ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

পরিশ্রম করলে সাফল্য আসবেই

পরিশ্রম করলে সাফল্য আসবেই

আলিয়া মুস্তাফিনা [জন্ম: ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪, রাশিয়া]

আলিয়া মুস্তাফিনা

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৩:৩৬

আলিয়া মুস্তাফিনা। আলোচিত রাশান আর্টিস্টিক জিমন্যাস্ট। সাতবার অলিম্পিক পদক জয়ের অনন্য সম্মানের অধিকারিণী। মাঠে নেমেই মেলতে শুরু করে দেন ডানা–অনিন্দ্য সুন্দর কোনো পাখির মতো! কিংবদন্তি এ আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে
অনুপ্রেরণার কথা তুলে এনেছেন জসিম উদ্দিন আকাশ

জগতের সব খেলাধুলার মধ্যে শারীরিক সৌন্দর্য প্রদর্শনীর বিচারে প্রথম সারিতে রয়েছে আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকের নাম। এ খেলায় একেকজন খেলোয়াড় যে শুধু খেলোয়াড়ই নন, বরং উঁচুমানের শিল্পসত্তাও বহন করেন–সে কথা বলাবাহুল্য। এ খেলায় অনেকে আমাকে তুমুল প্রতিশ্রুতিশীলদের একজন মনে করেন। সাতবার অলিম্পিক পদক জয় আমাকে দিয়েছে অনন্য সম্মান। মনে পড়ে, সেই ২২ বছর বয়সের কথা। তরুণী আমি মাঠে নেমেই মেলতে শুরু করে দিতাম ডানা–অনিন্দ্য সুন্দর কোনো পাখির মতো। তবে এখনও আমি সেই ধারাবাহিকতায় হাঁটার চেষ্টা করে যাচ্ছি। করছি কঠোর পরিশ্রম।  
ব্যক্তিগত খেরোখাতা
আমার পুরো নাম আলিয়া ফার্গাতোভনা মুস্তাফিনা। জন্ম ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪। ইয়োগরিয়েভস্ট শহরে হলেও আবাস রাজধানী মস্কোতে। বাবা ফারহাত মুস্তাফিন একজন ভোলগা তাতার নৃগোষ্ঠীর মানুষ। তিনি ১৯৭৬ সালের অলিম্পিকে রেসলার হিসেবে ‘গ্রিকো-রোমান রেসলিং’ বিভাগে দেশের জন্য বয়ে এনেছিলেন ব্রোঞ্জপদক। মা ইয়েলেনা মুস্তাফিনাও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ। পেশায় একজন
পদার্থবিজ্ঞান শিক্ষিকা। ছোট বোন নায়লাও দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন জুনিয়র ন্যাশনাল জিমন্যাস্টিকস টিমের সদস্য হিসেবে।
আয়নায় নিজেকে দেখা
আর্টিস্টিক জিমন্যাস্টিকের অংশ হিসেবে খেলোয়াড়কে যত কসরত দেখাতে হয়, বিম বা কড়িকাঠের ওপর ভারসাম্য ধরে রেখে অনন্যসাধারণ পারফর্ম করা তার মধ্যে অন্যতম। এ কাজটি ভীষণ সুনিপুণ ও সৌন্দর্য সহকারে অবিরাম করতে পারার কারণে বেশ নামডাক হয়েছে হয়তো আমার। তবে আমার কাছে মনে হয় ফ্লোরে পারফর্ম করার চেয়ে কড়িকাঠের ওপর অ্যাক্রোবেট করা অপেক্ষাকৃত সহজ বা কম ঝামেলার। এখানে ডবল ডিগবাজি খাওয়ার কিংবা চক্রাকারে ঘোরার কোনো বালাই নেই। ফলে কড়িকাঠই আমার বেশি পছন্দের। যেহেতু কুড়ি বছরের অধিককাল ধরে আমি জিমন্যাস্টিক করছি, ফলে এ দীর্ঘ সময়ে কড়িকাঠের সঙ্গে ভালো বোঝাপড়া হয়ে গেছে আমার। যদিও এ ক্ষেত্রে একটা চাপা আতঙ্ক, ভারসাম্য হারিয়ে এত উঁচু থেকে পড়ে যাওয়ার ভয় সবসময়ই কাজ করে মনে, তবু কড়িকাঠ আমি ভালোবাসি।
অন্ধের মতো দেখি নিজের ভেলকি
সত্য ব্যাপারটি হলো, পারফর্ম করার সময় কড়িকাঠটির দিকে বেশির ভাগ সময়ই আমি তাকিয়ে দেখি না; বরং অনেকটা অন্ধের মতোই দেখাতে থাকি নিজের ভেলকি। মনে মনে ভেবে নিই, যদি আমার চোখে কেউ রুমাল বেঁধে দিত, এ বিপদ থেকে বেরিয়ে আসতাম কী করে? এ ভাবনা এমন এক টনিক হিসেবে কাজ করে, কোনো ভয়-ডর থাকে না আর মনে। এভাবেই হয়তো অন্ধের মতো, তবু দুর্দান্ত পারফর্ম দিয়ে নিজ দেশ তো বটেই, সারা দুনিয়ার জিমন্যাস্টিকস ভক্তদের আরও দীর্ঘদিন মাতিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। করে যাচ্ছি কঠোর পরিশ্রম।

 

আরও পড়ুন

×