ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

আইনপ্রণেতাদের 'লাশ ফেলার' পরিকল্পনা ছিল ট্রাম্প সমর্থকদের

আইনপ্রণেতাদের 'লাশ ফেলার' পরিকল্পনা ছিল ট্রাম্প সমর্থকদের

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২১ | ২২:১৭

যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলা চালিয়ে দেশটির আইনপ্রণেতাদের 'বন্দি করে হত্যা'র পরিকল্পনা করেছিল দাঙ্গাকারীরা। এমন তথ্যসংবলিত নথি আদালতে দাখিল করেছেন দেশটির বিচার বিভাগের আইনজীবীরা। গত ৬ জানুয়ারি পার্লামেন্ট ভবনে হামলা চালায় বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকরা। এরপরই তদন্তে নামে দেশটির বিচার বিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

গত বৃহস্পতিবার সরকারি কৌঁসুলিরা আদালতে নথি পেশ করে জানিয়েছেন, হামলাকারীরা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হত্যার উদ্দেশ্যে তাণ্ডব চালায়। অপরাধ আলামতগুলো বিশ্লেষণ করে এমন উদ্বেগজনক তথ্য পেয়েছেন তারা। খবর রয়টার্স ও এএফপির।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের কৌঁসুলিরা আদালতকে লেখা স্মারকে অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের ৩৩ বছর বয়সী জ্যাকব চ্যান্সলিকে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশনা জারির আহ্বান জানিয়েছেন। যিনি 'কিউয়ানন ষড়যন্ত্রের' তাত্ত্বিক। সে ওই দিন দেশটির সিনেটে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের চেম্বারের ডেস্কে শিংসদৃশ মাথাল পরে দাঙ্গায় অংশ নেন। পরে তার ছবি ভাইরাল হয়। বিচারককে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, জ্যাকবের বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করছে গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। হামলার সময় ওই চেম্বারে পেন্সকে হুমকি দিয়ে একটি চিঠি রেখে যায় সে। ওই চিঠিতে লেখা, 'এটা শুধু একটা সময়ের ব্যাপার মাত্র, আপনার বিচার আসছে।'

সরকারি কৌঁসুলিরা বলেছেন, 'যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের বন্দি ও হত্যার উদ্দেশ্য ছিল দাঙ্গাকারীদের। জ্যাকবসহ হামলাকারীদের নিজ বক্তব্য ও কার্যক্রমে এর যথেষ্ট প্রমাণ আছে।' ওই হামলায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন নিহত ও অর্ধশত মানুষ আহত হন।

পার্লামেন্ট ভবনে হামলার ঘটনায় চ্যান্সলিকে স্থানীয় সময় শুক্রবার আদালতে তোলা হবে। কৌঁসুলিরা বলেছেন, চ্যান্সলি একজন মাদকসেবী এবং তার মানসিক সমস্যা রয়েছে। আদালতে দেওয়া নথিতে বলা হয়েছে, 'চ্যান্সলি যে একজন এলিয়েন, উচ্চতর সত্তার, তিনি পৃথিবীতে এসেছেন অন্তস্তরে পৌঁছানোর জন্য; তার এমন বিশ্বাস সম্পর্কে এর আগে প্রকাশ্যে বহুবার তিনি বলেছেন।' আইনজীবীরা তাকে গ্রেপ্তার করে জাতিকে বড় বিপদ ও দুর্দশার ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কর্মকর্তা রবার্ট স্যানফোর্ড এবং পিটার স্টেজারের বিরুদ্ধে আদালতে দেওয়া নথিতে সরাসরি দাঙ্গায় অংশ নেওয়া ব্যক্তি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের মারধর করেছেন। চ্যান্সলির মামলায় বলা হয়েছে, সরকার পরিবর্তনে সহিংস বিদ্রোহে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতেও এমন কর্মকাণ্ড করার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চ্যান্সলি।

৬ জানুয়ারি হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে ৮০টিরও বেশি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। ওই হামলায় ট্রাম্পের সমর্থকরা পার্লামেন্ট ভবনের দরজা ও জানালা ভেঙে ক্যাপিটল হিলে প্রবেশ করে। তারা অস্ত্র ও ককটেল দিয়ে হামলা চালায়। সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালায় ট্রাম্পবাদীরা।

ক্যাপিটল হিলে হামলার পর তদন্ত শুরু করেছেন দেশটির বিচার বিভাগ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ওই হামলায় উস্কানি দেওয়ার দায়ে ইতোমধ্যে দেশটির প্রতিনিধি পরিষদে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অভিশংসিত করা হয়েছে। অন্যদিকে গোয়েন্দারা ওই ঘটনায় দুই শতাধিক ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ও স্থিরচিত্র বিশ্লেষণ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ডিস্ট্রিকের ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মাইকেল শেরউইন বলেছেন, লঘু অভিযোগগুলো নিয়ে প্রথমে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে গুরুতর অভিযোগ নিয়ে বিচারকাজ শুরু করবে বিচার বিভাগ। ওই অপরাধ মামলাগুলোর তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুন

×