বৈষ্ণব কবিতা

.
সমকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ | ২৩:৫৩
বঁধু তুমি সে আমার প্রাণ
দেহ মন আদি তোঁহারে সঁপেছি
কুলশীল জাতি মান॥
অখিলের নাথ তুমি হে কালিয়া
যোগীর আরাধ্য ধন।
গোপ গোয়ালিনী হাম অতি হীনা
না জানি ভজন পূজন
পিরীতি-রসেতে ঢালি তনু মন
দিয়াছি তোমার পায়।
তুমি মোর পতি তুমি মোর গতি
মনে নাহি আন ভায়।
কলঙ্কী বলিয়া ডাকে সব লোকে
তাহাতে নাহিক দুখ।
তোমার লাগিয়া কলঙ্কের হার
গলায় পরিতে সুখ॥
সতী বা অসতী তোমাতে বিদিত
ভালো মন্দ নাহি জানি
কহে চণ্ডীদাস পাপপুণ্য সম
তোহারি চরণ খানি॥
রূপ লাগি আঁখি ঝুরে গুণে মন ভোর।
প্রতি অঙ্গ লাগি কান্দে প্রতি অঙ্গ মোর॥
হিয়ার পরশ লাগি হিয়া মোর কান্দে।
পরাণ-পিরীতি লাগি থির নাহি বান্ধে॥
সই কি আর বলিব।
যে পণ করাছি মনে সেই সে করিব।
রূপ দেখি হিয়ার আরতি নাহি টুটে।
বল কি বলিতে পারি যত মনে উঠে॥
দেখিতে যে সুখ উঠে কি বলিব তা।
দরশ পরশ লাগি আউলাইছে গা॥
হাসিতে খসিয়া পড়ে কত মধু-ধার।
লহু লহু হাসে পহুঁ পিরীতির সার॥
গুরু গরবিত মাঝে রহি সখী সঙ্গে।
পুলকে পুরয়ে তনু শ্যাম পরসঙ্গে॥
পুলক ঢাকিতে করি কত পরকার।
নয়নের ধারা মোর বহে অনিবার॥
ঘরের যতেক সবে করে কানাকানি।
জ্ঞান কহে লাজ ঘরে ভেজাই আগুনি॥
আজু রজনী হাম ভাগে পোহায়লুঁ
পেখলু পিয়া মুখ চন্দা।
জীবন যৌবন সফল করি মানলু
দশদিশ ভেল নিরদন্দা॥
আজু মঝু গেহ গেহ করি মানলুঁ
আজু মজু দেহ ভেল দেহা।
আজু বিহি মোহে অনুকূল হোয়ল
টুটল সবহুঁ সন্দেহা॥
সোই কোকিল অব লাখ লাখ ডাকউ
লাখ উদয় করু চন্দা।
পাঁচবাণ অব লাখ বাণ হোউ
মলয় পবন বহু মন্দা॥
অব মঝু যব পিয়া সঙ্গ হোয়ত
তবহি মানব নিজ দেহা।
বিদ্যাপতি কহ অল্প ভাগি নহ
ধনি ধনি তুয়া নব নেহা॥
- বিষয় :
- কবিতা