ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

বিশ্বকাপে সেমি-অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি, কীভাবে কাজ করবে?

বিশ্বকাপে সেমি-অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি, কীভাবে কাজ করবে?

ছবি: ইএসপিএন

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২২ | ০৪:৩১ | আপডেট: ০৪ আগস্ট ২০২২ | ০৪:৩২

কাতার বিশ্বকাপে দেখা যাবে সেমি-অটোমেডেট অফসাইড প্রযুক্তি (এসএওটি)। ফিফার তিন বছরের পরীক্ষার ফল দেখা যাবে বৈশ্বিক এই আসরে। অবশ্য কার্যকারিতা দেখে নেওয়ার জন্য রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ইনট্রাক্ট ফ্রাঙ্কফুটের সুপার কাপের ম্যাচে ব্যবহার করা হবে এই প্রযুক্তি। 

উয়েফা জানিয়েছে, আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বেও সেমিঅটো অফসাইড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। প্রশ্ন হচ্ছে সেমি-অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করবে। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) থাকবে কিনা। উত্তর হলো, ভিএআর থাকবে। তবে রেফারিকে সময় নষ্ট করে মেশিনের কাছে গিয়ে চেক করা লাগবে না। 

ভিএআর কেন বাতিল হচ্ছে: ভিএআর বাতিল হচ্ছে মূলত সময় বেশি লাগার জন্য। গত মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগে প্রতিটি ভিএআর চেক করতে গড়ে ৭০ সেকেন্ড সময় লেগেছে। নতুন প্রযুক্তিতে সেটা গড়ে ২৫ সেকেন্ডে সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। ফুটবল অন্য ক্রীড়া আয়োজনের মতো নয়। গতিই এর প্রাণ। সেজন্য ভিএআর চেক করতে গিয়ে যাতে ফুটবল গতিহারা না হয়। সেজন্য ফিফার এই প্রযুক্তির উদ্ভাবন। 

সেমি-অটোমেটেড অফসাইড প্রযুক্তি কি?: ভিএআর’কে আরও দ্রুত গতির করার প্রযুক্তি বলা চলে। এটাকে ভিডিও ম্যাচ রেফারিও বলা যায়। এর মাধ্যমে ভিডিও অপারেশন রুম অফসাইড হলে অটোমেটিক একটি সিগনাল পাবে। প্রযুক্তি অটোমেটিক অফসাইড লাইন এঁকে দেবে। এমনকি ফাউল, অফ সাইড বা হ্যান্ডবলের ক্ষেত্রে ‘কিক স্পট’ চিহ্নিত করে দেওয়া হবে। 

কীভাবে কাজ করবে?”: এখন ভিএআর চেক করা হয় সম্প্রচার স্বত্ত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠানের ক্যামেরার মাধ্যমে। সেমিঅটো অফসাইড প্রযুক্তির জন্য স্টেডিয়ামে বেসপোক ক্যামেরা বসানো হবে। যে ক্যামেরা মাঠে থাকা ২২ খেলোয়াড়ের একদম সঠিক অবস্থান জানান দেবে। এমনকি তাদের পা, হাতের আঙুল, মাথার অবস্থান সম্পর্কে নিখুঁত তথ্য দেবে। এছাড়া কাতার বিশ্বকাপের অফিসিয়াল বল ‘আল রিহলা’তে থাকবে সেন্সর। যা প্রতি সেকেন্ডে ৫০০ সেন্সর পাঠাবে। যার মাধ্যমে বলে পাস দেওয়ার সময় খেলোয়াড় অফসাইড কিনা তার সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। 

থ্রি ডি এনিমেশনে দেখানো হবে অফসাইড। ছবি: ইএসপিএন

বেনিফিট অব ডাউট থাকবে না: ভিএআরে বেনিফিট অব ডাউট থাকত। অর্থাৎ বল পাস দেওয়ার সময় অফসাইড খেলোয়াড়ের অবস্থান নির্ধারণ করতে কিছু অনিশ্চয়তা থাকতো। এখানে সেটা থাকবে না। এটা গোল লাইন প্রযুক্তির মতো চূড়ান্ত ফল দেবে। গোল লাইনে যেমন এক সেন্টিমিটার লাইনের বাইরে নাকি ভেতরে তা নিশ্চিত করা যায়। একটা থ্রি ডি ছায়া ফেলা হয়। অফসাইডের ক্ষেত্রেও তেমনি ফুটবলার পা, হাতের আগুল, মাথা যাই লাইনের বাইরে যাক না কেন তা ধরা পড়বে। 

দর্শক অফসাইড বুঝবে কীভাবে?: এক্ষেত্রে ভিএআগের মতোই বিষয় থাকবে। গোল লাইনের মতো এনিমেশন করে ফুটবলারের অবস্থান, শট নেওয়ার সময় ও লাইন দেখানো হবে। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় অ্যাকশন রিপ্লে করা হবে না। বরং রেফারিকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার পরে দেখানো হবে। 

সহকারী রেফারি কি থাকবে, সব অফসাইড ধরা হবে?: পূর্বের মতোই সহকারী রেফারি বা লাইন্স ম্যান থাকবেন। সেমি-অটো প্রযুক্তি ভিএআর রুমকে প্রতিটি অফসাইডের সিগনাল দেবে। কিন্তু গোল, পেনাল্টি বা কার্ডজনিত ব্যাপার কিংবা রেফারি ম্যাচের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত মনে না করলে ভিডিও রুম রেফারিকে জানাবে না। দৃশ্যমান অফসাইডের ক্ষেত্রে রেফারি ফ্লাগ উঠাবেন এবং সেক্ষেত্রে ভিডিও রুমের সহায়তা নেওয়া হবে না।

অফসাইড কি পুরোপুরি অটোমেটিক করা সম্ভব?: ফিফার কর্মকর্তা আর্সেন ওয়েঙ্গারের চাওয়া, প্রত্যেকটি অফসাইডের সিদ্ধান্ত অটোমেটিক হোক। অর্থাৎ প্রযুক্তির সাহায্যে লাইন্স ম্যানকে ভিএআর রুম প্রতিটি অফসাইডের অ্যালার্ট দেবে এবং অফসাইড ধরা হবে। কিন্তু প্রযুক্তি তো ভুলের বাইরে নয়! প্রযুক্তি একটা সেট করা নিয়মে চলে। আইনের মধ্যের ‘কিন্তু’ বোঝে না। বিবেচনা বোঝে না। যেমন- কোন খেলোয়াড় লাইনের বাইরে থাকতে পারেন। কিন্তু বল ধরার ক্ষেত্রে বা গোল করায় তার অংশগ্রহণ ছিল না। নিয়ম অনুযায়ী, যা অফসাইড না। প্রযুক্তি তা বুঝবে না। বরং খেলোয়াড় লাইনের বাইরে গেলেই সিগনাল দেবে। যেটা গতির খেলাকে বিরক্তিকর করে তুলবে।

আরও পড়ুন

×