'ভারতকে ভয় পাইয়ে দিতে চাই'

ছবি: বাফুফে
.,.
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০১৯ | ০১:১১
সেই চেনা হাসিমুখ। কথা বলার আগ্রহ দেখাতেই বলে উঠলেন মাত্র তিন মিনিট। কিন্তু সল্টলেকের একটি হোটেলের লবিতে বসা বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে অনর্গল কথা বলতেই থাকলেন। ৩৪ বছর পর কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ নিয়ে রোমাঞ্চিত ব্রিটিশ এ কোচও। ১০ অক্টোবর ঢাকায় কাতারের বিপক্ষে ফুটবলারদের লড়াকু পারফরম্যান্সেই স্বপ্ন দেখছেন জেমি। ভারতের বিপক্ষে আগামীকালের ম্যাচ নিয়ে সমকালের সঙ্গে নিজের প্রত্যাশার কথা বলেছেন বাংলাদেশ কোচ। কলকাতা থেকে সাখাওয়াত হোসেন জয়
প্রশ্ন :বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে ভারতের নাম আসার পরই আপনি এই ম্যাচকে টার্গেট করেন। অবশেষে সেই ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ।
জেমি ডে :ভারতের বিপক্ষে ভালো একটি ম্যাচ হবে। ছেলেরা প্রতিনিয়ত ভালো করার চেষ্টা করছে। ভারতের মাঠে খেলাটা দারুণ একটি অভিজ্ঞতার বিষয়। আমাদের তরুণ একটি দল। এই দল নিয়ে আমরা ভারতের বিপক্ষে ভালো খেলার চেষ্টা করব। ভারতের মাঠে, তাদের বিপক্ষে জয় পাওয়াটা কঠিন হবে। তবে ভালো কিছু করার চেষ্টা করব। আশা করছি, ছেলেরা ভালো খেলে বোর্ডে কিছু পয়েন্ট যোগ করতে পারবে।
প্রশ্ন :ফুটবলে ভারত অনেক এগিয়ে গেছে। বাস্তবে কী মনে হচ্ছে?
জেমি ডে :বাস্তবতা হলো, ভারত তাদের ঘরের মাঠে খেলবে। তারা ৫০ হাজার দর্শক পেতে যাচ্ছে। তারা বাংলাদেশের সাপোর্ট করবে না। এটাই বাস্তবতা। কাতারের বিপক্ষে আমরা যে খেলা দেখিয়েছি, তেমনটা খেলতে পারলে খুব একটা সমস্যা হবে না। আমরা যদি আমাদের সেরাটা দিয়ে খেলতে পারি তাহলে জয় কোনো সমস্যা না।
প্রশ্ন :পার্সেন্ট হিসাবে ম্যাচটা কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
জেমি ডে :এটা সম্ভবত ৬০-৪০। দর্শকরা বড় একটা ভূমিকা রাখতে পারে এক্ষেত্রে। ফুটবলে একটি নির্দিষ্ট দিনে যে কোনো কিছু হতে পারে। তার পরও আসলে এটা নির্ভর করবে আমরা কেমন খেলি, কেমন পারফরম্যান্স করি, সেটার ওপর। ভারত এখানে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। তাদেরও পয়েন্ট প্রয়োজন। তারাও জিততে চাইবে ম্যাচটি। পরের রাউন্ডে যেতে চাইবে। ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগিয়ে একটা জয় পেলে তাদের জন্য সেটা দারুণ কিছু হবে। আমরাও চাইব পয়েন্ট পেতে।
প্রশ্ন :কাতারকে রুখে দিয়েছে ভারত, আমরা আবার কাতারের কাছে হেরেছি। সবকিছু মিলিয়ে জয়ের সম্ভাবনা কেমন?
জেমি ডে :ফুটবলে একেকটা ম্যাচ মানে একেকটা জয়ের সুযোগ। যদিও ভারতের বিপক্ষে জেতাটা কঠিন হবে। কিন্তু আমরা প্রতিটি ম্যাচেই মাঠে নামি জেতার জন্য। যদি আমরা সেরাটা দিতে পারি, অবশ্যই ভারতের বিপক্ষে জেতা সম্ভব।
প্রশ্ন :৩৪ বছর পর যুবভারতীয় ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। এই ম্যাচ নিয়ে উত্তাপ কেমন ছড়াবে?
জেমি ডে :বাংলাদেশ থেকে ভারত মাত্র ৪০ মিনিটের বিমানযাত্রার দূরত্বে। এখানকার যে তাপমাত্রা, বাংলাদেশেও প্রায় তেমন। এরকম তাপমাত্রার সঙ্গে আমরা অভ্যস্ত। খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা না আমাদের। তবে ফুটবল মাঠে এই ম্যাচ উত্তাপ ছড়াবে। দুটি দলই সেরা খেলাটা খেলতে চাইবে। দুটি দলই জিততে চাইবে। সবকিছু সামাল দিয়ে আমরা কেমন পারফরম্যান্স করতে পারি, সেটার ওপর নির্ভর করবে উত্তাপের বিষয়টি।
প্রশ্ন :দর্শক, কলকাতার মানুষের আগ্রহ, বাংলাদেশ-ভারত ফুটবল লড়াই। পরিবেশটা কেমন হবে?
জেমি ডে :দারুণ একটি আবহ তৈরি হবে। পরিবেশটা দারুণ হবে। এমন পরিবেশে আমি প্রত্যাশা করব, আমাদের ছেলেরা ভালো খেলবে। ভারতের দর্শকদের মন জয় করবে। যদিও ভারত র্যাংকিংয়ে ও পারফরম্যান্সে আমাদের চেয়ে ওপরে। ৮০ হাজার দর্শকের সামনে তাদের বিপক্ষে খেলাটা কঠিন হবে। দর্শকরা তাদের জন্য দারুণ অনুপ্রেরণা হতে পারে। এটা তাদের জন্য বিরাট সুবিধা হয়ে দেখা দিতে পারে। যদি আমরা ভারতকে ভয় পাইয়ে দিতে পারি, তাদের বিপক্ষে ভালো খেলতে পারি, ম্যাচের গল্পটা অন্যরকমও হতে পারে।
প্রশ্ন :১৫ অক্টোবর যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে বাংলাদেশ কি সুবিধা পাবে?
জেমি ডে :এখানকার পিচ বেশ ভালো। বৃষ্টি হলে মাঠ কর্দমাক্ত হয়ে যেতে পারে। আর কর্দমাক্ত মাঠে ভালো খেলা সম্ভব হয় না। তবে বৃষ্টি হলেও আমি মনে করি, এই মাঠে পানি জমবে না। আর সুবিধার কথা যেটা বলছেন, সেটা স্বাগতিকরাই পাবে।
প্রশ্ন :ভারতীয় দলের কাকে বাংলাদেশের জন্য প্রধান হুমকি মনে করছেন?
জেমি ডে :অবশ্যই সেটা সুনিল ছেত্রি। সে দারুণ একজন ফিনিশার। তার খুব ভালো রেকর্ড রয়েছে। দারুণ মুভমেন্ট তার। সে যে কোনো চান্স থেকে গোল করতে পারে। তাকে নজরে রেখে তার সম্ভাবনা কমাতে হবে। তাকে থামাতে হলে আমাদের ডিফেন্ডারদের কষ্ট করতে হবে। আমি মনে করি, ছেত্রিকে থামাতে পারব।
- বিষয় :
- খেলা
- ফুটবল
- বাংলাদেশ-ভারত