ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

চ্যালেঞ্জ ছাড়া এগিয়ে যাওয়া যায় না

চ্যালেঞ্জ ছাড়া এগিয়ে যাওয়া যায় না

জেমস নাখট্ওয়ে

জেমস নাখট্ওয়ে

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৪ | ২৩:১৫

আমি যেসব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, আমার ছবির মানুষেরা সে ঘটনাবলির একেকটি সাক্ষ্য। যে ঘটনাগুলো আমি নথিভুক্ত করছি, সেগুলো কখনোই ভোলার নয়; আর সেগুলোর পুনরাবৃত্তিও হওয়া উচিত নয় কখনোই। যেসব মানুষের ছবি আমি তুলি, চেষ্টা করি তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে নিজের যতটুকু জানা– সেই আলোকেই ছবিটিকে অর্থবহ করে তুলতে। আর এ ক্ষেত্রে ফটোগ্রাফির চিরায়ত উপাদানগুলোই ব্যবহার করি; কোনোভাবেই ধারণ করতে চাই না ভুল অর্থ। 
সৌভাগ্যক্রমে বুলেট আমার ঠিকানা পায় না!
যেখানেই যাওয়ার প্রস্তুতি নিই; মনে হয়– হয়তো ফেরা হবে না আর। বহুবারই এমনটা ঘটেছে যে, ঠিক আমার পাশের লোকটা গুলিবিদ্ধ হয়েছে। মরেও গেছে। অথচ সৌভাগ্যক্রমে বুলেট আমার ঠিকানা পায়নি। একবার আমার ঠিক কয়েক ফুট পাশেই এসে আছড়ে পড়েছে একটা রকেট; কিন্তু কেন যেন বিস্ফোরণ ঘটেনি! যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংস হওয়ার সময় আমি দাঁড়িয়েছিলাম সেটির নর্থ টাওয়ারের ঠিক নিচে। কী করে যেন সে যাত্রায়ও বেঁচে গেছি! নিজেকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে, অনেক ট্র্যাজেডি চোখের সামনে ঘটতে দেখেছি আমি। তার কোনোটার স্মৃতিই উধাও হয়নি মন থেকে। বরং সেগুলো থেকে প্রেরণা নিয়েই সামনে বাড়াতে থাকি পা।
গ্রেনেড বিস্ফোরণে মারাত্মক আহতের পরও রেখেছিলাম বিশ্বাস
ইরাকে তখন যুদ্ধ চলছে। গ্রেনেড বিস্ফোরণে মারাত্মক আহত আমি বিশ্বাস রেখেছিলাম বেঁচে যাওয়ার। স্টোরিটার গুরুত্ব ছিল অনেক। কেননা, নিজ দেশের সামরিক সেনাদের এই আত্মবিসর্জনকে যেন আমার দেশের মানুষ সম্মান জানাতে ও শনাক্ত করতে পারে এবং ধরতে পারে যুদ্ধের আসল ক্ষতি ও তুলতে পারে এটির ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন– সেই রসদ ক্যামেরার মাধ্যমে জোগান দেওয়ার দায় আমার।
সচেতনতা ছাড়া বদলায় না কিছুই
বাস্তব সময়ের অলিখিত ও অনির্দেশ্য ইতিহাস ছবিতে ধারণ করি। ফলে এটি অজানারই এক আবিষ্কার। তাই এ কাজে অকপটতা ও চিরন্তন সচেতনতার প্রয়োজন। হাজারো বাধাবিপত্তি আর বিপজ্জনক ভূখণ্ডের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হয় আমায়। প্রতি মুহূর্তেই করতে হয় সামনে হাজির হওয়া ঘটনা ধারণ এবং সেটি দ্রুততার সঙ্গে বিশ্লেষণ। অনেক সময় সেটি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ হাজির করে। সচেতনতা ছাড়া কোনো কিছুই বদলায় না। এটিই আমাদের সামাজিক প্রক্রিয়া। চ্যালেঞ্জ নিয়েই করি কাজ 
নিজের কম্পোজিশনগুলো চাই না আত্মসচেতন করে তুলতে। চাই না কম্পোজিশনের দিকেই চোখ যাক দর্শকের। বরং চাই, তারা যখন ছবিগুলো দেখবে, তখন তাদের আর ছবিতে থাকা মানুষগুলোর মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হোক এবং সেটির প্রভাব দর্শকদের ওপর পড়ুক। ফটোগ্রাফিকে একেবারেই প্রচলিত ও ভিত্তিগত রূপে হাজির করার চেষ্টা থাকে আমার। আর সেটিই আমার চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জে নিজেকে প্রতিনিয়ত নিয়োজিত করি। 
 

আরও পড়ুন

×