সিএএ নিয়ে অমিত শাহ যে ব্যাখ্যা দিলেন

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবি: সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৪ | ১০:১৪
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করা হবে না। আমাদের দেশে ভারতীয় নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার জন্য এটি আমাদের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। এর সঙ্গে কখনোই আপস করব না।’
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ ‘মুসলমান বিরোধী নয়’।
সংসদে পাস হওয়ার প্রায় সাড়ে চার বছর পর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (সিএএ) গত সোমবার কার্যকরী হয়েছে। তারপরই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। কোথাও যেমন এই আইন কার্যকর হওয়ার সমর্থনে উদযাপনের আবহাওয়া দেখা গেছে, তেমনই দেখা গেছে বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। এই নিয়ে অব্যাহত রয়েছে রাজনৈতিক বাহাসও।
সিএএ-কে কেন্দ্র করে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, বাম, আম আদমি পার্টি-সহ বিরোধীরা তোপ দেগেছে বিজেপি সরকারকে। নিজ নিজ রাজ্যে যে তারা এই আইন কার্যকর হতে দেবেন না, সে কথাও জানিয়ে দিয়েছেন এই বিরোধীরা ।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘একটা মানুষেরও অধিকার কেড়ে নিতে দেব না। আপনাদের বাংলা থেকে বিতাড়িত হতে দেব না।’ তার অভিযোগ, ধর্মীয় মেরুকরণ করতে চাইছে বিজেপি।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে সাক্ষাৎকারের সময় অমিত শাহ সরাসরি তার উত্তরে পাল্টা জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মমতাজিকে অনুরোধ করছি, রাজনীতি করার জন্য বেশ কয়েকটি অন্য প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, তবে দয়া করে বাংলাদেশ থেকে আসা বাঙালি হিন্দুদের ক্ষতি করবেন না।’ তিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী, অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম)-এর সভাপতি আসাদউদ্দিন ওয়াইসির বিরুদ্ধেও মুখ খুলেছেন। বিরোধীদের উদ্দেশে বলেছেন, তারা ‘মিথ্যার রাজনীতি’ করে।
তবে নিশানায় বিরোধীরা হলেও সিএএ কার্যকর হওয়ার পর থেকেই এ নিয়ে যে বিতর্ক আর বিভ্রান্তি চলছে ভোটের আগে সেটা প্রশমিত করতে অমিত শাহের এটা আসলে ‘সাফাই’- এমনটাও মনে করেন অনেকে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস নিশ্চিন্ত করতে পারেনি কবিয়াল মনোরঞ্জন সরকারকে, যিনি মতুয়াদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করেছেন। মনোরঞ্জন সরকার বলেছেন, ‘যত সহজে নাগরিকত্ব পাওয়ার কথা বলা হচ্ছে তত সহজে কেউ নাগরিকত্ব পাবেন না। যারা এই আইন বিশ্লেষণ করে দেখেছেন তারা জানেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রভাব মানুষের জীবনে পড়তে বাধ্য। এবং সে কথা জানে বলেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এতবার এত বিবৃতি দিতে হচ্ছে।’
একই সঙ্গে এই আইন কার্যকর করার ‘টাইমিং’ নিয়ে অমিত শাহের দেওয়া যুক্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন নির্বাচনের কথা ভেবে, নির্বাচনী অঙ্ক মাথায় রেখেই এই ঘোষণা।
সূত্র: বিবিসি