রিয়ালের ১৫ নাকি ডর্টমুন্ড রূপকথা

ছবি- সংগৃহীত
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৪ | ১৩:২২
মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই ঐতিহাসিক ওয়েম্বলিতে ফাইনাল খেলতে নামবেন, কিন্তু বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের ইংলিশ ফরোয়ার্ড জ্যাডন সানচোর এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না বিষয়টি। অবিশ্বাস্য লাগারই কথা, দুঃসময়ের পাহাড় ডিঙিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে আসাটাই তো ডর্টমুন্ডের জন্য রূপকথা। কল্পকাহিনি মনে হওয়া সেই গল্পের শেষ অঙ্কে তারকাখচিত রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে অগ্নিপরীক্ষায় জার্মান ক্লাবটি। স্প্যানিশ জায়ান্টরা আজ মাঠে নামছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ১৫তম শিরোপার লক্ষ্যে। ডর্টমুন্ড একটি মাত্র চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল ১৯৯৭ সালে রূপকথার মতো চমক দিয়ে। এবারও তেমন কিছুই প্রত্যাশা করছেন জার্মান ক্লাবটির সমর্থকরা।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শিরোপা জয়ে রিয়ালের ধারেকাছেও নেই কোনো ক্লাব। ইউরোপসেরাদের এই টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়টা অনেকটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে রিয়ালের। তাই আজ ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ফাইনালে রিয়াল ফেভারিট। কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা কোয়ার্টার ফাইনালে দুর্দান্ত লড়াই করে টাইব্রেকারে চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটিকে বিদায় করে। এর পর সেমিতেও বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে স্মরণীয় এক প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। এরই মধ্যে লা লিগা শিরোপাও জয় করেছে তারা।
স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা টগবগে আত্মবিশ্বাস নিয়ে লন্ডনে এসেছে ফাইনাল খেলতে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ১৫তম শিরোপা জিতে তারা দারুণ একটি মৌসুমের ইতি টানতে চায়। এ মৌসুমে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়াল ৫৪ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ২টি হেরেছে। লা লিগা জিতেছে তারা ১০ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে। স্প্যানিশ সুপার কাপ শিরোপা জিতেছে তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সাকে ৪-১ গোলে গুঁড়িয়ে দিয়ে। রিয়ালের এসব জয় করার মানসিকতা ফুটে ওঠে ১২ মাস আগে ডর্টমুন্ড থেকে যোগ দেওয়া জুড বেলিংহামের কথায়, ‘আমি এখানে এসেছি, কারণ আমি জিততে চাই। অবশ্যই এই শিরোপা (চ্যাম্পিয়ন্স লিগ) প্রত্যাশা করছি। এ কথায় কিছুটা লোভী মনে হতে পারে। তবে আপনার পাশে যদি এত মহান খেলোয়াড় থাকে, তাহলে আত্মবিশ্বাস তো থাকবেই।’
বার্মিংহাম থেকে কৈশোর অবস্থায় বেলিংহামকে কিনে নিয়েছিল ডর্টমুন্ড। জার্মান এ ক্লাবটিতে ইংলিশ এ মিডফিল্ডারের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে আকৃষ্ট হয়ে গত বছর ১০০ মিলিয়ন ইউরোতে তাঁকে কিনে নেয় রিয়াল। বেলিংহামকে ছাড়া ডর্টমুন্ডের অবস্থা বেশ খারাপ। বুন্দেসলিগায় এবার তারা পঞ্চম হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন বায়ার লেভারকুজেন থেকে ২৭ পয়েন্ট পিছিয়ে তারা। তবে ঘরোয়া ফুটবলে ভালো করতে না পারলেও ডর্টমুন্ডের ইতিহাসে তৃতীয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলে তারা। অথচ গ্রুপ পর্ব টপকানোই তাদের জন্য অসম্ভব মনে করেছিলেন অনেকে। পিএসজি, এসি মিলান ও নিউক্যাসলের ‘গ্রুপ অব ডেথে’ ছিল তারা।
নকআউটে রক্ষণভাগের দৃঢ়তায় ভিএসভি আইন্দহোভেন ও অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদকে বিদায় করে এগিয়ে যায় তারা। এর পর পিএসজিকে সেমির উভয় লেগে হারিয়ে ফাইনালে আসে ডর্টমুন্ড। তাই তো নিজের সাবেক ক্লাবকে প্রশংসায় ভাসাতে ভোলেননি বেলিংহাম, ‘অসাধারণ ফুটবল খেলেছে তারা। কিছু ম্যাচে তারা যে মানসিক দৃঢ়তা দেখিয়েছে, তা ছিল অনন্য। তাদের বিপক্ষে ফাইনাল অবশ্যই ভীষণ কঠিন হবে।’
যদি আজ ডর্টমুন্ড জেতে, তাহলে ১৯৮৩ সালের পর কোনো ইউরোপীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে প্রথম হারবে রিয়াল। ডর্টমুন্ড কোচ সে অসাধ্য সাধনের ইঙ্গিতই দিয়েছেন, ‘কেবল ফাইনালে আসাটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল না, শিরোপা জেতার জন্যই আমরা এখানে এসেছি।’ আজকের ফাইনাল দিয়ে দু’দলের বেশ কয়েকজন ক্লাবের পক্ষে শেষ ম্যাচ খেলছেন। এ তালিকায় রয়েছেন রিয়ালের টনি ক্রুস, দানি কারভাহাল। ডর্টমুন্ডের ম্যাট হামেলস ও মার্কো রেউস।
- বিষয় :
- চ্যাম্পিয়ন্স লিগ-২০২৪