বরিশালের দুর্গাসাগর দিঘিতে ভক্ত-পূন্যার্থীদের ঢল

বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২২ | ০৯:৩৪ | আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২২ | ০৯:৩৪
আজ শনিবার অশোকাষ্টমী। চৈত্রের এই তিথিতে অন্নপূর্ণা পূজা হয়। এদিন পাপ মুক্তির জন্য পূন্যস্নানের রেওয়াজ চলছে শত বছর ধরে। আর অশোকাষ্টমীর পূন্য তিথিতে পূন্যারথী ভক্তদের ঢল নামে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী দুর্গাসাগর দীঘিতে। শনিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পুণ্যস্নান চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
পূন্যস্নানে আসা ভক্তরা জানান, শুক্রবার রাত ৯টা ১৩ মিনিটে এই স্নানোৎসবের তিথি শুরু হয়েছে। এই তিথি শনিবার রাত ১১টা ১৫ মিনিটে শেষ হবে।
প্রতিবছর চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে বরিশাল ছাড়াও অন্যান্য জেলা থেকেও দূর্গাসাগর দিঘিতে পুণ্যস্নানে আসেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। স্নানে আসা পূন্যার্থীদের বিশ্বাস, অশোকাষ্টমীর তিথিতে দীঘিতে স্নান করলে পাপমোচন হয়। এই জলে স্নান করলে মোক্ষ লাভ হয়।
পুণ্যস্নান উপলক্ষে দুর্গাসাগর দিঘির পাশেই স্থানীয় মাধবপাশা চন্দ্রদ্বীপ স্কুল ও কলেজ মাঠে বসেছে মেলা। মেলায় বসেছে হস্ত ও কুটিরশিল্প এবং ভোগ্য পণ্যের অর্ধশতাধিক পসরা।
মেলা ও পুণ্যস্নান ব্যবস্থাপনা কমিটির আহবায়ক দিলীপ কুমার রায় জানান, পুণ্যস্নান ও মেলা উপলক্ষে কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। প্রতিবছর এই তিথিতে হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী এখানে আসেন পুণ্যস্নানের জন্য।
বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষের আগমনে দূর্গাসাগর দীঘি প্রাঙ্গন মুখর হয়ে ওঠে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, করোনার কারনে গত দুই বছর পুন্যস্নান উৎসব হয়নি। এবার আয়োজন করা হয়েছে। এজন্য এবার লোক সমাগমও বেশি।
দুর্গাসাগর দিঘির পাশের প্রবীণ বাসিন্দা রূহুল আমিন (৬০) বলেন, ছোটবেলা থেকেই এই দিঘিতে পুণ্যস্নান দেখে আসছি। এছাড়া বাবা-দাদার মুখেও পুণ্যস্নান হতো বলে শুনেছি।
সকালে দিঘিপাড়ে গিয়ে দেখা যায়, আগত ভক্তরা দিঘির পাশের বটতলায় একটি নির্দিষ্ট স্থানেপূজা-অর্চনা করছেন। পূজা শেষ করে দীঘিতে স্নান করছেন তারা।
দূর্গাসাগর দীঘিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ছিলেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম রাহাতুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিমানবন্দর থানা পুলিশ, গ্রাম পুলিশসহ দুই শতাধিক নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া দীঘিতে নৌকা নিয়ে টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেন কোন দুর্ঘটনা ঘটতে না পারে।
নিরবাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাহাতুল ইসলাম বলেন, তিথি অনুযায়ী শনিবার রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত স্নানের সময়সীমা থাকলেও নিরাপত্তার কারণে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যেই স্নান শেষ করা হয়েছে।