ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

‘এগিয়ে যান সাফল্য আসবেই’

‘এগিয়ে যান সাফল্য আসবেই’

.

এলেন ডিজেনারেস

প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ০১:২৬

এলেন ডিজেনারেস। আমেরিকান কমেডিয়ান, টিভি উপস্থাপক, অভিনেত্রী, লেখক ও প্রযোজক। কমেডি শো ও টিভি টকশোর কারণে তুমুল জনপ্রিয়। কিংবদন্তি এই কমেডিয়ানের বিভিন্ন সাক্ষাৎকার থেকে অনুপ্রেরণার কথা তুলে এনেছেন ইমাম হোসেন মানিক
 

১৯ বছর বয়সে আমার জীবনে একটি বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটে। আমার প্রিয় বান্ধবী গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায়। তখন একটি অ্যাপার্টমেন্টের বেজমেন্টে থাকতাম আমি। আমার কাছে কোনো টাকা ছিল না। তাপমাত্রা কিংবা বাতাস ছিল না সেখানে। মেঝের ওপর একটি ম্যাট্রেস বিছানো ছিল; অ্যাপার্টমেন্টটি মাছিতে ভনভন করত। সে সময় নিজের আত্মাকেই যেন খুঁজতাম আমি! জানতে চাইতাম, কেন সে হঠাৎ চলে গেল এবং এখানে এত মাছি কেন? আমি এসবের কারণ বুঝতাম না। মনে হতো, যদি স্রষ্টাকে ফোন করতে পারতাম, যদি তাঁর কাছে জিজ্ঞেস করতে পারতাম! আমি লেখা শুরু করলাম। স্রষ্টার সঙ্গে কাল্পনিক কথোপকথন মনভরে লিখতাম। সেটি একপক্ষীয় ছিল। তবু আমি লেখা শেষ করেছিলাম। লেখাগুলোর দিকে তাকাই এবং নিজেকে বলি, আমি জানি কারসনের সঙ্গে টুনাইট শো করব। সে সময় তিনি ‘স্ট্যান্ডআপ টুনাইট শো’র সেরা ছিলেন। নিজেকে আরও বলেছিলাম, আমি এ শোয়ের ইতিহাসে প্রথম নারী হতে যাচ্ছি! সত্যিই তার কয়েক বছর পর নারী হিসেবে প্রথম এই শো উপস্থাপন করে ইতিহাস গড়ি।
সব হারিয়েও এগিয়ে গিয়েছি
মনে পড়ে, স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে এসে সবকিছু হারিয়ে ফেলেছিলাম। তবু আমি সামনে এগিয়ে গিয়েছি। যে কোনোভাবে শেষ করেছিলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঠ। সত্যি বলতে, আমার কোনো লক্ষ্য ছিল না, কী করতে চাই। আমি সবকিছু করেছি। ঝিনুকের খোসা ছাড়িয়েছি। অতিথিসেবা করেছি। মদের দোকানে মদ পরিবেশন করেছি। হোটেলে খাবার পরিবেশন করেছি। ঘরে রং করেছি। মেঝে পরিষ্কার করেছি। আমি কী করব, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। ভাবতাম, কোনো এক কাজে শেষমেশ স্থির হতে পারব। 
বড় হতে হতে পাল্টে যায় সফলতার সংজ্ঞা 
আজ আমার কাছে সফলতার ধারণা ভিন্ন। আপনি যখন বড় হচ্ছেন, দেখবেন সফলতার সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। আমার মতে, আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সম্পূর্ণতা নিয়ে জীবন যাপন করা এবং যা আপনি নন, বন্ধুবান্ধবের চাপে পড়ে তেমন কিছু না করা। একজন সৎ ও দয়ালু মানুষ হিসেবে আপনারা নিজের জীবন কাটান, এটিই আমি চাই।  
এগিয়ে যান, সাফল্য আসবেই
নিজের ভালো লাগাকে অনুসরণ করুন, নিজের ওপর সৎ থাকুন। যতক্ষণ পর্যন্ত পথ না হারিয়ে ফেলবেন, অন্য কারও পথ অনুসারে চলা যাবে না। কাউকে উপদেশ দেবেন না। কারণ এটি ফিরে আসবে আপনার কাছেই। তখন হয়তো বেকুবের মতো লজ্জিত হবেন! আসলে আমার বারবার নিজের শৈশবের কথা মনে পড়ে। অনেক কষ্টে স্কুলের গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছিলাম। সাফল্য পেতে বারবার নানা দরজায় কড়া নাড়তে হয়েছিল।  বেড়ে ওঠার জন্য প্রচুর সময় ব্যয় করেছি। আমার মা নিউকম্ব শহরে কাজ করতেন এবং আমি তাঁর পার্স থেকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু চুরি করতাম! সেই চুরি ভালো কিছু ছিল না। আজ আমি এই পর্যায়ে সে চুরির কারণে আসিনি। পরিশ্রমের কারণে এসেছি এবং সেই সঙ্গে সে চুরি থেকে নিজেকে বদলে নেওয়ার জন্য এখানে এসেছি। আমি অনমনীয়তার বাইরে কোনো কিছু চিন্তা করতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে আরও সাহসী হয়ে উঠি। বদলে নেওয়ার শক্তি নিজের ভেতরে তৈরি করুন। নিজেকে নিজে এগিয়ে না নিলে কেউই এগিয়ে দেবে না। এগিয়ে যান। সাফল্য আসবেই! u
 

আরও পড়ুন

×