ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

হিজবুল্লাহর ক্রমবর্ধমান ড্রোন শক্তিতে দিশেহারা ইসরায়েল

হিজবুল্লাহর ক্রমবর্ধমান ড্রোন শক্তিতে দিশেহারা ইসরায়েল

লেবাননের জেজিন জেলার আরামতা গ্রামে প্রশিক্ষণ মহড়ার সময় সশস্ত্র ড্রোনের পাশে দাঁড়িয়ে আছে হিজবুল্লাহর এক যোদ্ধা। ফাইল ছবি: এপি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪ | ২০:২২

লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ গত মে মাসের মাঝামাঝি ইসরায়েলের অনেক গভীরে বিস্ফোরক ড্রোন ব্যবহার করে দেশটির বিমানবাহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নজরদারি ব্যবস্থার একটিতে সরাসরি হামলা চালায়। এটি এবং অন্যান্য সফল ড্রোন হামলা ইরানসমর্থিত সংগঠনটিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রত্যাশিত প্রতিশোধের জন্য আরেকটি মারাত্মক বিকল্প দিয়েছে। 

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের রিসার্চ ফেলো ফ্যাবিয়ান হিনজ হিজবুল্লাহর ড্রোন সক্ষমতা সম্পর্কে বলেছেন, ‘এটি ইসরায়েলের জন্য একটি হুমকি, যাকে গুরুত্বসহকারে নিতে হবে।’ 

হিজবুল্লাহর রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য ইসরায়েল আয়রন ডোম এবং ডেভিড স্লিংসহ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছে। তবে  ড্রোন হুমকি মোকাবিলায় কম নজর দিয়েছে দেশটি। ফ্যাবিয়ান হিনজ বলেন, এর ফলে ড্রোনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষামূলক সক্ষমতা তৈরিতে কম প্রচেষ্টা চালিয়েছে ইসরায়েল। 
ড্রোন বা ইউএভিএস হলো মনুষ্যবিহীন বিমান, যা দূর থেকে চালানো যায়। ক্ষেপণাস্ত্র এবং রকেটের চেয়ে বেশি বিচক্ষণতার সঙ্গে ড্রোন শত্রু অঞ্চলে প্রবেশ, নজরদারি এবং হামলা চালাতে পারে। হিজবুল্লাহ তার মে মাসের ড্রোন হামলা চালায় লেবানন সীমান্ত থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার ভেতরে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ব্যবহৃত একটি ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে।

হিজবুল্লাহ হামলার যে ফুটেজ প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, তাদের বিস্ফোরকভর্তি আবাবিল ড্রোনটি স্কাই ডিউ ঘাঁটির দিকে উড়ছে। পরে বিধ্বস্ত বিমানের ছবি প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীও নিশ্চিত করেছে, হিজবুল্লাহ সেখানে সরাসরি আঘাত করেছে।

তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত স্বাধীন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এই হামলার নির্ভুলতা এবং ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা এড়াতে সক্ষমতা হিজবুল্লাহর উন্নতির প্রতিফলন।’

গত অক্টোবরের শুরুতে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলির বিনিময় হচ্ছে। এর পর থেকেই হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে এড়িয়ে সীমান্ত বরাবর দেশটির সামরিক চৌকিসহ ইসরায়েলের গভীরে হামলা করতে ড্রোন ব্যবহার করেছে।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের সময় ইসরায়েল লেবানন থেকে শত শত ড্রোনকে বাধা দিলেও এর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অজেয় নয় বলে একজন ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে এই যুদ্ধে আগের চেয়ে বেশি ড্রোনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে।

গত মঙ্গলবার উত্তরাঞ্চলীয় শহর নাহারিয়ার কাছে ইসরায়েলি সেনাঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় ছয়জন আহত হয়েছে। এই গোষ্ঠীর সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ড্রোন হামলাগুলোর মধ্যে একটি ছিল এপ্রিল মাসে, আরব আল-আরামশেহের উত্তরে ওই হামলায় একজন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত এবং ১৩ জন আহত হন। ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক এমাদ আবশেনাস বলেছেন, হিজবুল্লাহর কাছে এমন ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা ইসরায়েলের যে কোনো এলাকায় আঘাত করতে পারে।  


 

আরও পড়ুন

×