ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

রূপচর্চা আর সুস্থতায় অ্যালোভেরা

রূপচর্চা আর সুস্থতায় অ্যালোভেরা

রোজী আরেফিন

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪ | ০১:০৩

আপনি কি এই গরমে আপনার ত্বক এবং শরীরের যত্নে জাদুকরি কোনো উপায় খুঁজছেন? সে ক্ষেত্রে গরমে ত্বককে ফ্রেশ, ময়েশ্চারাইজ, নরম এবং কোমল রাখতে অ্যালোভেরার চেয়ে ভালো আর কোনো প্রাকৃতিক বিকল্প এই মুহূর্তে হতে পারে না! বিশেষ করে তাপদাহের এই সময়ে আমাদের ত্বকে যত ধরনের সমস্যা হয়, নিয়মিত অ্যালোভেরার ব্যবহারে সেগুলোর অধিকাংশই ম্যাজিকের মতো দূর হয়ে যায়।
গরমে অ্যালোভেরার ব্যবহার
অ্যালোভেরার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটি প্রদাহবিরোধী। তাই রোদে পোড়া বা পোড়া ত্বকের জন্য এটি অন্যতম একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার। অ্যালোভেরার জেল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খনিজ সমৃদ্ধ, যা ত্বকের যে কোনো ড্যামেজ নিরাময় করতেও সাহায্য করে।
চলুন দেখে নিই এই গরমে অ্যালোভেরার কোন ভূমিকাগুলো আমাদের কাজে লাগবে–
রোদে পোড়া দাগ দূর করতে
অ্যালোভেরা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা আপনার ত্বক থেকে রোদে পোড়া দাগ বা সূর্যের ট্যানকে দূর করতে পারে। অ্যালোভেরার পাতা থেকে তাজা বা ফ্রেশ জেল বের করুন। এই জেল আপনার হাত-পায়ে লাগান, আধাঘণ্টার জন্য রেখে দিন এবং স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন হিসেবে
গ্রীষ্মে অতিরিক্ত ঘামের কারণে আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পানি ক্ষয় হয়, যার ফলে ত্বক পানিশূন্য হয়ে পড়ে। অ্যালোভেরা ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং আপনাকে রাখে সজীব আর প্রাণবন্ত। অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী শুধু ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে না, এটি সূর্যের ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে প্রাকৃতিক সানস্ক্রিন হিসেবেও কাজ করে।
ক্ষত নিরাময় করতে
অ্যালোভেরা শুধু আমাদের ত্বকের যত্নেই অনন্য নয়; এই জাদুর গাছটি একটি ক্ষত নিরাময়কারী উদ্ভিদও। তাই এটি পোড়া এবং ফুসকুড়ির চিকিৎসার জন্যও পরিচিত। এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা সহজেই ক্ষত প্রশমন করে এবং পোড়া নিরাময় করে।
ত্বকের বলিরেখা দূর করতে
অ্যালোভেরার অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য আপনার ত্বকের বলিরেখা দূর করে ত্বকে তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকে অ্যালোভেরার জেল নিয়মিত মাখলে আপনার ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ কমে যাবে। 
ব্রণ দূর করতে
বাইরের রোদ, ধুলাবালুর কারণে আমাদের মুখে যে ব্রণ, র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি হয়, অ্যালোভেরা সেসব থেকে আমাদের পরিত্রাণ দেয়। অ্যালোভেরার অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যের কারণে ব্রণ, র‍্যাশসহ ত্বকের অনেক সমস্যা সমাধানে ভালো কাজ করে। এ ছাড়া অ্যালোভেরা ত্বকের লাল ভাব এবং ফোলা ভাব কমানোর পাশাপাশি ত্বকের হালকা দাগগুলোও নিরাময় করে।
দেহকে সতেজ রাখতে
আপনি যখন বাইরের কাঠফাটা রোদ থেকে বাসায় ফিরে এক গ্লাস অ্যালোভেরার জুস খাবেন, সঙ্গে সঙ্গে অনেক রিফ্রেশ অনুভব করবেন। এ ক্ষেত্রে অ্যালোভেরার সঙ্গে চিনি, লবণ ও লেবুর রস বা অন্য কোনো ফলের রস দিয়ে শরবত বানিয়ে নিতে হবে।
টক্সিন রিমুভ করতে
সঠিক নিয়মে অ্যালোভেরার জুস খেলে গরমজনিত বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। যেমন– পেট খারাপ কম হয়, শরীরে খোসপাঁচড়া কম হয়, মাথায় খুশকি কম হয়, হজমশক্তি বাড়ে। অ্যালোভেরার জুস খেলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায় এবং শরীরকে রাখে সুস্থ-সবল। এটির ব্যবহারবিধিও তেমন কঠিন নয়। অ্যালোভেরার পাতার জেল বের করে খেতে হবে বা কাটা জায়গা, খোসপাঁচড়া ইত্যাদির ওপর প্রলেপ লাগাতে হবে।
অ্যালোভেরা কীভাবে ব্যবহার করবেন
আপনি যেভাবে ইচ্ছা অ্যালোভেরা খেতে পারেন এবং ত্বকে লাগাতে পারেন। একজন সুস্থ ব্যক্তির জন্য এক থেকে দেড় চামচ অ্যালোভেরার রস দিনে দু’বার যথেষ্ট।
যেভাবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করতে পারবেন
টোনার, ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন হিসেবে মুখে স্প্রে করে।
চুলে স্প্রে করে।
অ্যালোভেরার জেল সরাসরি খেয়ে বা লাগিয়ে;
ফেসওয়াশ এবং ফেসপ্যাক হিসেবে।
দাঁতের মাড়ি সুস্থ রাখতে অ্যালোভেরার রস দিয়ে কুলি করে।
অন্যান্য রিফ্রেশিং এবং গ্রীষ্মকালীন পানীয় বানিয়ে; যেমন– মকটেল, মার্গারিটা, শরবত, স্মুদি, অ্যালোভেরার মিল্ক শেক ইত্যাদি।
সতর্কতা
অনেকের অ্যালোভেরার ব্যবহারে ত্বকের চুলকানি বেড়ে যেতে পারে, সে ক্ষেত্রে প্রথমবার অ্যালোভেরা লাগানোর আগে হাতের ত্বকে মেখে দেখে নিতে হবে ত্বকে চুলকানি হয় কিনা। v
মডেল: মার্শিয়া; ছবি: আর্কাইভ

আরও পড়ুন

×