ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান সংঘাত

বেশি বেশি বললেও ক্ষতি সীমিত

বেশি বেশি বললেও ক্ষতি সীমিত

ছবি: সংগৃহীত

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫ | ০২:৫০ | আপডেট: ১৫ মে ২০২৫ | ০২:৫০

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চার দিনের সামরিক সংঘাত ছিল দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে অর্ধশতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। লড়াইটি চলে তাদের বিশাল সীমান্ত বরাবর; দুই দেশে গভীর রাতে আকাশ (বিস্ফোরণে) আলোকিত হয়ে ওঠে। এ সময় গুলির লড়াইয়ের পাশাপাশি উভয় পক্ষ তথ্যযুদ্ধও শুরু করে।

গতকাল বুধবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, উভয় দেশ একে অপরের বিমান প্রতিরক্ষা পরীক্ষার জন্য ও সামরিক স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানার জন্য শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। পরে দুই দেশের গণমাধ্যমে হামলার বিষয় নিয়ে ব্যাপক অতিরঞ্জিত বর্ণনা তুলে ধরা হয়। কিন্তু স্যাটেলাইট চিত্র পরীক্ষা করে দেখা গেছে, আক্রমণ ব্যাপক হলেও দাবির চেয়ে ক্ষয়ক্ষতি ছিল অনেকটাই সীমিত। বেশি ক্ষতি হয়েছে পাকিস্তানের স্থাপনায়। কার্যত বিশ্ব উচ্চপ্রযুক্তির যুদ্ধের একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে, যা দ্রুতই গ্রহণ করেছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে থাকা দুই দেশ।

উভয় পক্ষের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ভারত পাঁচজন ও পাকিস্তান ১১ জন সেনার মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে। ভারতের জন্য সবচেয়ে বড় আঘাত বিমান হারানো। ঠিক কতটি বিমান বিধ্বস্ত করেছে পাকিস্তান, তা নিশ্চিত করেনি দিল্লি। কর্মকর্তা ও কূটনীতিকরা বলছেন, কমপক্ষে দুটি বিমান হারিয়ে গেছে। হতে পারে এ সংখ্যা সম্ভবত আরও বেশি।

ভারত যেখানে স্পষ্ট এগিয়ে আছে বলে মনে হচ্ছে তা হলো– পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনা ও বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা। যুদ্ধের শেষ অংশটি ছিল প্রতীকী হামলায় ভরপুর। শক্তি প্রদর্শনের চেয়ে তখন দুই পক্ষ একে অপরের প্রতিরক্ষা ক্ষমতার ওপর আক্রমণ চালায়। হামলার আগে ও পরের দৃশ্য উচ্চ-রেজল্যুশনের উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায়। এতে দেখা গেছে, ভারতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পাকিস্তানের স্থাপনাগুলোর ক্ষতি বর্ণনার চেয়ে সীমিত ও সুনির্দিষ্ট।

পাকিস্তানের বন্দরনগরী করাচি থেকে ১০০ মাইলেরও কম দূরে অবস্থিত ভোলারি বিমানঘাঁটি। ভারতের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, তারা একটি বিমানের হ্যাঙ্গারে নির্ভুল আঘাত করেছেন। উপগ্রহ চিত্রে হ্যাঙ্গারের মতো দেখতে বস্তুর স্পষ্ট ক্ষতি দেখা গেছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সদরদপ্তর ও দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রায় ১৫ মাইলের মধ্যে অবস্থিত ও পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রাগার তত্ত্বাবধান ও সুরক্ষাকারী ইউনিট থেকে অল্প দূরত্বের নূর খান বিমানঘাঁটিটি সম্ভবত ভারতের সবচেয়ে সংবেদনশীল লক্ষ্যবস্তু ছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা বিশেষভাবে পাকিস্তানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটির রানওয়ে ও অন্যান্য স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। স্যাটেলাইট ছবিতে ক্ষতির চিত্র দেখা গেছে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সারগোধা বিমানঘাঁটিতেও আঘাত হানে ভারত। 

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দুই ডজন ভারতীয় সামরিক স্থাপনা ও ঘাঁটি তালিকাভুক্ত করেছে, যেগুলো তাদের বাহিনী লক্ষ্যবস্তু করেছে বলে জানিয়েছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা চারটি বিমানঘাঁটিতে ‘সীমিত ক্ষতি’ স্বীকার করলেও তারা খুব কম বিবরণ দিয়েছেন।

পাকিস্তান যেসব স্থানে আঘাত হানার দাবি করেছে, তার স্যাটেলাইট চিত্র সীমিত। এখনও পাকিস্তানি হামলায় ক্ষয়ক্ষতির স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি; এমনকি যেসব ঘাঁটিতে সামরিক পদক্ষেপের প্রমাণ রয়েছে, সেখানেও। পাকিস্তানের কর্মকর্তারা বলেন, তাদের বাহিনী উধমপুর বিমানঘাঁটি ‘ধ্বংস’ করেছে। একজন ভারতীয় সেনার পরিবার ঘাঁটিতে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে ১২ মের একটি ছবিতে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন

×