২০২৩ সালে ইরানে অন্তত ৮৩৪ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, দাবি দুই মানবাধিকার সংস্থার

প্রতীকী ছবি
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৪ | ১৩:৪০
গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে ইরানে অন্তত ৮৩৪টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়, দাবি করেছে দুটি মানবাধিকার সংস্থা। খবর এএফপি'র।
২০১৫ সালের ৯৭২টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। এরপর গত বছর সর্বোচ্চ পরিমাণ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে মৃত্যুদণ্ড বেড়েছিল ৭৫ শতাংশ। সে বছর মোট ৫৮২টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।
নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) এবং প্যারিসভিত্তিক টুগেদার অ্যাগেইন্সট ডেথ পেনাল্টি (ইসিপিএম) সংস্থাদুটির এক যৌথ প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনির মৃত্যুর জেরে সৃষ্ট বিক্ষোভ দাবিয়ে রাখতেই দেশবাসীর মধ্যে ভয় ছড়িয়ে দিতে এসব মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
২০২২ সালের ওই বিক্ষোভের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নয়টি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইরান। এর মাঝে দুটি ২২২ সালে, ছয়টি ২০২৩ সালে এবং একটি ২০২৪ সালে (এখন পর্যন্ত), সংস্থাগুলো দাবি করেছে। এছাড়া অন্যান্য অপরাধেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মাত্রা বেড়েছে, বিশেষ করে মাদক-সংক্রান্ত মামলায়।
দেখা গেছে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ১৮ গুণ বেশি মানুষকে মাদক-সংক্রান্ত মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মাঝে সংখ্যালঘুদের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে বেশি। ২০২৩ সালে কার্যকর হওয়া সব মৃত্যুদণ্ডের মাঝে ২০ শতাংশই সংখ্যালঘু সুন্নী বালুচ গোষ্ঠীর মানুষ। অথচ ইরানের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশ হচ্ছে বালুচ।
ইসিপিএম পরিচালক মন্তব্য করেন, এসব মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারে জাতিসংঘ তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না। এর ফলে ইরানি কর্তৃপক্ষও তাদেরকে আমলে নিচ্ছে না।
ইরানে বেশিরভাগ মৃত্যুদণ্ড কারাগারের ভেতর কার্যকর করা হয়। কিন্তু ২০২২ সালের পর থেকে জনসম্মুখে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ হয়ে গেছে।
শুধু তাই নয়, নারীদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরিমাণটাও বেড়েছে আগের দশকের তুলনায়। মানবাধিকার সংস্থাগুলো আগে থেকেই বলে আসছে, স্বামী বা আত্মীয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে কোনো নারী নিজের সুরক্ষায় হত্যাকাণ্ড ঘটালে তার মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার শঙ্কা থাকে। আর তাই হয়েছে। গত বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া ২২ জন নারীর মাঝে ১৫ জনের বিরুদ্ধেই ছিল হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ।
২০২৩ সালে কার্যকর হওয়া মৃত্যুদণ্ডগুলোর মাত্র ১৫ শতাংশের ব্যাপারে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে জানানো হয়। বাকিগুলো এই সংস্থা দুটো নিজেরাই খুঁজে বের করে।
এসব ঘটনায় বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়ার অভাবে ইরানে মৃত্যুদণ্ডের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা জানিয়েছেন আইএইচআর এর পরিচালক।