ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

নকশিকাঁথায় ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন প্রতিবন্ধী আসমার

নকশিকাঁথায় ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন প্রতিবন্ধী আসমার

নিজের তৈরি নকশিকাঁথা দেখাচ্ছেন আসমা- সমকাল

হরিণাকুণ্ডু (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২২ | ০৩:২১ | আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২২ | ০৩:২১

শারীরিক প্রতিবন্ধী আসমা খাতুন (২৪)। টিউশনি করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে এখন অনার্স শেষ করে মাস্টার্স শেষ বর্ষে পড়ালেখা করছেন। একইসঙ্গে শুরু করেন নকশিকাঁথা সেলাইয়ের কাজ। নকশিকাঁথা সেলাই করে প্রতি মাসে আয় করেন চার হাজার টাকা। ইতোমধ্যে তার তার কাজ নজর কাড়তে শুরু করেছে সৌখিন মানুষদের।

আসমা চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার কায়েতপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে। গত দুই বছর ধরে হরিণাকুণ্ডু শহরের চিথলিয়াপাড়া এলাকায় চাচা আব্দুল ওহাবের ভাড়া বাড়িতে থাকেন তিনি। গতকাল ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে উপজেলা মহিলা বিষয়ক দপ্তরের নারী সমাবেশে নিজের তৈরি নকশিকাঁথা নিয়ে হাজির হন তিনি। 

সমকালকে আসমা জানান, পড়ালেখার পাশাপাশি মহিলা বিষয়ক দপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ২০২১ সাল থেকে নকশিকাঁথার কাজ করছেন তিনি। ইতোমধ্যে ১৫-২০টি কাঁথা তৈরিও করেছে। প্রতিটি কাঁথা তিন থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি হয়। আর এই কাঁথা তৈরিতে ব্যয় হয় এক থেকে দেড় হাজার টাকা। যদিও শারীরিক প্রতিবন্ধীতার কারণে কাঁথা তৈরি করতে একটু দেরি হয় তার। তবুও তার তৈরি অধিকাংশ কাঁথা বিভিন্ন অনুষ্ঠানেই কিনে নেন অতিথি ও দর্শনার্থীরা। বিভিন্ন এলাকা থেকে সৌখিন মানুষও তার নকশিকাঁথা কিনতে আসেন।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মুন্সী ফিরোজা সুলতানা বলেন, ‘আসমা প্রচণ্ড আত্মপ্রত্যয়ী একজন নারী। ঘুরে দাঁড়ানোর তীব্র বাসনা রয়েছে তার মধ্যে। তাকে এই দপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সে নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা করে। এর আগে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকার আদলে নকশিকাঁথা তৈরি করে সাড়া জাগিয়েছিল। তাকে আমরা বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতা করেছি।’

আসমা বলেন, ‘মা ও প্রতিবেশির কাছ থেকে প্রথমে সুঁইয়ের ফোঁড় শিখেছিলাম। পরে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমার একটি নকশিকাঁথার প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ইচ্ছা রয়েছে। তবে অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে পারছি না। এ কাজে কখনও কোনো ঋণও পাইনি। সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা কোনো প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা পেলে এর পরিধি আরও বাড়ানো সম্ভব হতো।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, ‘আমরা পরিষদ থেকে এসব অসহায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি শো-রুম নির্মাণ করছি। এখানেই তাদের মেলে ধরার সুযোগ হবে। আর আসমার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’

আরও পড়ুন

×