশনারা জাহান বলছেন, ‘শিলিগুড়িতে ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার হওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ কমবে। সাধারণ মানুষকে পড়তে হবেনা দালালদের খপ্পরে। দীর্ঘদিন উত্তরবঙ্গের মানুষের চাহিদা ছিল এই ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের।’
যদিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে ভিসা সুবিধা পাবেন ভারত নেপাল ও ভুটানের নাগরিকরা। কিন্তু সমস্যায় পড়বেন বাংলাদেশি পর্যটকেরা। পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়া, পরিজনের মৃত্যু, ভিসা পুনর্নবীকরণ সহ একাধিক সমস্যায় পড়লে তাদের ছুটে আসতে হবে সেই কলকাতাতেই। কলকাতা উপদূতাবাস পরিচালিত বাংলাদেশ উপদূতাবাসের শাখা অফিস পরিচালনার প্রস্তাব এবং পরিকল্পনা ছিল শিলিগুড়িতে। নানান সুবিধা অসুবিধা খতিয়ে দেখতে বিগত পাঁচ বছরে সচিব পর্যায়ে এই শহরে একাধিক ভিজিট সম্পন্ন হয় এই সংক্রান্ত বিষয়। কিন্তু তারপরেও শিলিগুড়িতে অধরা বাংলাদেশি মিশন। ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার হয়ে যাওয়ায় যার পরিকল্পনা কাটছাঁট হলেও হতে পারে। শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ মিশন থেকে সরাসরি ভিসার আবেদন করতে পারলে ভারত নেপাল বা ভুটানের নাগরিকদের প্রসেসিং ফি ছাড়াই সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই মিলতে পারত বাংলাদেশি ভিসা।
- বিষয় :
- ভিসা
- কলকাতা
- ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার
- শিলিগুড়ি