অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে দলীয় কর্মীদের অবস্থানের নির্দেশ মমতার

কলকাতা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৩ | ১৮:২৮ | আপডেট: ০৩ মে ২০২৩ | ১৮:২৮
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে তার শান্তিনিকেতনের বাড়ি থেকে উচ্ছেদে দেওয়া নোটিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমর্ত্য সেনের বাসভবন ‘প্রতীচী’র সামনে আগামী ৬ ও ৭ মে দলীয় কর্মীদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার মালদায় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আবহাওয়া খারাপ থাকায় হেলিকপ্টারের বদলে ট্রেনে করে মালদা যান মমতা। বুধবার সন্ধ্যার দিকে সেই ট্রেনের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে দলীয় নেতাদের সঙ্গে জনসংযোগও করেন মমতা। আর সেখানেই তিনি অবস্থান কর্মসূচির দায়িত্ব দেন তৃণমূল সভাপতি বিকাশ রায় চৌধুরী ও মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাকে।
এর আগে মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিশ্বভারতী যদি বাড়ি উচ্ছেদ করতে যায় তাহলে অমর্ত্য সেনের বাড়ির সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসতে হবে।
অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদ প্রসঙ্গে মমতা বলেছিলেন, 'আমরা উত্তরপ্রদেশ নই, এখানে জঙ্গলরাজ নেই। অমর্ত্য সেনকে প্রতিদিন আক্রমণ করা হচ্ছে। যদি তার বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভাঙে, আমি সামনে বসে পড়ব।'
এদিকে অর্মত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়ার প্রতিবাদে বুধবার বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছে কলকাতার তৃণমূলপন্থী বুদ্ধিজীবীরাও। জানা যায়, কবির সুমন, পরিচালক গৌতম ঘোষ, যোগেন চৌধুরী, শুভাপ্রসন্নরা শান্তিনিকেতনে 'প্রতীচী'র সামনে আগামী ৬ ও ৭ মে দিনভর অবস্থান বিক্ষোভে অংশ নেবেন। এ জন্য বুধবার রাত থেকেই ওই বাড়ির সামনে শুরু হয়েছে মঞ্চ তৈরির কাজ।
এদিন মালদা যাওয়ার পথেই মুখ্যমন্ত্রী কিছুক্ষণ বীরভূম জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেন। বিশ্বভারতী যাতে বলপূর্বক কিছু না করতে পারে এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ দেন মমতা। বিশ্বভারতীর তরফে জোর করে উচ্ছেদের চেষ্টা হলে প্রশাসন প্রশাসনের মতো পদক্ষেপ নেবে, এমনটাই নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আমি মালদায় থাকছি। কিছু হলে আমাকে জানাবেন। আপনারা বিষয়টায় নজর রাখুন।'
এর আগে জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরে অমর্ত্য সেনকে ১৫ দিনের চূড়ান্ত সময় দিয়ে উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জমি হস্তান্তরের জন্য নোবেলজয়ীকে শেষ সময় দেওয়া হয়েছে আগামী ৬ মে পর্যন্ত। নোটিশে বলা হয়েছে, ৬ মে এর মধ্যে জমি হস্তান্তর না করলে উচ্ছেদ করা হবে।
এদিকে চুপ করে বসে নেই অমর্ত্য সেনও। বিশ্বভারতীর নির্দেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে বীরভূম জেলা জজ কোর্টে মামলা করেছেন তিনি। তবে এখনো সেই মামলার শুনানি হয়নি। জানা যায়, জজ কোর্টের বিচারক এখন নেই।
এই বিষয়ে এক দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক জানান, ১৫ মে জজ কোর্টের বিচারক ফিরলে মামলাটির শুনানি হবে।