স্বাস্থ্য কথা
এই গরমে ডায়াবেটিস রোগীর সতর্কতা

প্রতীকী ছবি
ডা. এ হাসনাত শাহীন
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৩ | ০১:১২ | আপডেট: ১৯ জুন ২০২৩ | ০১:১২
প্রচণ্ড গরমে এমনিতেই পরিশ্রমের কাজ করতে ইচ্ছে করে না। এ কারণে গরম বেশি পড়লে ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত হাঁটতে চান না। আবার অতিরিক্ত গরম পড়লে অনেকে বিভিন্ন ধরনের শরবত খান। এতে স্বাভাবিকভাবেই ডায়াবেটিস হয়ে পড়ে অনিয়ন্ত্রিত। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে যে কোনো সাধারণ অসুখেই রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে।
এই গরমে ঘামের কারণে পানির সঙ্গে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ বেরিয়ে গিয়ে দেখা যায় পানিস্বল্পতা। যেসব ডায়াবেটিস রোগীর কিডনি জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ রয়েছে বা ডায়ইউরেটিকস জাতীয় ওষুধ সেবন করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই পানিস্বল্পতা ভয়াবহ হতে পারে। সমস্যা বেশি হলে রক্তচাপ কমে যায়, দুর্বল লাগে, মাথা ঝিমঝিম করে, এমনকি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন।
গরমের শুরু থেকে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এ ছাড়া পানিবাহিত অন্যান্য রোগ যেমন– টাইফয়েড, হেপাটাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। ঋতু পরিবর্তনের সময় অনেকে জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হন। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে সাধারণ সর্দি-জ্বর থেকেই শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, কানে সংক্রমণ, টনসিলাইটিস ও নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া প্রখর রোদে ত্বকে ফোসকা পড়া, ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, ফাঙ্গাসের সংক্রমণ, ঘামাচি ও চুলকানি দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাকলে এগুলো সংক্রমিত হয়ে ভোগান্তি বাড়াতে পারে।
ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রণে থাকলে রক্তের ঘনত্ব এমনিতেই বেড়ে যায়। অতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতা হলে এ ঘনত্ব আরও বাড়ে। এর ফলে হাইপার অসমোলার কোমার মতো ভয়াবহ সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সমস্যা এড়াতে করণীয়
- পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফলের রস, আখের রস, চিনি-গুড়ের তৈরি শরবত, কোমল পানীয় খাওয়া বাদ দিতে হবে।
- ডায়রিয়াসহ যে কোনো পানিশূন্যতায় পরিমাণমতো স্যালাইন খেতে হবে।
- সন্ধ্যার পরে অথবা খুব ভোরে হাঁটার অভ্যাস করতে হবে।
- অতিরিক্ত গরমে কায়িক পরিশ্রম থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকতে হবে।
- বাইরে বের হলে প্রয়োজনে টুপি বা ছাতা ব্যবহার করতে হবে।
- নিয়মিত গোসল করতে হবে। শরীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
- চা, কফি, গুরুপাক এড়িয়ে চলতে হবে।
- নিয়মিতভাবে রক্তের শর্করা পরিমাপ করে ওষুধ বা ইনসুলিনের মাত্রা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে।
লেখক: ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ, কনসালট্যান্ট, ইমপালস হাসপাতাল, তেজগাঁও, ঢাকা