ঢাকা বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫

সাক্ষাৎকার : অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন

সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নিতে হবে কর্তৃপক্ষকেই

আমরাও দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চাই, তার আগে দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে

সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নিতে হবে কর্তৃপক্ষকেই

অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন

 খুলনা ব্যুরো

প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫ | ০১:০২ | আপডেট: ০৬ মে ২০২৫ | ১০:৪৭

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) বিদ্যমান সংকট বা অচলাবস্থা নিরসনে কুয়েট কর্তৃপক্ষকেই পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসেন। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) বিভাগের জ্যেষ্ঠ এই শিক্ষক বলেন, উপাচার্য চেষ্টা করলে সংকট নিরসন করতে পারবেন। গতকাল সোমবার সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। 

আপনারা ক্লাসে ফিরছেন না কেন– এ প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক ফারুক হোসেন বলেন, গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি কয়েকজন শিক্ষককে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ ছাড়া এরপর থেকে কিছু শিক্ষার্থী সাইবার বুলিং করছে, কটূক্তি করছে, শিক্ষকদের নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আপত্তিকর কথাবার্তা লিখছে। আমরা শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে গত ১৮ এপ্রিল সভা করে এর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছিলাম। অন্যথায় ক্লাসে ফিরব না বলে আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সে কারণে ৪ মে থেকে ক্লাস চালু হলেও আমরা শিক্ষকরা কেউ ক্লাসে যাচ্ছি না।   

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইতোপূর্বে তদন্ত কমিটি বিশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করেছে। প্রয়োজনে কুয়েট প্রশাসন আবারও সেগুলো যাচাই-বাছাই করে শাস্তি কার্যকর করতে পারে। আমরা ৭ কর্মদিবস সময় দিয়েছি, এর মধ্যেই সংকট সমাধান করা সম্ভব। 

শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনের কারণে সংকট নিরসন হচ্ছে না বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ– এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আগে যে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল সেখানে শিক্ষকদের কোনো ভূমিকা ছিল না। এর জন্য শিক্ষকরা দায়ী ছিলেন না। প্রথমদিকে কয়েক দিন ক্লাস করেনি শিক্ষার্থীরা। পরে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরাও দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চাই। তার আগে আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।

শিক্ষক সমিতি বিদায়ী উপাচার্যের পক্ষ নিয়েছে এবং সমিতির নেতারা কেউ কেউ বিএনপির অনুসারী বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ফারুক বলেন, এটা আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। কারণ এসব অপপ্রচার। আমরা কারও পক্ষ-বিপক্ষ নই। কোনো দলের সঙ্গেও সম্পৃক্ত নই।

কুয়েটের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে কিনা– এ প্রশ্নে  তিনি বলেন, কুয়েটে কোনো রাজনৈতিক দল নেই। কিন্তু তাদের পক্ষে কেউ বিবৃতি দিচ্ছে, কোনো না কোনোভাবে একটা সম্ভাবনা আছে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার। তবে সরাসরি কেউ রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে আসছে না।  
শিক্ষার্থীরা ক্ষমা চেয়েছে, এ প্রসঙ্গে শিক্ষক নেতা বলেন, কোন কোন ছাত্র ক্ষমা চেয়েছে, কী কারণে ক্ষমা চেয়েছে? তারা কি বলেছে, কে কী ভুলত্রুটি করেছে? তাহলে কী রকম ক্ষমা চেয়েছে, কোথায় ক্ষমা চেয়েছে? 

তিনি জানান, গত ১৮ এপ্রিল শিক্ষক সমিতির সভায় একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির কাছে ইতোমধ্যে লাঞ্ছিত ও সাইবার বুলিংয়ের শিকার হওয়া শিক্ষকরা অভিযোগ জমা দিয়েছেন। আমরা মঙ্গলবার তা কুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করব। এ ছাড়া গত ২৩ এপ্রিল শিক্ষা উপদেষ্টা এবং ইউজিসির প্রতিনিধি দল ক্যাম্পাসে আসেন। কিন্তু তারা পক্ষপাতমূলক ভূমিকা পালন করেছেন। এতে শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত।

ফারুক হোসেন বলেন, সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীরা প্রথমে যে ৫ দাবি জানিয়েছিল, তার সঙ্গে শিক্ষকরা শুরু থেকেই একমত ছিলেন। যে দাবি পূরণ না হওয়ার অভিযোগে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো অতিদ্রুত পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। সামাজিক মাধ্যমে কুয়েটবিরোধী অপপ্রচার করা হচ্ছে। 

আরও পড়ুন

×