অভিজ্ঞতার আলোকে মিশন ২০২৩

ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২১ | ১২:০০ | আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২১ | ০১:২০
মুশফিক ২১৮, তামিম ২০৭, সাকিব ২০৬, মাহমুদুল্লাহ ১৮৮ এবং রুবেল ১০১- এই পাঁচ ক্রিকেটার মিলে খেলেছেন ৯১০টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত আরও অনেক ম্যাচই খেলবেন তারা। আগামী বিশ্বকাপে তাদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার খুব কম দলেই পাওয়া যাবে। স্কোয়াডের বাকিদের অভিজ্ঞতাও কম হবে না।
সৌম্য, লিটন, মুস্তাফিজ, তাসকিন, সাইফউদ্দিন, আল আমিন, মোসাদ্দেকদের নামও ততদিনে উচ্চারিত হবে অভিজ্ঞদের সঙ্গে। বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে এই ১২ জনের। মিঠুন, শফিউল, নাজমুলরাও হয়ে উঠবেন আন্তর্জাতিক মঞ্চের পরিণত ক্রিকেটার। স্কোয়াডে একাধিক তরুণ ক্রিকেটারও জায়গা করে নেবেন আগামী দুই বছরে। সেদিক থেকে দেখলে সঠিক পথেই এগোচ্ছে বাংলাদেশ। কোয়ালিফাই করলে ২০২৩ বিশ্বকাপে টাইগার বাহিনী খেলতে পারবে অভিজ্ঞতার আলোকে।
টাইগাররা বিশ্বকাপে খেলার মিশন শুরু করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজ দিয়ে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মতো একদিনের ক্রিকেট সিরিজটি গণ্য হবে ওডিআই লিগের খেলা হিসেবে। যে সিরিজের নেতৃত্বে থাকবেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। ক্যারিবীয়দের হারিয়ে পূর্ণ পয়েন্ট অর্জনের জন্য ২৪ জনের প্রাথমিক স্কোয়াড থেকে তাকে দেওয়া হবে অভিজ্ঞ এবং তারুণ্যের মিশেলে সেরা একটি দল। বিশ্বকাপের ১০ দল বেছে নিতে আইসিসির নতুন নিয়ম ওডিআই লিগের খেলা। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে ১৩ দলের সঙ্গে বাংলাদেশ খেলবে সুপার লিগে।
যেখান থেকে স্বাগতিক ভারতসহ টেবিলের শীর্ষ আট দল সরাসরি খেলবে পরবর্তী বিশ্বকাপ। সরাসরি বিশ্বকাপ খেলতে স্বাগতিক ভারত বাদে তামিমদের থাকতে হবে পয়েন্ট টেবিলের সেরা সাতে। সাকিব, মুশফিক, মাহমুদুল্লাহ, রুবেলদের সঙ্গে লিটন, মুস্তাফিজদের নিয়ে ২০ জানুয়ারি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তামিমের নেতৃত্বে শুরু হবে টাইগারদের মিশন ভারত বিশ্বকাপ। আগামী দুই বছর সুপার লিগের ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। প্রতিটি সিরিজে ফোকাস থাকবে পয়েন্ট। সুতরাং দল নিয়ে খুব বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ নেই। অভিজ্ঞদের সঙ্গে এক-দু'জন নতুন ক্রিকেটারকে সম্পৃক্ত করে দল গড়া হতে পারে।
যাতে করে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সেরা ক্রিকেট খেলে পয়েন্ট টেবিল সমৃদ্ধ করতে পারে। বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানান, বিশ্বকাপ সুপার লিগ মাথায় রেখে দল দিয়েছেন তারা। তিনি বলেন, 'এই দলে পাঁচজন সিনিয়র ক্রিকেটার রয়েছে। যারা এক দশকের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক খেলছে। সাত-আটজন রয়েছে যারা চার-পাঁচ বছর খেলে ফেলেছে। তরুণদেরও কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে সিনিয়রদের সঙ্গে খেলে। সেদিক থেকে দেখলে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে ভারসাম্য অনেক। বিশ্বকাপ সুপার লিগের সিরিজগুলোতে এই দলের ভালো খেলা উচিত। আর বিশ্বকাপ পর্যন্ত গেলে খুবই ভারসাম্য একটি দল পাব আমরা।'
রুবেলের ওয়ানডে অভিষেক ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে। আল আমিন খেলছেন ২০১৩ সাল থেকে। মিঠুনের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছে তাও সাত বছর হয়ে গেছে। ছয় বছর পেরিয়ে গেছেন সৌম্য, তাসকিন, তাইজুল। লিটন, মুস্তাফিজরও দেখতে দেখতে পাঁচ বছর জাতীয় দলে। সাইফউদ্দিন, নাজমুল, মেহেদী, নাঈম, আফিফদের এখন অভিজ্ঞতা অর্জনের পালা। এই দলের স্রোতে মিশে গেলে হাসান মাহমুদরাও ঠিক জায়গা করে নেবেন। বিসিবি পরিচালক ও দেশের অভিজ্ঞ কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন মনে করেন, এক সময়ে তারুণ্যের ট্যাগ পাওয়া বাংলাদেশ দল এখন অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ, 'বাংলাদেশ এখন অভিজ্ঞ একটি দল। চারজন ক্রিকেটার রয়েছে যারা একযুগ ধরে খেলছে। মুস্তাফিজদেরও ছয়-সাত বছর হয়ে গেলে। আমি মনে করি, পরবর্তী বিশ্বকাপে খুবই অভিজ্ঞ দল হিসেবে খেলতে পারবে বাংলাদেশ।' বলার অপেক্ষা রাখে না, সঠিক নিয়মেই এগোচ্ছে বাংলাদেশ ওয়ানডে দল।
মুশফিকদের ইয়ো ইয়ো টেস্ট
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশে পা রাখবে রোববার, বাংলাদেশ দলের আনুষ্ঠানিক অনুশীলনও শুরু হবে সেদিন থেকে। তার আগে মিরপুরে এসে নিজেদের মতো করে অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। তাদেরই মধ্য থেকে মঙ্গলবার ইয়ো ইয়ো টেস্ট দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিঠুনরা। উইন্ডিজ সিরিজের প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়া সব ক্রিকেটারকে আজ কোয়ারেন্টাইনে নেওয়া হবে। বৃহস্পতি ও শনিবার তাদের করোনা পরীক্ষা করানো হবে। গতকাল অবশ্য সিরিজের সঙ্গে জড়িত সাপোর্ট স্টাফদের পরীক্ষা করিয়েছে বিসিবির মেডিকেল ইউনিট