ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

বিবিসি

ভিয়েতনামে পুতিন: যে বন্ধুত্বের মৃত্যু নেই

ভিয়েতনামে পুতিন: যে বন্ধুত্বের মৃত্যু নেই

হ্যানইয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভুয়সী প্রশংসা করেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট তো ল্যাম (ছবি-বিবিসি)

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪ | ১৬:৩৮ | আপডেট: ২০ জুন ২০২৪ | ১৭:০৭

ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানইয়ে সাক্ষাতে ভিয়েতনাম ও রাশিয়ার দুই শীর্ষ নেতা বলেছেন, তারা সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চান। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভুয়সী প্রশংসা করেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট তো ল্যাম। সাম্প্রতিক ভোটে পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানান। জবাবে পুতিন বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার রাশিয়ার অন্যতম অগ্রাধিকার। বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার পর ভিয়েতনামে তার (পুতিন) সফর রাশিয়ার প্রতি অঞ্চলটির কূটনৈতিক সহযোগিতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। পুতিনকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ল্যাম বলেন, ‌‘সাম্প্রতিক নির্বাচনে ব্যাপক জনসমর্থন লাভের জন্য কমরেডকে অভিনন্দন।’

তবে ভিয়েতনামে পুতিনের এ সফরকে ভালো চোখে দেখছে না যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোকে বাহবা দিয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ভিয়েতনামে স্বাগত জানানোর নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। এরপরও ভিয়েতনাম রাশিয়ার সঙ্গে তাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে, যদিও ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। 

হ্যানইয়ের বা দিন পার্কে পাঁচ ফুট উঁচু ভাস্কর্যে লেনিনকে নায়কোচিত ভঙ্গিতে পোজ দিতে দেখা যায়। প্রতি বছর জন্মদিনে লেনিনের ভাঙ্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ভিয়েতনামের কর্মকর্তারা; তারা মাথা নুইয়ে শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। এ ভাস্কর্যটি রাশিয়ার পক্ষ থেকে সোভিয়েত আমলে ভিয়েতনামকে দেওয়া হয়েছিল। 

রাশিয়ার সঙ্গে ভিয়েতনামের সম্পর্ক ঘনিষ্ট এবং কয়েক দশকের পুরানো। ১৯৫০-এর দশকে নতুন কমিউনিস্ট দেশ উত্তর ভিয়েতনামকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সহায়তা দিয়েছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া)। ভিয়েতনাম এ সম্পর্ককে ‘আনুগত্য ও কৃতজ্ঞতায়’ ভরা বলে বর্ণনা করে আসছে। ১৯৭৮ সালে কম্বোডিয়ার ‘খুনি শাসক’ খেমার রুজকে ক্ষমতাচ্যুত করতে দেশটি দখল করে ভিয়েতনাম। এর জেরে চীন ও পশ্চিমের দেশগুলো তাদের একঘরে করে। এ সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের সহযোগিতায় তারা টিকে ছিল। ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব নুয়েন ফু ট্রংসহ দেশটির অনেক শীর্ষ ব্যক্তি লেখাপড়া করেছেন রাশিয়ায়, শিখেছেন রুশ ভাষাও। 

বর্তমানে ভিয়েতনামের অর্থনীতি বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এগিয়ে যাচ্ছে। এ সময়ে দেশটি রাশিয়ার চেয়ে চীন, এশিয়ার অন্যান্য দেশ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সঙ্গে বেশি ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। কিন্তু এখনও রাশিয়ার তৈরি সামরিক সরঞ্জাম ব্যবহার করছে তারা। এছাড়া দক্ষিণ চীন সাগরে তেল উত্তোলনের জন্য রুশ কোম্পানিগুলোর ওপরই নির্ভর করছে। 

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন ভিয়েতনামকে কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছিল। তারা জাতিসংঘে রাশিয়াকে নিন্দা জানিয়ে উত্থাপিত অনেকগুলো খসড়ায় ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে। তবে ইউক্রেনের সঙ্গেও তারা ভালো সম্পর্ক বজায় রাখছে; এমনকি কিয়েভে অল্পবিস্তর ত্রাণও পাঠিয়েছে তারা। 

বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়া থেকে রাষ্ট্রীয় সফরে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানইয়ে পৌঁছান ভ্লাদিমির পুতিন। দেশটিতে এটা রুশ নেতার পঞ্চম সফর। চলতি সফরে তার সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের রুশ প্রতিনিধি দল রয়েছে। তারা ভিয়েতনামের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

আরও পড়ুন

×