ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

আদানি গ্রুপ নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ

হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদন

আদানি গ্রুপ নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ

ছবি: সংগৃহীত

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪ | ০৯:৫৭ | আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৪ | ১০:৩৮

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিনিয়োগবিষয়ক গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ তুলেছে। সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গ্রুপটির অফশোর ফান্ডে অংশীদারিত্ব ছিল ভারতের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়ার (এসইবিআই) চেয়ারপারসন মাধবী পুরী বুচ ও তাঁর স্বামী ধবল বুচের।

রোববার আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন সংস্থাটি। এতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন করে চাপে পড়েছেন। আদানি গোষ্ঠীর মালিক গৌতম আদানির সঙ্গে মোদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তবে এক বিবৃতিতে অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন মাধবী। খবর রয়টার্স ও এনডিটিভির। 

হিন্ডেনবার্গের নতুন নথি অনুসারে, এমন একটি অফশোর তহবিলে বুচ দম্পতির অংশীদারিত্ব ছিল, যেখানে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানি বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে আদানি গ্রুপ পাল্টা বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিদেশে আদানি গ্রুপের উপস্থিতি পুরোপুরি স্বচ্ছ। এতে গোপন কোনো বিষয় নেই। গত শনিবার এক্স পোস্টে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ইঙ্গিত দেয়, ‘শিগগির ভারতে বড় কিছু হতে চলেছে।’ প্রতিবেদনে অভিযোগ, বুচ দম্পতি মরিশাস ও বারমুডার এমন সব ভুয়া বিদেশি সংস্থায় বিনিয়োগ করে রেখেছেন, যাদের সঙ্গে গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। এসব বিনিয়োগ করা হয়েছে ২০১৫ সালে। তার পর ২০১৭ সালে এসইবিআইর পূর্ণ সময়ের সদস্য হিসেবে নিয়োগ করা হয় মাধবী বুচকে। সেই সময়েই নজরদারি এড়াতে মাধবীর নামে থাকা সব বিদেশি বিনিয়োগ নিজের নামে করে নিয়েছিলেন ধবল। পরে ২০২২ সালে এসইবিআইর চেয়ারপারসন হন মাধবী।

এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানি এন্টারপ্রাইজের পরিকল্পিত শেয়ার বিক্রির আগে তাদের নিয়ে তীব্র সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর ফলে গ্রুপের শেয়ারের মূল্য ৮৬ বিলিয়ন ডলার কমে যায়। একই সঙ্গে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থান থেকে ৩৬ নম্বরে নেমে আসেন গৌতম আদানি।

আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গের অভিযোগের তদন্তভার এসইবিআইর ওপরই দিয়েছিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। তবে হিন্ডেনবার্গ এই প্রতিবেদনে বোঝাতে চেয়েছে, যাদের ওপর তদন্তভার দেওয়া হয়েছে, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে তলে তলে তাদের আঁতাত রয়েছে। আগের প্রতিবেদন প্রকাশের পর ১৮ মাস কেটে গেছে, অথচ আদানির ব্যাপারে এসইবিআই বিস্ময়করভাবে নিশ্চুপ।

অন্যদিকে, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের সর্বশেষ প্রতিবেদনটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে আদানি গ্রুপ। তাদের দাবি, মার্কিন সংস্থাটির আগের প্রতিবেদনটি ‘ভিত্তিহীন’ প্রমাণিত হয়েছে, যা সুপ্রিম কোর্টেও খারিজ হয়েছিল। সংস্থাটি আরও বলেছে, হিন্ডেনবার্গের অভিযোগগুলো আইনকে উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত স্বার্থ অর্জনের লক্ষ্যেই করা হয়েছে।

আদানি গোষ্ঠীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের নথিভুক্ত বিদেশি সংস্থাগুলোর গঠন পুরোপুরি স্বচ্ছ। নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিনিয়োগ-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করা হয়। সংস্থার সুনাম ক্ষুণ্ন করতেই নতুন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। 

বিবৃতিতে আদানি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এর আগে হিন্ডেনবার্গ আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ারবাজারে অনিয়ম-সংক্রান্ত অভিযোগ তুলেছিল। তদন্তে তা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে। 

এদিকে হিন্ডেনবার্গের নতুন প্রতিবেদন ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। আদানিদের অর্থ পাচারে মাধবী পুরী বুচের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বিরোধীরা সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে তদন্তের দাবি তুলেছেন।

আরও পড়ুন

×