রাশিয়ার জব্দ সম্পদের সুদ যাবে ইউক্রেনে

মস্কোয় ব্যাংক অব রাশিয়ার সদরদপ্তর। ফাইল ছবি: রয়টার্স
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৪ | ২২:২৪
যুদ্ধের জেরে পশ্চিমা দেশগুলোর জব্দকৃত রাশিয়ার সম্পদের সুদ থেকে ইউক্রেনকে ৫০ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার চুক্তিতে পৌঁছেছেন জি৭ দেশগুলোর নেতারা। বৃহস্পতিবার ইতালিতে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী শীর্ষ সম্মেলনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। শুধু তাই নয়, সম্মেলন থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্যসূচিতে রয়েছে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন। দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন জোটের নেতারা। এসব বিষয় নিয়ে এরই মধ্যে প্রথম দিনে বৈঠক করেছেন তারা। জোট সদস্যের বাইরে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ বেশ কয়েক দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানকে। খবর রয়টার্স ও এএফপির।
ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় পর্যটন এলাকা পুগলিয়ার বিলাসবহুল বোরগো এগনাজিয়া রিসোর্টে এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল এতে যোগ দিয়েছেন জোটের সদস্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। নেতারা একে একে সম্মেলনস্থলে পৌঁছালে তাদের স্বাগত জানান এবারের সভাপতি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি।
সম্মত হওয়া ৫০ বিলিয়ন ডলার প্রতিরক্ষা, বাজেট সহায়তা এবং পুনর্গঠনে ব্যয় করবে ইউক্রেন। দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পরিপ্রেক্ষিতে রুশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৩০০ বিলিয়ন ইউরো বা ৩২৫ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছিল ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা। এসব সম্পদের সুদ থেকেই এই ঋণ দেওয়া হবে কিয়েভকে। এ বিষয়ে জার্মানির অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার এক্সের এক পোস্টে লিখেছেন, ‘জি৭ থেকে ভালো খবর, ইউক্রেনের জন্য আরও ৫০ বিলিয়ন ডলার।’ তিনি লেখেন, ‘আমরা কিয়েভের জন্য হিমায়িত সম্পদ থেকে সুদ ব্যবহার করছি।’ আর মাখোঁর কার্যালয় গত বুধবার জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ ইউক্রেনকে অর্থ দেওয়ার বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে।
অন্যদিকে, গাজা যুদ্ধের বিষয়ে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সম্মেলনের ফাঁকে বলেন, প্রস্তাবিত চুক্তিতে হামাস কিছু ছোটখাটো পরিবর্তনের সঙ্গে একটি সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে, যা নিয়ে কাজ করা যেতে পারে। আমাদের লক্ষ্য, কীভাবে এসব বিষয় পূরণ করে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারি। তিনি বলেন, ‘কাতার এবং মিসরের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত থাকবে, যারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য হামাসের সঙ্গে কাজ করবে।’
এমন সময় এই সম্মেলন হচ্ছে, যখন দুটি যুদ্ধ ছাড়াও চীন ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক উত্তেজনা বাড়ছে। সম্মেলনে রাশিয়ার সঙ্গে চীনের সম্পর্ক, আফ্রিকার সঙ্গে জোটের সম্পর্ক, জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়ন সহায়তা প্রথম কার্য অধিবেশনের কেন্দ্রবিন্দু হবে। এতে আফ্রিকান ও পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিদের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্বব্যাংকের মতো সংস্থাগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
শুক্রবারের আলোচ্য বিষয় হবে চীনের ‘শিল্প ওভারক্যাপাসিটি’ সম্পর্কে উদ্বেগ, যা বিশেষত সৌর প্যানেল ও বৈদ্যুতিক যানবাহনের মতো সবুজ শক্তি ও প্রযুক্তি খাতে ব্যবহার করছে চীন।
এদিকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য।