মা ও দুই শিশুসহ ৪ জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস

ছবি: রয়টার্স
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৬:১১ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৬:২৬
জিম্মি থাকা দুই শিশু, মাসহ চারজনের মরদেহ আজ বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এর আগে জানানো হয়েছিল, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় এসব জিম্মি নিহত হয়েছেন। খবর রয়টার্স ও আল জাজিরার
ওই দুই শিশুর নাম কেফির বিবাস ও অ্যারিয়েল বিবাস (৪)। মা শিরি বিবাস এবং মরদেহ ফেরত দেওয়া চতুর্থ জিম্মির নাম ওদেদ লিফশিৎজ।
কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় গত মাসে হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে সই হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় জিম্মি মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। বিপরীতে ইসরায়েলের কারাগারে দিনের পর দিন আটকে থাকা ফিলিস্তিনিরা মুক্তি পাচ্ছেন।
ইসরায়েলের কিবুতজ নির ওজ এলাকা থেকে বিবাস পরিবারের সদস্যরা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে জিম্মি হন। ওই সময় মাত্র নয় মাস বয়স ছিল কেফিরের। হামাসের হাতে জিম্মি হন কেফির ও অ্যারিয়েলের বাবা ইয়ারদেন বিবাসও।
হামাসের পক্ষ থেকে গত বছরের নভেম্বরে জানানো হয়, ইসরায়েলি বিমান হামলায় জিম্মি ওই মা ও দুই শিশু নিহত হয়েছে। তবে তাদের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেনি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
রেড ক্রসের তথ্যমতে, হামাসের ১৯ জন জিম্মির বিনিময়ে ১ হাজার ১৩৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। আর আজ ৪ জনের মরদেহ ফেরত দিল হামাস। এ নিয়ে ২৩ জনকে ফেরত দিল হামাস।
এর আগে চলতি মাসে যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় গাজা থেকে মুক্তি পান ইয়ারদেন বিবাস। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুই শিশু ও মায়ের ভাগ্যে কী ঘটেছে, সেটি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না।
এখন দুই শিশু ও মাসহ চারজনের মরদেহ ফেরানোর মধ্য দিয়ে গাজা থেকে ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো কোনো মৃত জিম্মিকে নেওয়া হলো।
এর আগে ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ছয় সপ্তাহের প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়। বিনিময়ে ইসরায়েলও তাদের জেলে আটক কয়েকশ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেয়।
এই সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীতে গাজার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাও ছাড়তে হবে, আর বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা পাবে বাড়ি ফেরার অনুমতি। এই সময়ে প্রতিদিন শত শত ত্রাণবাহী লরিকে গাজায় ঢোকারও সুযোগ দেবে তেল আবিব।
চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনা শুরু হবে প্রথম ধাপের ১৬তম দিনে। এই ধাপেই মুক্তি পাবে পুরুষ ইসরায়েলি সেনারা। তৃতীয় ও শেষ ধাপে হবে গাজার পুনর্গঠন, যা শেষ হতে লাগবে কয়েক বছর।
চুক্তির অন্যতম মধ্যস্থতাকারী কাতার জানিয়েছে, প্রথম ধাপে যে জিম্মিরা মুক্তি পাচ্ছেন তাদের মধ্যে বেসামরিক নারী, শিশু, নারী সেনা, বয়স্ক ব্যক্তি, অসুস্থ ও আঘাতপ্রাপ্ত বেসামরিকরা রয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলায় এক হাজার ২০০ নিহত ও ২৫১ জনকে জিম্মি করার প্রত্যুত্তরে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটিকে নিশ্চিহ্নে সামরিক অভিযানে নামে।
এরপর ১৫ মাসের অবিরাম যুদ্ধ গাজার প্রায় ৪৭ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য বলছে। প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া উপত্যকাটির ২৩ লাখ বাসিন্দাকে হতে হয়েছে বাস্তুচ্যুত।
- বিষয় :
- জিম্মি
- জিম্মি চুক্তি
- ইসরায়েল
- ফিলিস্তিন
- হামাস