ইতিহাস গড়ার ম্যাচ ইয়ামালের

ছবি- গোল
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪ | ১৪:১৪
আজ থেকে ৬৬ বছর আগে সুইডেনের মাটিতে আবির্ভাব হয়েছিল ফুটবলের এক মহানায়কের। ১৯৫৮ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিশ্বকাপ জিতে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন প্রয়াত ফুটবল-সম্রাট পেলে। কাকতালীয়ভাবে লামিনে ইয়ামালের বয়সও ১৭। জার্মানিতে কি আজ ফুটবল ইতিহাসের নতুন আরেক মহানায়কের দেখা মিলবে?
গতকাল ছিল ইয়ামালের জন্মদিন। তবে বিশেষ দিনটি আড়ম্বরে উদযাপন করেননি তিনি। ইউরো ফাইনালের প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত সময় পার করেছেন। দানিয়ুব নদীর উৎসস্থলের সন্নিকটে ছোট্ট জার্মান শহর দোনাউস্পেনজেনে অনুশীলন করে ফাইনালের জন্য নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছেন ইয়ামাল। আজ শিরোপা জিততে পারলে তাঁর জন্মদিনের আনন্দ নিশ্চিতভাবেই দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
অবশ্য ফুটবলপ্রেমীদের অপার আনন্দ তিনি দিয়েছেন গত মঙ্গলবারই, ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিতে বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক গোল করে। এবারের ইউরোতে নিঃসন্দেহে এটাই সেরা জাদুকরী মুহূর্ত। আর এই জাদু দেখালেন কিনা এক কিশোর! যিনি কিনা জার্মানির আইন অনুযায়ী অ্যালকোহল কিনতে পারবেন না, গাড়ি চালাতে পারবেন না, রাত ১১টার পর কোথাও কাজ করলে জরিমানা গুনতে হবে; এমনকি একা দূরে কোথাও ছুটি কাটাতে যেতে পারবেন না, অভিভাবক ছাড়া হোটেলে অবস্থান করতে পারবেন না; পারবেন কেবল গোল করতে!
স্বপ্নের মতো সেই গোলের পর উদযাপন করতে ইয়ামাল গিয়েছিলেন সাইডলাইনে। কেবল তখন তাঁর চোখমুখ দেখে মনে হয়েছে, এই কিশোর বয়সেও ভীষণ পরিণত তিনি। গোল করে আঙুলের ইশারায় একটি সংখ্যা ফুটিয়ে তুলেছিলেন তিনি। সংখ্যাটি হলো ৩০৪। ইয়ামাল স্পেনের কাতালুনিয়ার যে হতদরিদ্র রোকাফোন্দা অঞ্চল থেকে উঠে এসেছেন, সেখানকার পোস্টাল কোড। স্পেনের এই অঞ্চলের মানুষ নাকি নিজ জনপদের পরিচয় দিতে কুণ্ঠাবোধ করেন। সেই সংকীর্ণতা ঝেড়ে ফেলে এই কিশোর বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন, কোথা থেকে উঠে এসেছেন তিনি। মরক্কান পিতা মুনির নাসরাউই ও ইকুয়েটোরিয়াল গিনির মায়ের এ সন্তান আজ স্বপ্ন দেখাচ্ছেন স্পেনকেও।
জাভি-ইনিয়েস্তাদের বিদায়ের পর স্পেনের ‘টিকিটাকা’ হয়ে উঠেছিল বোরিং এক কৌশল। সেই পরিচিত পজেশন নির্ভর ফুটবল বাদ দিয়ে গতি ও প্রেসিংয়ে প্রতিপক্ষকে রীতিমতো ভড়কে দিয়েছেন স্প্যানিশ কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে। তাঁর এই কৌশলের মূল অস্ত্র হলেন লামিনে ইয়ামাল ও নিকো উইলিয়ামস। দুই তরুণের মধ্যে আবার ইয়ামাল হলেন ‘স্পেশাল ওয়ান’। উইং ধরে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলার পাশাপাশি নিখুঁত পাসিং, দুরন্ত শুটিং; সর্বোচ্চ তাঁর মস্তিষ্ক ভীষণ পরিণত। উদ্ভাবনী এক পাসে চোখের পলকে ম্যাচের চেহারা পাল্টে দিতে জুড়ি মেলা ভার তাঁর। বাঁ-পায়ের এ ফুটবলার সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবেও খেলতে পারেন। এই কিশোর বয়সে এত দক্ষতা, এত পরিণতবোধ– সত্যিই বিস্ময়!
- বিষয় :
- ইউরো-২০২৪
- লামিন ইয়ামাল
- স্পেন
- ইংল্যান্ড