ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

জন্মদিন

কবিতার অন্তরালে জীবন

কবিতার অন্তরালে জীবন

হেলাল হাফিজ [জন্ম :৭ অক্টোবর, ১৯৪৮]

সিরাজুল ইসলাম আবেদ

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২১ | ১২:০০

কবির সুখ-দুঃখ, প্রেম-বিরহ, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির নির্যাসে রচিত হয় কবিতা। তাতে নিমজ্জিত হয় কবির মনোজগৎ- সময়কাল, দৃষ্টিভঙ্গি, দর্শন, ভাবনা। তুমুল যৌবনে লেখা কবিতা নিয়ে কবি হেলাল হাফিজের প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে। বৈধ-অবৈধ অগণন সংস্করণের মধ্য দিয়ে এই একটিমাত্র কাব্যগ্রন্থই কবিকে তার পাঠককুলের কাছে প্রেম ও দ্রোহের কবি হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়। তার কবিতা জায়গা করে তারুণ্যের হৃদয়ে, উচ্চারিত হতে থাকে কণ্ঠ থেকে কণ্ঠে। এরপর দীর্ঘ বিরতি নিয়ে প্রায় ৩৪ বছর পর ২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় কবির দ্বিতীয় মৌলিক কাব্যগ্রন্থ 'বেদনাকে বলেছি কেঁদো না'। যখন কবি অনেক পরিণত। ৭ অক্টোবর ছিল কবির ৭৪তম জন্মদিন। জন্মদিনের আগে কবির বর্তমান আবাস, পরীবাগের সুপার হোস্টেলে এক বৃষ্টিভেজা সকালে আড্ডা হয় কবির সঙ্গে। চেষ্টা ছিল 'বেদনাকে বলেছি কেঁদো না' কাব্যগ্রন্থের কয়েকটি কবিতার মধ্য দিয়ে কবিকে ছুঁয়ে দেখার। কবি শোনালেন নির্বাচিত কবিতাগুলোর কবিতা হয়ে ওঠার পেছনের গল্প। জন্মদিন উপলক্ষে বলা যেতে পারে 'গঙ্গাজলে গঙ্গা পূজা'- কবির শোনানো সেই পেছনের গল্পগুলোই পত্রস্থ করা হলো।
ব্রহ্মপুত্রের মেয়ে
এক জীবনের সব হাহাকার বুকে নিয়ে
অভিশাপ তোমাকে দিলাম,-
তুমি সুখী হবে, খুব সুখী হবে।

বেদনা আমাকে নিয়ে আশৈশব খেলেছে তুমুল, আর
তিলে তিলে শিখিয়েছে সহনশীলতা,
নিলাজ নখের মতো দুঃখ কেটে কেটে আমি
আজকাল অর্জন করেছি মৌন উদ্ভিদের মুখর স্তব্ধতা,
রলো উল্লাসিনী,
জেনেশুনেই কেন দিতে গেলে টোকা!
তুমি আর কি বেদনা দেবে, কতোটা কাঁদাবে?
বালখিল্য এ খেলায় আমার চেয়েও বেশি তুমিই হারাবে।

এক জীবনের সব হাহাকার বুকে নিয়ে
অভিশাপ তোমাকে দিলাম,-
তুমি সুখী হবে,
ব্রহ্মপুত্রের মেয়ে, দেখে নিও, খুব সুখী হবে।

আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'যে জলে আগুন জ্বলে'র শুরুটা হয়েছিল দ্রোহ দিয়ে। প্রথম কবিতাটি ছিল নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়- 'এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।' ৩৪ বছর পর আমার দ্বিতীয় যে মৌলিক কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হলো 'বেদনাকে বলেছি কেঁদো না'- এর শুরু প্রেম দিয়ে। শুরুর কবিতা ব্রহ্মপুত্রের মেয়ে, যার শুরু এবং শেষ- 'এক জীবনের সব হাহাকার বুকে নিয়ে/অভিশাপ তোমাকে দিলাম,-/তুমি সুখী হবে, খুব সুখী হবে।'
আসলে আমার কাছে দ্রোহ এবং প্রেম এক সুতায় গাঁথা মালা। প্রেমের মধ্যেই দ্রোহের উপস্থিতি। প্রেমিক ছাড়া বিপ্লবী হওয়া যাবে না, আবার বিপ্লবী হতে হলে প্রেমিক হতেই হবে। অর্থাৎ নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় এবং ব্রহ্মপুত্রের মেয়ে এই দুটি কবিতারই অন্তর্নিহিত বক্তব্য এক- বিপ্লব এবং ভালোবাসা।
বিখ্যাত ব্রহ্মপুত্র নদ ময়মনসিংহের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ভিন্নভাবে বললে, ব্রহ্মপুত্র নদের পাশে গড়ে উঠেছে ময়মনসিংহ জনপদ। আমার বাড়িও সেই ময়মনসিংহ জনপদেই অর্থাৎ বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলায়। কম-বেশি সবাই জানেন, এক সময় তসলিমা নাসরিনের প্রেমে পড়েছিলাম- খুব ভালোবাসতাম, এখনও ভালোবাসি। তার বাড়িও ছিল ময়মনসিংহ। 'ব্রহ্মপুত্রের মেয়ে' আসলে তাকে উদ্দেশ করেই লেখা। কিন্তু এর বিস্তার যেভাবে, তাতে ব্রহ্মপুত্রপাড়ের যেকোনো মেয়ের জন্যই কবিতাটি প্রযোজ্য।
এটা খুব সম্ভবত ১৯৮৮ সালের প্রথম দিকের কবিতা। আমার অধিকাংশ কবিতাই এক বৈঠকে লেখা নয়। ভাবনাটা আসার পর কখনও অংশবিশেষ, কখনও পুরো কবিতাটার একটা খসড়া লেখা হয়ে যায়। পরে ধীরে ধীরে নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে কবিতা পূর্ণ কবিতা হয়ে ওঠে।
প্রণয়িনীর কাছে নিজেকে সমর্পণের কবিতা ব্রহ্মপুত্রের মেয়ে। এই যে বিচ্ছেদ হয়ে গেল, মিলন হলো না-এই বিরহকেও নান্দনিকভাবে প্রেমের উপসর্গ করে, অনুসর্গ করে রাখা এবং তাকে অন্যের মধ্যে সঞ্চারিত করা একটা প্রয়াসে এই কবিতা। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে যদি উন্মাদ হয়ে যায় বা উচ্ছৃঙ্খল হয়ে যায় বা বেপথু হয়ে মাদকাসক্ত হয়ে যায়, এমনকি আত্মহননের পথ বেছে নেয় অনেকে- এটা ঠিক না। পীড়ন সহ্য করো, পীড়িত হয়ে নীলকণ্ঠ হওয়া- তবেই না তুমি প্রেমিক। বিচ্ছেদের ভেতর দিয়েও প্রেম পূর্ণতা পায়। সেখানে শারীরিকভাবে বা দৈহিকভাবে হয়তো মিলন ঘটে না কিন্তু প্রেমের কোনো ঘাটতি থকে না। প্রেমের জন্য শরীর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বটে কিন্তু অত্যাবশ্যকীয় নয়। এই বিষয়গুলোকে উপজীব্য করেই ব্রহ্মপুত্রের মেয়ে লেখা হয়েছিল।
স্রোতস্বিনী ভালোবাসা
ভালোবাসা ছিল বলেই তুমিও আছো, আমিও আছি।
ভালোবাসা ছিল বলেই আম্মা ছিলেন, আব্বা ছিলেন
আম্মার আবার আব্বা ছিলেন আম্মা ছিলেন
আব্বার আবার আম্মা ছিলেন আব্বা ছিলেন।

তারও আগে ভালোবাসা ছিল বলেই
আব্বার আব্বার আম্মা ছিলেন
আম্মার আম্মার আব্বা ছিলেন,
তাদের আব্বার আম্মা ছিলেন
এবং আম্মার আব্বা ছিলেন।

আম্মা আব্বা
আব্বা আম্মা,
এমনি করে ভালোবাসা অযুত লক্ষ বছর ধরে
খেলছে নিপুণ ভাবের খেলা,
সবাই যেন প্রণয় পাখি, বুকের ভিতর প্রেমের মেলা!

ভালোবাসা আছে বলেই তুমিও আছো, আমিও আছি।
ভালোবাসা আছে এবং থাকবে বলেই
তোমার তুমি আমার আমি, তোমার আমি আমার তুমি
এখন থেকে তুমিই আমি, আমিই তুমি।

১৯৭৩ সালে আমার জীবনে তিনটা বড় ঘটনা ঘটে। প্রথমটি আমার বাবা এবং মা একই সঙ্গে দুটো সত্তাকে ধারণ করে শৈশবে মাতৃহারা আমাকে যিনি লালন করেছেন, সেই বাবার ইন্তেকাল। এ বছরের আরেকটা বড় ঘটনা হলো, আমার জীবনের প্রথম যে প্রেম-হেলেন। হেলেন তখন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতেই ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। সেই হেলেন আমাকে একদিন ডেকে নিল। আমরা ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরির পাশে ভাস্কর নভেরার কতগুলো ভাস্কর্য ছিল, সেখানে বসলাম। হেলেন আমাকে বলল,- কবি, বাড়িতে তো আমার বিয়ে ঠিক করেছে। আমি বিয়ে করতে যাচ্ছি।
আমি বললাম, তুমি করছো বিয়ে! সে বলল- আমার তো না করে উপায় নাই; বাবা,মা, পরিবারের সবাই চাইছে।
আমি আমার ভেতরের তোলপাড়টা ওকে বুঝতে দিলাম না। সেটা হজম করে আমি বললাম, ঠিক আছে। এটা হতেই পারে, বিয়ে করো। এই ঘটনা দুটো আমাকে ভেতরে ভেতরে একেবারে মুষড়ে ফেলে। কষ্ট পেয়েছি কিন্তু কাউকে বুঝতে দিইনি। শুধু কবিতায় আকারে-ইঙ্গিতে যতটুকু প্রকাশ পেয়েছে। আর, আত্মহত্যার হাত থেকে কোনো রকমে বেঁচে এসেছি। এ সবের ফল হলো অনার্স পরীক্ষা আর দিলাম না। সেই বিপন্ন সময়ে 'স্রোতস্বিনী ভালোবাসা' কবিতাটার ভাবনা মাথায় আসে। একজন মানুষের জীবনে বাবা, মা কিংবা প্রেমিকার ভালোবাসা কতটা জরুরি সেটাই এই কবিতায় তুলে ধরেছি- 'ভালোবাসা আছে বলেই তুমিও আছো, আমিও আছি।' স্রোতস্বিনী ভালোবাসা কবিতার ভাবনা ১৯৭৩ সালে হলেও লিখেছি বেশ পরে। কবিতাটা আমার কবিতার খাতায় না থাকায় 'যে জলে আগুন জ্বলে' কাব্যগ্রন্থে স্থান পায়নি। তাছাড়া হয়তো ওই বইয়েই এর স্থান হতো। 'যে জলে আগুন জ্বলে' বের হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ থেকে এক ছেলে এসে পত্রিকায় প্রকাশিত এই কবিতাটি আমাকে দিয়ে যায়।
সুন্দরের গান
হলো না, হলো না।
শৈশব হলো না, কৈশোর হলো না
দিয়ে যৌবন শুরু, কার যেন
বিনা দোষে শুরুটা হলো না।

হলো না, হলো না।
দিবস হলো না, রজনীও না
সংসার হলো না, সন্ন্যাস হলো না, কার যেন
এসবও হলো না, ওসব আরও না।

হলো না, হলো না।
সুন্দর হলো না, অসুন্দরও না
জীবন হলো না, জীবনেরও না, কার যেন
কিছুই হলো না, কিচ্ছু হলো না।

হলো না। না হোক,
আমি কী এমন লোক!
আমার হলো না তাতে কি হয়েছে?
তোমাদের হোক।

আমার হিসেবে, আমি যদি উন্নত রুচির, উৎকৃষ্ট কবিতা আমি আদৌ লিখে থাকি, তার মধ্যে 'সুন্দরের গান' একটি। এই কবিতাটি মানবজীবনে প্রায় প্রত্যেক মানুষ, সে যত বিত্তবানই হোক, যত প্রতিভাবানই হোক, সে যত সৃষ্টিশীল মানুষই হয়ে থাকুক, সে যত অবদানই রেখে মৃত্যুবরণ করুক জীবদ্দশায় তার আকরে একটা অপূর্ণতা থাকে। এই অপূর্ণতা বোধ যদি না থাকে তাহলে সে শিল্পী হতে পারে না। সে যদি মনে করে, সব পেয়ে গেছি তাহলে তো তার এক ধরনের আত্মতৃপ্তি এসে যাবে, ভেতরের ক্ষুধাটা নষ্ট হয়ে যাবে।
এই যে অপ্রাপ্তি, এই যে অপূর্ণতা, সৃষ্টিশীলতার এই যে ভাঙন বা অসম্পূর্ণ কাজ এগুলো মানুষকে যে বেদনা দেয়- প্রকৃত অর্থে যে সৃষ্টিশীল, প্রকৃত অর্থে যে কবি, শিল্পী বা ঔপন্যাসিক এমন কি সফল ব্যবসায়ী যিনি, তারও কিন্তু এক ধরনের ভাঙচুর আছে জীবনে। উত্থান-পতন আছে। সে যত ধনীই হোক, সে যত বিত্তশালীই হোক সে কখনোই মনে করে না তার সব আশা-আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয়েছে। অর্থাৎ, প্রতিটি মানুষের জীবনে এই অপূর্ণতা একটা বিশেষ জায়গা দখল করে থাকে। এবং পূর্ণতা কারও জীবনেই পুরোপুরি আসে না। সে হোক পুরুষ কিংবা নারী। এই অপূর্ণতার বেদনাকে যিনি সঠিকভাবে কণ্ঠে ধারণ করে নীলকণ্ঠ হয়ে শিল্পে রূপান্তরিত করতে পারেন, তিনিই তো সবচেয়ে বড় শিল্পী।
ঠিক একইভাবে আমারও অনেক কিছু হয়নি কিন্তু তাতে কী। তাই তো কবিতার শেষ প্যারায় এসে আমি বলেছি- হলো না। না হোক,/আমি কী এমন লোক!/আমার হলো না তাতে কি হয়েছে?/তোমাদের হোক।
এই যে নিজেকে উহ্য করে মানব কল্যাণের জন্য শুভ কামনা, এটাকি একজন কবির অন্যতম প্রধান কাজ নয়? একজন কবি তো মানুষের বেদনা নিজের বুকে ধারণ করবে। তার সময়ের, তার সমাজের এবং তার জনগোষ্ঠীর একক এবং সামষ্টিক দুটো বেদনাই একজন কবি বুকে ধারণ করে। সেটা কোনো বিপ্লবের জন্য হোক, সেটা কোনো আন্দোলনের জন্য হোক, সেটা প্রেম বা ভালোবাসার জন্য হোক- কবিকে ধারণ করতে হয়। এই সামষ্টিক ভাবনা থেকেই 'সুন্দরের গান' কবিতাটি আমি লেখি। প্রত্যেক মানুষ যদি বিশ্বাস করে ঠিক আছে, আমার হলো না তো কী হয়েছে, অন্যের হোক। এই যে অন্যের হওয়াকে নিজের মনে করা এবং নিজের না হওয়াকে অন্যের হওয়ার ছাই দিয়ে ঢেকে রাখা এটাই সুন্দরের গান।
রাখালের বাঁশি
কে আছেন?
দয়া করে আকাশকে একটু বলেন-
সে সামান্য উপরে উঠুক,
আমি দাঁড়াতে পারছি না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যত কবিতা লেখা হয়েছে, আমার ধারণা আর কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে এতো কবিতা লেখা হয়নি। এমনকি রবীন্দ্রনাথকে নিয়েও এতো কবিতা লেখা হয়নি। চরম সত্য হচ্ছে এসব কবিতার সিংহভাগ কবিতাই নান্দনিক অপুষ্টিতে পরিপূর্ণ; এগুলো কোনো উন্নত রুচির, উন্নত শিল্পবোধসম্পন্ন কবিতা হয়ে ওঠেনি। একধরনের স্তুতি, অন্ধ ভালোবাসা থেকেই এগুলো রচিত।
আমি এই জিনিসটা নিয়ে অনেক ভেবেছি। ১৯৭৫-এ তিনি নিহত হলেন। প্রথম এক-দুই বছর তো কেউ কোনো উচ্চবাচ্য করেনি। তারপর, ধীরে ধীরে তাকে নিয়ে লেখা এবং বলা শুরু হলো। সেটাও খুব কম। তারপর তো গোনে শেষ করা যাবে না। এটা আমাকে খুব কষ্ট দিত, এতো বড় একজন মানুষ তাকে নিয়ে উৎকৃষ্ট কবিতা আমার চোখে খুব কম পড়েছে। আমি শেখ মুজিবকে নিয়ে দুটি কবিতা লিখেছি। একটি, নাম কবিতায়- তাকানোর মতো করে তাকালেই চিনবে আমাকে... এটা যে জলে আগুন জ্বলে বইয়ে আছে। অপরটি- রাখালের বাঁশি। এই দুটো কবিতাতেই আমি নিজেকে সেই মানুষটির ভেতর ঢুকিয়ে ফেলেছি। অর্থাৎ আমিই হয়ে গেছি সেই মানুষ; হয়ে, তার যে উচ্চতা, দৃঢ়তা, তার যে গুণ তা ধরন করেছি। শেখ মুজিব এমন একজন ব্যক্তি যিনি, বাঙালির জন্য একটা স্বাধীন স্বার্বভৌম ভূখণ্ডের স্বপ্ন দেখেছেন। যে স্বপ্ন রবীন্দ্রনাথ দেখেননি, নজরুল দেখেননি, অন্য কোনো রাজনীতিবিদ দেখেননি। শেখ মুজিব শুধু স্বপ্ন দেখেই থেমে থাকেননি, সেই স্বপ্ন রূপায়িত করার জন্য তার নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
সেই ব্যথিত সময়ে, ১৯৮৭ সালে লেখা। কবি রফিক নওশাদের সেই সময় ব্রডশিট কাগজে 'কালপুরুষ' নামে একটা একটা সাহিত্য পত্রিকা বের করত। ১৯৮৭ সালে জাতীয় কবিতা পরিষদ হলো, তখন কবিতা উৎসবের আগে রফিক আমার কাছে এসে একটা কবিতা চাইলো। আমি এই কবিতাটা লিখে দিলাম। রফিকের পত্রিকায় যখন ছাপা হয় তখন এর নাম ছিল 'খাটো কবিতা'। নামটা ঠিক পছন্দ হচ্ছিল না। তাই পরে আমি কবিতার নাম পরিবর্তন করে 'রাখালের বাঁশি' রাখি।

আরও পড়ুন

×