ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

বিদ্রোহের পর প্রিগোশিন ও তার ভাগনার বাহিনী এখন কী করবে?

বিদ্রোহের পর প্রিগোশিন ও তার ভাগনার বাহিনী এখন কী করবে?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৩ | ১২:২৭ | আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩ | ১২:২৭

রাশিয়ার ভাড়াটে সৈন্যদের বাহিনী ভাগনার গ্রুপের ক্ষণস্থায়ী বিদ্রোহ মোকাবেলায় মস্কোতে যেসব জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল, বিদ্রোহ অবসানের কয়েক ঘণ্টা পরেও সেসব ব্যবস্থা বহাল রাখা হয়েছে।

ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিনের নেতৃত্বে এই বিদ্রোহকে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট পুতিনের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর বিবিসির 

এই গ্রুপের যোদ্ধারা শনিবার ইউক্রেন সীমান্ত পার হয়ে রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে দক্ষিণের বড় একটি শহর রোস্তভ অন ডন দখল করে নেওয়ার পর রাজধানীর দিকে অগ্রসর হতে থাকলে মস্কোতে সন্ত্রাস-বিরোধী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জারি করা হয়।

মস্কোয় কর্মকর্তারা বলছেন বিদ্রোহ অবসানের পরেও লোকজনকে নিরাপত্তাজনিত কারণে সোমবার কাজে যোগ না দিতে বলা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের কড়া হুঁশিয়ারির পর ভাগনার নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোশিন তার বাহিনীর মস্কোর অভিমুখে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা বাতিল ঘোষণা করেন।

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট এবং প্রেসিডেন্ট পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে প্রিগোশিনের বৈঠকে কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা শ্বাসরুদ্ধকর এই বিদ্রোহ অবসানের ব্যাপারে সমঝোতা হয়। 

এরপরই শনিবার সন্ধ্যায় পিগ্রোশিন তার সৈন্যদের রাশিয়া ছেড়ে ঘাঁটিতে ফিরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সমঝোতা অনুসারে প্রিগোশিন নিজেও চলে যাবেন প্রতিবেশী বেলারুশে।

জবাবে ক্রেমলিন বলছে প্রিগোশিন ও তার সৈন্যদের বিরুদ্ধে যেসব আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল সেগুলোর কোনো বিচার হবে না।

প্রিগোশিন এখন কোথায়?

শনিবার সন্ধ্যায় হওয়া সমঝোতা অনুযায়ী ভাগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোশিনের বেলারুশে চলে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি এখন কোথায় অবস্থান করছেন সেটা পরিষ্কার নয়।

প্রিগোশিন যে বেলারুশে চলে যাবেন এই খবর শুধুমাত্র ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের মুখ থেকেই শোনা গেছে।

কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় তাকে শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল। তিনি একটি গাড়িতে ছিলেন। এসময় তিনি উৎফুল্ল কিছু লোকজনের সঙ্গে করমর্দন করছিলেন। এর পর প্রিগোশিনের কাছ থেকে এখনও কিছু শোনা যায়নি। তাকে কোথাও দেখাও যায়নি। তার টেলিগ্রাম চ্যানেলেও এ বিষয়ে নতুন কিছু পোস্ট করা হয়নি।

প্রিগোশিনের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে?

বিবিসির একজন সাংবাদিক বলছেন সমঝোতা যে প্রিগোশিনের পক্ষে গেছে তা বলা যাবে না। কারণ ক্রেমলিনের কথা যদি সত্য হয়, তাহলে এর অর্থ হচ্ছে- তাকে বেলারুশে নির্বাসনে পাঠানো হচ্ছে।

রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বর্তমানে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ। ওই এলাকাটিকে নো-ফ্লাই জোন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

তার মানে রোস্তভ শহরের সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর হচ্ছে ভলগোগ্রাদ এবং সচি। কিন্তু এই দুটো বিমানবন্দরই প্রায় ২৫০ মাইল দূরে।

বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন প্রিগোশিন গাড়িতে কিম্বা ট্রেনে করে বেলারুশে যেতে পারেন। কিন্তু সেই পথ হবে অনেক দীর্ঘ, কারণ তাকে ইউক্রেনের বাইরে দিয়ে যেতে হবে।

বিদ্রোহের পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কী করবেন?

বিবিসির রুশ বিভাগের সাংবাদিক ওলগা ইভশিনা বলছেন অবশ্যই তিনি তার শক্তি প্রদর্শন করবেন যা তিনি আগেও করেছেন।

তিনি বলছেন, এই ঘটনার পর রাশিয়ার ভেতরে অভ্যন্তরীণ স্বাধীনতা খর্ব হতে পারে। টেলিগ্রাম চ্যানেলসহ সংবাদমাধ্যমের ওপর আরো নিয়ন্ত্রণ আরোপেরও আশঙ্কা রয়েছে।

ভাগনার যোদ্ধারা কী করবে?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ভাগনার যোদ্ধারা রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে। বিদ্রোহের শুরুতে তারা এই শহরের সামরিক ঘাঁটিগুলো দখল করে নিয়েছিল। এক পর্যায়ে তারা রোস্তভ ও মস্কোর মধ্যবর্তী একটি শহর ভরোনেঝও দখল করে নেয়।

এখন এই অঞ্চলের গভর্নর জানাচ্ছেন যে ভাগনার বাহিনী সেখান থেকেও চলে যাচ্ছে। তিনি বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতির অবসান ঘটলেই চলাচলের ওপর যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল সেগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।

এই ভাগনার যোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ কী সেটাও পরিষ্কার নয়। তারা কী ইউক্রেনে ফিরে যাচ্ছে না কি অন্য কোথাও যাচ্ছে তাও স্পষ্ট নয়।

আরও পড়ুন

×