ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

লোহাগাড়া

দরবেশ হাট ডিসি সড়কে শত শত গর্ত

দরবেশ হাট ডিসি সড়কে  শত শত গর্ত

লোহাগাড়ার দরবেশ হাট ডিসি সড়কের এমচর হাট অংশে অসংখ্য গর্ত। গর্তের কারণে বারবার ঘটে দুর্ঘটনা সমকাল

 কাইছার হামিদ, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) 

প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৫ | ০০:০১

লোহাগাড়া উপজেলার প্রধান ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দরবেশ হাট ডিসি সড়ক। সড়কটি পার্বত্য বান্দরবান জেলার সঙ্গে সংযুক্ত। ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের ৫ কিলোমিটার অংশে বৃষ্টির পানি জমে ৫০০ গর্ত তৈরি হয়েছে। সেসব গর্ত মাড়িয়ে যানবাহন চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে। বালুভর্তি ট্রাক চলার কারণে সড়কের এ অবস্থা হয়েছে।
পুটিবিলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ইকবাল বলেন, ‘দরবেশ হাট ডিসি সড়কের দুরবস্থার কথা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি, তিনি বলেছেন শিগগিরই সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হবে।’
সরেজিমন দেখা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বটতলী স্টেশনের মাঝখান দিয়ে পূর্ব দিকে চলে গেছে দরবেশ হাট ডিসি সড়ক। সড়কটি এখন ক্ষতবিক্ষত। বৃষ্টি হলেই জমে থাকে পানি। এ অবস্থায় সড়কে যান চলাচলও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক থেকে ডিসি সড়কে ঢোকার মুখে দুই পাশের বহুতল ভবনের দোকানদাররা নালা দখল করেছেন। ফলে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। 
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন শতাধিক বালুভর্তি ট্রাক চলে এ সড়কে। গাছ, বাঁশের ট্রাকও চলে এ সড়কে। সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা। বড় ট্রাকে করে ইট, কংক্রিট ও মাটি পরিবহন করা হয় এই সড়কে। ধারণক্ষমতার চেয়ে গাড়ির লোড বেশি হওয়ায় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 
পুটিবিলার বাসিন্দা ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও রোগীদের বেশি সমস্যা হচ্ছে। সড়কটি দ্রুত সময়ে সংস্কার করা জরুরি।’
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার লোহাগাড়া সদর থেকে পুটিবিলা ইউনিয়নের হাসনাপাড়া বাজার পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার সড়কজুড়ে অসংখ্য খানাখন্দ। কোথাও কোথাও দুই থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত গর্ত তৈরি হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় উঠে গেছে পিচ, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ইট-পাথরের খোয়া।
এমচর হাট বাজার, মাস্টারপাড়া টার্নিং, গৌড়স্থান লাকী পাড়ার আগে ও পরে, নয়াবাজার, গজালিয়া দিঘির পাড়, মনিরের টেক ও হাসনা ভিটা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার অংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এই অংশ যান চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কয়েক গজ পরপর সড়কে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। সে গর্তে জমেছে বৃষ্টির পানি। অনেক জায়গায় যাত্রীদের যানবাহন থেকে নেমে হেঁটে 
যেতে হচ্ছে। 
স্থানীয়দের অভিযোগ, ১০ বছর আগে সড়কটি পাকা করা হয়। কিন্তু নিম্নমানের কাজের কারণে বছর দুই বছর পর সড়ক খারাপ হতে শুরু করে। সিএনজি অটোরিকশাচালক জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘দিনের পর দিন গর্তের জন্য গাড়ি চালাতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে, কিছু অংশ সংস্কার করা হলেও ভারী ট্রাক চলার কারণে সেটা আগের অবস্থায় ফিরে গেছে।’
গৌড়স্থান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কবি সোলাইমান বলেন, ‘সড়কটি এতই খারাপ যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলাচলে চরম ভোগান্তি পেতে হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজনে রোগী কিংবা গর্ভবতী নারীদের উপজেলা সদরে নিতে হলে সমস্যায় পড়তে হয়। বৃষ্টি হলে বড় গর্তে পানি জমে, ফলে যানবাহন চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে।’
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী ইফরাত বিন মুনির বলেন, ‘এমচর হাট বাজার থেকে হাসনাভিটা সেতু পর্যন্ত সড়ক সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়েছে, ঠিকাদারকে কার্যাদেশও দেওয়া হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে দ্রুত কাজ শুরুর ব্যবস্থা করে হবে।’
 

আরও পড়ুন

×