টি২০ বিশ্বকাপ
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনালের সাতসতেরো

ছবি- সংগৃহীত
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪ | ২০:৪১ | আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪ | ২১:০৯
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ থেকে কেবল এক পা দুরত্বে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। দুই ফাইনালিস্টের দেখাই পেয়েছে ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণের এই মহাযজ্ঞ। ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে প্রোটিয়াদের এটি প্রথম ফাইনাল। অন্যদিকে দ্বিতীয় দল হিসেবে ফাইনালে উঠেছে ভারত। রঙিন পোশাকে আইসিসির ইভেন্টে টানা দ্বিতীয়বার ফাইনালে ভারত। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এবার টি-টোয়েন্টির ফাইনাল। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা ভারতের সামনে সুযোগ ২০১৩ সালের পর আইসিসির কোনো শিরোপা জেতার। ভারত কি পারবে শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে? নাকি নতুন চাম্পিয়ন হিসেবে দেখা যাবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
আইসিসির ফাইনাল অথবা নকআউটে কতবার
এবারই প্রথম পুরুষদের আইসিসি টুর্নামেন্টের ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগে ২০১৪ টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে একে অন্যের মুখোমুখি হয়ে প্রোটিয়াদের হারিয়েছিল ভারত।
এই বিশ্বকাপের সেরা দু’দলই কি ফাইনালে?
ফাইনালের দুই প্রতিপক্ষ ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা। ফাইনালে আসার আগে কোনো দলকেই তোয়াক্কা করেনি তারা। চলমান বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত দু’দলই অপরাজিত। গ্রুপ পর্ব, সুপার এইট, সেমিফাইনাল– তিন স্তরে কোনো ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত হারেনি। তাই ফাইনালটা সমানে সমান হতে চলেছে। যদিও ভারত একটি ম্যাচে বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে। গ্রুপ পর্ব থেকে ফাইনাল পর্যন্ত ফল হওয়া সাত ম্যাচের সাতটিতেই তারা জিতেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা গ্রুপ পর্ব থেকে শেষ পর্যন্ত আট ম্যাচেই জিতেছে। যারা শিরোপা জিতবে, তারা হবে টি২০ বিশ্বকাপে অপরাজিত থাকা প্রথম দল।
কে কীভাবে ফাইনালে
দু’দল দুই গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সুপার এইটে ওঠে। ভারতের গ্রুপটা তুলনামূলক সহজ ছিল। এই গ্রুপে ছিল পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও আয়ারল্যান্ড। এর মধ্যে তাদের সামনে কেবল বাধা হতে পারত পাকিস্তান। কিন্তু সাবেক চ্যাম্পিয়নরা ভারতের বিপক্ষে পেরে ওঠেনি। আর যুক্তরাষ্ট্র ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয় পায় ভারত। কানাডার বিপক্ষে রোহিত শর্মাদের ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়। সুপার এইটে রোহিত শর্মারা হারিয়েছেন আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়াকে। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড অসহায় আত্মসমর্পণ করে।
সুপার এইটে যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর আগে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বেশির ভাগ ম্যাচই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে জিতেছে এইডেন মার্করামের দল। কিন্তু ভাগ্যদেবী তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বারবার। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ রান এবং নেপালের বিপক্ষে ১ রানে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কাকে ৬ ও নেদারল্যান্ডসকে ৪ উইকেটে হারিয়ে প্রোটিয়ারা ওঠে সুপার এইটে। সেমিতে আফগানদের ৯ উইকেটে উড়িয়ে প্রথম ফাইনাল নিশ্চিত করে।
এবারই সুযোগ প্রোটিয়াদের
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য এটি ঐতিহাসিক উপলক্ষ। কারণ ওয়ানডে, টি২০ মিলিয়ে প্রোটিয়াদের এটি প্রথম ফাইনাল। ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়া পুরুষদের আইসিসি টুর্নামেন্টের কোনো ফাইনালেই ওঠেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগে পাঁচটি ওয়ানডে (১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭, ২০১৫, ২০২৩) ও দুই টি২০ (২০০৯, ২০১৪) বিশ্বকাপের সেমিতে খেলেছে তারা। তাই এবারই শিরোপা জেতার উপযুক্ত সময় প্রোটিয়াদের।
ভারতের জন্য এ শিরোপা কেন গুরুত্বপূর্ণ
২০০৭ সালে প্রথম টি২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতলেও ২০১১ সালের পর থেকেই শিরোপাখরা চলছে ভারতের। তাদের শেষ আইসিসির শিরোপা ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এর পর থেকে প্রতিবারই কাছে গিয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে তাদের। ২০১৪ সালে টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে এবং ২০১৬ ও ২০২২ সেমিফাইনাল হেরেছে তারা। ২০১৫ ও ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও সেমি থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। গত বছর ঘরের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে অপরাজিত হয়ে ফাইনালে উঠলেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে শিরোপা হাতছাড়া হয় রোহিত শর্মাদের। তাই এবার শিরোপা ছাড়া দ্বিতীয়টি ভাবার সুযোগ নেই ভারতের।
পিচ ও কন্ডিশন যেমন হতে পারে
বার্বাডোজে হবে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনাল ম্যাচ। ভেন্যুতে এটি হবে টুর্নামেন্টের নবম ম্যাচ। এখানের প্রথম ম্যাচটিই হয়েছিল সুপার ওভারে, এর পর থেকে এখানে ক্লোজ কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। এই মাঠে চার ম্যাচের তিনটিই জিতেছে আগে ব্যাট করা দল। বার্বাডোজের শেষ দুই ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে অল্পতেই আটকে ম্যাচ জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড। দক্ষিণ আফ্রিকা এ মাঠে এখনও খেলেনি, তবে ভারত এখানে একটি ম্যাচ খেলেছে, যেখানে আফগানদের ৪৭ রানে হারিয়েছে।
বাতাস কি বড় ফ্যাক্টর হতে যাচ্ছে?
পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৩৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যা ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে। কিন্তু এটা ম্যাচে অতটা প্রভাব নাও ফেলতে পারে।
বৃষ্টির সম্ভাবনা কতটুকু?
অ্যাকুওয়েদার অনুযায়ী, খেলার সময় আকাশ মেঘলা থাকবে, বৃষ্টি হতে পারে। বার্বাডোজে খেলা শুরু স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে। কিন্তু রাত ৪টা থেকে ৯টার মধ্যে বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রায় ৫০ শতাংশ, যেটি সকাল ১০টা (টসের সময়) ও বেলা ১টার মধ্যে নেমে আসবে ৩০ শতাংশে। খেলাটি শেষ করার জন্য ১৯০ মিনিট অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। বিজয়ী ঘোষণার জন্য উভয় দলকে কমপক্ষে ১০ ওভার ব্যাট করতে হবে।
রিজার্ভ ডে কি আছে?
হ্যাঁ, ফাইনালের একটি রিজার্ভ ডে আছে। অতিরিক্ত সময়েও কমপক্ষে ১০ ওভার করে ম্যাচ না হলে ম্যাচটি রোববারে যাবে। তবে শনিবার যেখানে শেষ হয়েছিল, সেখান থেকে শুরু হবে। রিজার্ভ ডে-তে ম্যাচ শুরুর নির্ধারিত সময় স্থানীয় সময় সকাল ১০.৩০ মিনিট।
- বিষয় :
- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
- ভারত
- ইংল্যান্ড
- ফাইনাল