বোনের শ্বশুরবাড়িতে ‘ডাকাতির পর’ পালিয়ে আরব আমিরাতে ভাই

সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২২ | ০৭:৫৮ | আপডেট: ২১ জুলাই ২০২২ | ০৮:০০
ফেনীর সোনাগাজীতে পারিবারিক ক্ষোভ থেকে বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকদের শায়েস্তা করতে তারই আপন ভাই ডাকাতি করেছেন বলে জানা গেছে। পরে ধরা পড়ার ভয়ে পালিয়ে সংযুক্ত আবর আমিরাতে পাড়ি জমান জাকির হোসেন শরীফ ওরফে রাজিব নামের ওই ব্যক্তি।
সম্প্রতি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ফেনীর জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ডাকাত দলের দুই সদস্য। তাদের জবানবন্দিতে এসব তথ্য উঠে আসে। ডাকাতির শরীফের বোন নিজেই সহযোগিতা করেন বলে জানান ওই দুই ব্যক্তি।
জানা যায়, গত ৩০ মে সোনাগাজী উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের দৌলতকান্দি গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত কারা সার্জেন্ট নাছির উদ্দিনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। কিন্তু কলাপসিবল গেট না ভেঙে ঘরে ডাকাত প্রবেশ করার ঘটনায় প্রশাসন ও এলাকাবাসীর প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি গৃহকর্তা নাছির উদ্দিন। এ নিয়ে এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।ঘটনার পরদিন বিকেলে নাছির উদ্দিন বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা ডাকাতদের বিরুদ্ধে সোনাগাজী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার পর তথ্য-প্রযুক্তির সহয়তা নিয়ে অভিযুক্তদের ধরতে মাঠে নামে পুলিশ।
গত ৫ মে রাতে সোনাগাজী মডেল থানার উপপরিদর্শক মাহবুব আলম সরকার দাগনভুঞা পৌরসভার জিরো পয়েন্ট থেকে সাব্বির হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন। কিছুদিন পর চট্টগ্রামে থেকে সাইফুল ইসলাম সৌরভ নামে আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন তিনি। দুজন নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ ও সেনবাগ উপজেলার বাসিন্দা।
পুলিশ ও আদালতে দুই ব্যক্তির জবানবন্দি সূত্রে জানা যায়, ডাকাতির পরিকল্পনার করার পর অন্য সহযোগীদের নিয়ে ডাকাতি করেন জাকির হোসেন শরীফ। এসময় ঘরের ভিতর থেকে ওই পরিবারের এক নারীই কলাপসিবল গেট খুলে দেন। একইসঙ্গে পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন করতে ক্রিকেট স্টাম্প এবং বাঁধতে ওড়না ও দড়িও সরবরাহ করেন ওই নারী।
এ প্রসঙ্গে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি খালদ হোসেন দাইয়ান বলেন, জবানবন্দিতে ডাকাতির আদ্যেপান্ত বর্ণনা করেছেন দুজন। জাকির হোসেন শরীফ নামে ব্যক্তি ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী বলে জানা গেছে। সে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের গৃহবধূর আপন ভাই।
তিনি আরও জানান, তাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে শরীফের আবুধাবি চলে যাওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান তিনি।
এদিকে আদালতে ডাকাত দলের সদস্যদের জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি অবগত নয় বলে জানান মামলার বাদি নাছির উদ্দিন। জবানবন্দিতে ডাকাতির ঘটনায় ছোট ছেলের শ্যালকের নাম উঠে এসেছে জানালে তিনি বলেন, তদন্তে যাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলবে সে যে হোক না কেন, আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই।
শরীফের বোন ও নাছির উদ্দিনের পুত্রবধূ রুমা বেগমের সাথে জানান, শ্বশুরবাড়িতে ডাকাতির ঘটনার পর তার ভাই আবর আমিরাতের দুবাই চলে যায়। তবে ডাকাতির ঘটনার সঙ্গে তার ভাইয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি অসত্য বলে দাবি করেন তিনি।