চট্টগ্রাম যেন প্রোটিয়াদের বাড়ি!

ছবি- ক্রিকইনফো
সুমন মেহেদী, চট্টগ্রাম থেকে
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪ | ২৩:৩১
চট্টগ্রাম মানেই যেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং কর্তৃত্ব। হোক সেটা ২০০৩ সালের গ্রায়েম স্মিথ-জ্যাক রুডলফদের দল। ২০০৮ সালের স্মিথ-নেইল ম্যাকিঞ্জির জুটি। কিংবা এবারের ডি জর্জি-ট্রিস্টান স্টাবস। আগের দুই সফরের মতো এবারও চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দু’দিন ব্যাট হাতে রাজত্ব করেছেন প্রোটিয়া ব্যাটাররা। ওপেনার টনি ডি জর্জি সেঞ্চুরি করেছেন। টপ অর্ডারের ট্রিস্টান স্টাবস ও লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটার ওয়ান মুল্ডার শতকের দেখা পেয়েছেন। ২০০৩ সালে প্রথম ইনিংসে ২ উইকেটে ৪৭০ রান করেই ইনিংস ব্যবধানে জিতেছিল তারা। ২০০৮ সালের সফরে জোড়া ডাবল সেঞ্চুরিতে ৫৮৩ রান করে ইনিংস ছেড়েছিল। এবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ৬ উইকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৭৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
বন্দরনগরীতে এসে এভাবে রানের ফোয়ারা ছোটানোর কারণ জানতে চাইলে ১৭৭ রানের ইনিংস খেলা টনি ডি জর্জি জানান, এখানকার উইকেটের সঙ্গে তারা দ্রুত মানিয়ে নিতে পারেন। জানান, ডাবল সেঞ্চুরির সুযোগ মিস করায় কিছুটা হতাশও, ‘সম্ভবত এখানকার উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ভালো যায়। উইকেট খুব ভালো ছিল, খেলার মতো ছিল। আমাদের মতো ব্যাটারদের সঙ্গে মানিয়ে যায় এমন ছিল। এটা এমন উইকেট, যেখানে আপনি একবার দাঁড়িয়ে গেলে কর্তৃত্ব করতে পারবেন। কারণ, এখানকার কন্ডিশন খুব একটা বদলায় না। অবশ্যই ২০০ করতে না পারায় হতাশ। প্রতিদিন আপনি নিজেকে এমন অবস্থানে নিতে পারবেন না।’
প্রোটিয়াদের রান পাহাড়ের চাপায় শেষ বেলায় ব্যাটিংয়ে নেমে পিষ্ট হয়েছে বাংলাদেশ। মাত্র ৩৪ রান তুলতেই হারিয়েছে চার ব্যাটারকে। দু’দিন পাঁচ সেশনের বেশি বোলিং-ফিল্ডিং করায় বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা ক্লান্ত থাকতে পারেন বলে মনে করেন জর্জি, ‘বাংলাদেশ ক্লান্ত হয়ে থাকতে পারে। আর ক্লান্ত মানসিকতায় যা কিছু ঘটতে পারে। ওপেনার হিসেবে আমি অন্তত এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করতে চাইব না। দলে কাগিসু রাবাদার মতো বোলার থাকলে সবকিছু ঘটতে পারে। আমরা ঠিক সময় ঠিক জায়গায় ছিলাম এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি। দিনের খেলা আরও কিছুটা বাকি ছিল। আমরা চাচ্ছিলাম, বাংলাদেশ আরও কিছুক্ষণ ব্যাটিং করুক।’
প্রোটিয়াদের কর্তৃত্বের বিপরীতে বোলিং-ফিল্ডিংয়ের পর ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। দলের স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদ বিশ্বাস করেন, এখান থেকেও ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। পাকিস্তান সিরিজকেই সেই বিশ্বাসের কারণ বলছেন তিনি। তবে দলের প্রসেসে, ম্যাচ সচেতনায় কিছু ঘাটতি থাকতে পারে বলেও মন্তব্য করেন পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তি, ‘পরিস্থিতি বুঝে খেলতে পারলে বিশ্বাস করি, এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। জীবনটাই তো বিশ্বাস। আমার মনে হয় না, এটা আত্মবিশ্বাসের অভাব। আমাদের খেলার ধরনে কিছু সমস্যা থাকতে পারে। লক্ষ্য অর্জন করতে হলে আপনাকে খেলার নিজস্ব ধরন অনুসরণ করতে হবে। সঙ্গে ম্যাচ সচেতনার কথাও আমি বলতে পারি। কোন বল ছেড়ে খেলতে হবে, কীভাবে প্রথম বা শেষ পাঁচটা ওভার দৃঢ়ভাবে খেলতে হবে, মানসিকভাবে এই পরিকল্পনাগুলো দরকার। তারা কখন, কী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তা বোঝা দরকার। এগুলো আস্তে আস্তে হবে। আপনি একটি গাছ কি এক দিনে বড় করতে পারবেন? পারবেন না। আশা করব, এই ছেলেরা একদিন বড় হয়ে উঠবে।’
- বিষয় :
- বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা