সাক্ষাৎকার
স্মার্টফোনে মধ্যম বাজেট

শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী
জিয়াউদ্দিন চৌধুরী
প্রকাশ: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৩:৪০ | আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৭:০৩
বাংলাদেশে স্মার্টফোনের দাপুটে উপস্থিতি দৃশ্যমান। তবে বাজেটবান্ধব মডেলকে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলেছেন শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী
বাংলাদেশে ছয় বছর ধরে কাজ করছে বহুজাতিক প্রযুক্তি ব্র্যান্ড শাওমি। এরই মধ্যে স্মার্টফোন ছাড়া কয়েকটি প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে নিজেদের পরিচিত করেছে ব্র্যান্ডটি।
বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে শাওমি যাত্রা শুরু করে ২০১৮ সালের ১৭ জুলাই। বলতে গেলে, ২০১০ সালে সফটওয়্যার ব্যবসার মাধ্যমে কাজ শুরু করে ব্র্যান্ডটি। বাজার চাহিদার বিবেচনায় ব্র্যান্ডটি স্মার্টফোন নির্মাণে দৃষ্টি দেয়।
সুপরিচিত কয়েকটি ব্র্যান্ড তখন বাজার দখলে প্রতিযোগিতা করছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্র্যান্ডটি সারাদেশের সব শ্রেণির মানুষের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
প্রযুক্তিকে সব শ্রেণির মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছে ব্র্যান্ডটি। প্রধান চ্যালেঞ্জ ছিল বাজেট। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে বাজেটের মধ্যেই নিতে কাজ চলেছে। ঠিক এ কারণে মানুষের কাছে ব্র্যান্ডটি দ্রুত পরিচিতি পেয়েছে। স্বীকৃতি এসেছে দেশসেরা মোবাইল ব্র্যান্ডের। এভাবেই বাংলাদেশে ব্র্যান্ডটি নিজেদের এগিয়ে নিয়েছে।
ব্র্যান্ড হিসেবে ভোক্তার চাহিদা, অভ্যাস, প্রয়োজনীয়তা সামনে রেখে কাজ করা হয়। স্মার্টফোনে ভালো স্পেসিফিকেশন, সর্বাধুনিক মান ও যৌক্তিক মূল্য নীতিতে গুরুত্ব দিয়েছি। অন্যদিকে ভোক্তার কাছে পৌঁছানোর সব চ্যালেঞ্জ দূরীকরণে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়। বাংলাদেশে আমাদের কারখানা আছে। ফলে সামর্থ্যের মধ্যে ভালো সেবা নিশ্চিত করতে পেরেছি।
বিশ্বে জনপ্রিয় ও বিক্রি হওয়া স্মার্টফোনের সেরা ১০ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে শাওমি রেডমি ১৩সি মডেল। রেডমি ১৩সি মডেল কিন্তু ব্র্যান্ডটির ফ্ল্যাগশিপ না। তালিকায় থাকা অন্য সব স্মার্টফোনেরই ছিল ফ্ল্যাগশিপ মডেল। চলতি বছর তৃতীয়বার বিশ্বে সেরা ব্র্যান্ডের স্বীকৃতি পেয়েছি আমরা। আন্তর্জাতিক পরিসরে এমন অর্জন আমাদের উৎসাহিত
করে। বাংলাদেশে ব্র্যান্ডটি এগিয়ে চলেছে। ২০২৪ সালে
নোট সিরিজ, এ সিরিজ, সি সিরিজ, নম্বর সিরিজ উন্মোচন করা হয়। যা দেশের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের সেবায় পৌঁছেছে।
২০২৪ সালে বাংলাদেশে ৯০ লাখের মতো হ্যান্ডসেট বিক্রি হয়। ২০২৫ সালেও বাজার এমন থাকবে। সবাই এখন প্রযুক্তির সুবিধা নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়া লাইফস্টাইলে স্মার্টফোন অপরিহার্য। তবে সবার আগে বিবেচনায় থাকে বাজেট। মধ্যবিত্তের বাজেটকে যথার্থ গুরুত্ব দিয়ে হ্যান্ডসেটের মানোন্নয়নে কাজ করছি।
জুলাই-আগস্টে দেশ বড় পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছে। স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতেও সেই পরিবর্তনের ধাক্কা লেগেছে। এমন বৈরী পরিবেশে মানুষ প্রচুর তথ্য বা ইনফরমেশন খুঁজতে থাকে। তখন স্মার্টফোনের মতো সহজে বহনযোগ্য ডিভাইস বেশ কাজে আসে। এ পরিস্থিতিতে বিক্রি কম হয়েছে এমন না; বরং বিক্রির সংখ্যা ২০২৩ সালে যা ছিল, ২০২৪ সালে তেমনই ছিল। ইন্টারনেট সমস্যার কারণে হয়তো কিছুদিন বিড়ম্বনা ছিল। মিসরে যখন এমন পরিস্থিতি হয়, তখন কিন্তু স্মার্টফোনের চাহিদা বাড়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মানুষের কাছে তখন ডিজিটালি যুক্ত থাকাটা খুব প্রয়োজন বলে প্রতীয়মান হয়।
শুধু মোবাইল ফোন নির্মাতা নয় শাওমি, এটি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠান। গ্রাহকের কাছে টেক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া আমাদের লক্ষ্য। আমাদের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম ‘হাইপারওএস’। আগামী বছর হাইপারওএস (২.০) সংস্করণ আসবে, যা ব্র্যান্ডের নতুন হ্যান্ডসেট, ডিভাইস ও যানবাহনকে যুক্ত করবে। মূলত মিডরেঞ্জের স্মার্টফোন নিয়ে বেশি কাজ করছি। মধ্যম বাজেট ক্যাটেগরিতে সেরা হিসেবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করছি। হয়তো প্রতিযোগীরা আমাদের অনুসরণ করে। যদি ৩০ বা ৪০ হাজার টাকা মূল্যের বা এর চেয়ে বেশি দামের সেগমেন্টের কথা বলেন, তাহলে সেখানে আমাদের অবস্থান নেই। আমরা প্রতিযোগিতা করছি না, কাউকে অনুসরণও করছি না। এমন অবস্থায় যখন পুরস্কৃত হয়েছি, তাহলে আমরা মধ্যম বাজেটের মানুষের কাছে পৌঁছেছি, এটি বলাই চলে।
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের হাই-টেক পার্কে আমাদের অ্যাসেম্বল কারখানা সচল। প্রযুক্তি নির্মাণ কারখানায় দক্ষ জনশক্তির মাধ্যমে দেশেই হ্যান্ডসেটের শতভাগ অ্যাসেম্বল করা হয়। দক্ষ জনশক্তি ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে কারখানায় বৈশ্বিক মান নিশ্চিত করা হয়।
- বিষয় :
- প্রযুক্তি
- শাওমি
- শাওমি বাংলাদেশ