ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলো ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু: নেতানিয়াহু  

ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলো ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু: নেতানিয়াহু  

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫ | ১০:৪৫

ইরানে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘যতদিন প্রয়োজন, ততদিন এ হামলা অব্যাহত থাকবে। এই হামলা ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির কেন্দ্রে আঘাত হেনেছে।’ শুক্রবার হামলার পর এক ভিডিও বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। 

নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য’ ইরানি হুমকি প্রতিহত করতে সামরিক অভিযান ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু করেছে ইসরায়েল। রাজধানী তেহরান থেকে ২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণের শহর নাতানজ্-এ হামলা চালানোর কথা জানান নেতানিয়াহু। এ জায়গাটিকে সমৃদ্ধকরণের মূল এলাকা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসরায়েল ‘বোমা তৈরিতে কাজ করা’ ইরানি বিজ্ঞানীদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। এই হামলা ‘যত দিন সময় লাগে তত দিন চলবে।’

শুক্রবার ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ একাধিক স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী বলছে, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তেহরানসহ বেশ কয়েকটি স্থানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। 

এ হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামিও নিহত হয়েছেন। তেহরানে আইআরজিসি সদর দপ্তরেও হামলা হয়েছে বলে জানায় ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। হামলার সময় আইআরজিসি-এর সদর দপ্তরে ছিলেন হোসেইন সালামি। 

এছাড়া ইরানের দুই পরমাণুবিজ্ঞানীও নিহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন, ফেরেদুন আব্বাসি ও মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে নিহত দুই বিজ্ঞানীর নাম প্রকাশ করা হয়েছে। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেরেদুন আব্বাসি ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার (এইওআই) সাবেক প্রধান। ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর দেখাশোনা করে থাকে এইওআই। ২০১০ সালে তেহরানের একটি সড়কে তাঁকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তখন প্রাণে বেঁচে যান তিনি। নিহত অপর বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মেহদি তেহরানচি তেহরানের ইসলামিক আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। 

হোসেইন সালামি ২০১৯ সাল থেকে বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ইরানের পরমাণু ও সামরিক কৌশল নির্ধারণে তিনি ছিলেন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তার নেতৃত্বেই ইরান আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে একাধিক সামরিক কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে, বিশেষত ইরাক, সিরিয়া ও লেবাননে। 

ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস মূলত একটি সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি যা দেশটির ইসলামি শাসন ব্যবস্থার প্রতি ভেতর ও বাইরে থেকে আসা যে কোনো হুমকিকে প্রতিরোধে কাজ করে।

বিবিসি বলছে, আইআরজিসি ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি শক্তিশালী শাখা, যার রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব দেশটির ভেতরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গার্ডস বাহিনী বিশেষত ইরানের পরমাণু কর্মসূচি এবং আঞ্চলিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

আরও পড়ুন

×