ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

নাগরিকত্ব আইন

মুর্শিদাবাদে বিক্ষোভে গুলি, নিহত ২

মুর্শিদাবাদে বিক্ষোভে গুলি, নিহত ২

হাসপাতোলে চিকিৎসাধীন আহত একজন-ছবি হিন্দুস্তান টাইমস

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২০ | ১১:৪৬ | আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২০ | ১৩:১৭

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রতিবাদে ভারতজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বুধবার পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে জলঙ্গি শহরে বিক্ষোভে গুলিতে দু'জন নিহত হয়েছেন। সিএএ ও এনআরসির প্রতিবাদে ডাকা স্থানীয় বন্‌ধকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রে রূপ নেয় জলঙ্গির সাহেবনগর এলাকা। এ সময় তৃণমূল ও বন্‌ধ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি বলে দাবি করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে বিক্ষোভকারীদের 'দেশদ্রোহী' আখ্যা দিয়ে তাদের বিরিয়ানি নয়, গুলি খাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন কর্ণাটকে বিজেপির মন্ত্রী সি টি রবি। অনুরাগ ঠাকুরের 'গুলি মারো' মন্তব্যকে সমর্থন করে এ কথা বলেন তিনি। খবর এনডিটিভির। 

প্রাথমিকভাবে জানা যায়, নবজাগরণ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন বুধবার জঙ্গলি থানা এলাকার সাহেবনগরে সিএএ বাতিলের দাবিতে ও এনআরসির বিরুদ্ধে বন্‌ধের ডাক দেয়। এ সময় তৃণমূল ও বন্‌ধ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের সময় বোমাও ছোড়া হয়। এরপর শাসক দলের উপস্থিতিতে বন্‌ধ সমর্থকদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে দু'জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। তৃণমূল যদিও এ ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনো যোগ নেই বলে দাবি করেছে। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, এ সংগঠনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা থাকলেও তারা মূলত অরাজনৈতিক একটি আন্দোলনের চেষ্টা করছিলেন। নুর ইসলাম নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, এদিন স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে সাহেবনগর বাজারে অবস্থান নেন বন্‌ধ সমর্থনকারীরা। এর দেড় ঘণ্টা পর তিন-চারটি গাড়ি এসে বাজারের সামনে থামে। গাড়িগুলোতে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা ছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। 

সালাউদ্দিন নামে অপর এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা লাঠিসোটা হাতে গাড়ি থেকে নেমে বন্‌ধ সমর্থনকারীদের সরে যেতে বলে। এরপরই দু'পক্ষের মধ্যে শুরু হয় তর্ক, যা এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে গড়ায়। এর অল্প সময়ের মধ্যেই শুরু হয় সংঘর্ষ। 

ইমদাদুল হক নামে অন্য এক স্থানীয় বাসিন্দার অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তহিরুদ্দিন মণ্ডল নিজে ঘটনাস্থলে ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান। তাদের নির্দেশেই সঙ্গে থাকা তৃণমূলের লোকজন বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে বোমা মারতে থাকে। এলাকার মানুষ প্রতিরোধ করতেই তারা ফিরে যাওয়ার পথে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এ সময় গুলিতে মারা যান সানারুল বিশ্বাস (৬০) ও সালাউদ্দিন শেখ (১৭) নামে দুই বিক্ষোভকারী। এলাকাবাসীর দাবি, আরও অন্তত তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

খবর পেয়ে সাহেবনগরে পৌঁছায় পুলিশ। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। এ সময় রাস্তা অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। 

এদিকে সিএএ নিয়ে বিজেপির নেতা-মন্ত্রীদের বিতর্কিত মন্তব্যের তালিকাটি ক্রমশ বড় হচ্ছে। প্রথমে কপিল মিশ্র, এরপর অনুরাগ ঠাকুর, প্রবেশ বর্মা। এবার এ তালিকার নতুন সংযোজন হলেন কর্ণাটকের বিজেপি মন্ত্রী সি টি রবি। বুধবার টুইট করে রবি বলেন, দেশদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করার জন্য যারা অনুরাগ ঠাকুরকে আক্রমণ করছেন, তারাই আজমল কাসাব এবং ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির বিরোধিতা করেছিলেন। তারাই আবার টুকরো টুকরো গ্যাংকে সমর্থন করছেন। সিএএ নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছেন। এমন দেশদ্রোহীদের বিরিয়ানি নয়, বুলেট খাওয়া উচিত।'

আরও পড়ুন

×