ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

ইউএনওর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ কলেজছাত্রীর

ইউএনওর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ কলেজছাত্রীর

প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৯ এপ্রিল ২০২২ | ১০:৪২ | আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২২ | ১০:৪২

টাঙ্গাইলের বাসাইলের সাবেক ইউএনও মনজুর হোসেনের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন এক কলেজছাত্রী। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগের পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে বর্তমানে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে ইউএনও হিসেবে কর্মরত মনজুর দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী।

ওই কলেজছাত্রী গত অক্টোবরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগে দেন। এতে তিনি জানান, ২০২১ সালে বাসাইলের ইউএনও থাকাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে ইউএনও তাকে তার সরকারি বাসভবনে নিয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরে পারিবারিকভাবে মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে ঠিক হলেও ইউএনও বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে তা থামিয়ে দেন। এ সময় ইউএনও টাঙ্গাইল কুমুদিনী কলেজের পাশে নিজের তথ্য লুকিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে তাকে নিয়ে দুই মাস সংসার করেন।

এক পর্যায়ে ওই কলেজছাত্রী বিয়ের ও সামাজিকভাবে স্বীকৃতির জন্য ইউএনওকে চাপ দিলে গত বছরের সেপ্টেম্বরে তাকে কলকাতা নিয়ে বিয়ে করার আশ্বাস দেন। ভারতে গিয়ে হায়দরাবাদে একটি বাসায় থেকে দু'জনেই চিকিৎসা নেন। এ সময় ওই কলেজছাত্রী ইউএনওর পাসপোর্ট বের করে জানতে পারেন তিনি বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে। পরে তাদের সম্পর্কের বিষয় কারও সঙ্গে শেয়ার করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন মনজুর।

ভারতে ১২ দিন অবস্থান শেষে তারা দেশে ফিরে আসেন। এরপর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও ইউএনও ওই কলেজছাত্রীকে স্ত্রীর মর্যাদা দেননি। পরবর্তীতে তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যৌন হয়রানি ও প্রতারণার অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ওই কলেজছাত্রী বলেন, 'আমি স্ত্রীর অধিকার চাই।' বাসাইল উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী অলিদ ইসলাম জানান, ইউএনও মনজুর হোসেন বাসাইল থেকে যাওয়ার পর একদিন তাকে ফোন করে বলেন, একটি মেয়ে তার বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি আপনি একটু দেখেন। চেয়ারম্যান মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারি। পরে মেয়েটি বলে তিনি আইনের মাধ্যমে বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করছেন। এই বলে মেয়েটি চলে যান।

ওই কলেজছাত্রীর মা বলেন, 'ইউএনও মনজুর হোসেন আমার মেয়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমরা সামাজিকভাবে অসহায় হয়ে পড়েছি। আমার মেয়ে কলেজে যেতে পারছে না। তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি এর সঠিক বিচার চাই।'

তবে মনজুর হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'ওই মেয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।' টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গণি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়ার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সোহানা নাসরিনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইউএনও এবং ওই কলেজছাত্রীসহ সংশ্নিষ্টদের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ওই ইউএনওকে মাঠ প্রশাসন থেকে প্রত্যাহার করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আগেই চিঠি পাঠানা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন

×