বেতন বৃদ্ধির দাবিতে চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি, অচলাবস্থার হুঁশিয়ারি

চা-শ্রমিকদের কর্মবিরতি, ছবি: সমকাল
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২২ | ০১:০৫ | আপডেট: ০৯ আগস্ট ২০২২ | ০১:০৫
চা-শ্রমিকদের মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেছেন সারাদেশের ২৪১টি বাগানের শ্রমিকরা। এরমধ্যে হবিগঞ্জের ২৪টি বাগানের শ্রমিক রয়েছে।
চা-শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা জানান, প্রতিনিয়ত নিত্যপ্র্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে চলেছে। অথচ বাংলাদেশের চা-শ্রমিকরা ১২০ টাকা মজুরিতে কাজ করছেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে শ্রমিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদ নেতৃবৃন্দের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ সময় শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু চুক্তির ১৯ মাস অতিবাহিত হলেও সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করেনি মালিক পক্ষ। তাই তারা আন্দোলনে নেমেছেন। তিন দিনের মধ্যে তাদের দাবি না মানা হলে বাগানে অচলাবস্থা সৃষ্টি ও রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দেন চা-শ্রমিক নেতারা।
হবিগঞ্জের চান্দপুর বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি সাধন সাওতাল বলেন, বাংলাদেশে চা-শ্রমিকদের একটা বিশাল অংশ রয়েছে। এ দেশের ভোটার হয়েও আমরা অবহেলিত। মৌলিক অধিকারও আমাদের ভাগ্যে জুটে না। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ১২০ টাকা মজুরি পাই। এভাবে আর আমরা চলতে পারছি না। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।
বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠনের সভাপতি খায়রুন আক্তার বলেন, বাংলাদেশে প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য হু হু করে বাড়ছে। কিন্তু সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বাগানে কাজ করে ১২০ টাকা মজুরি পাই আমরা। অথচ এই টাকা দিয়ে এখন এক লিটার তেলও মেলে না। দুই কেজি সবজি কিনতেই এই টাকা চলে যায়। তাই শ্রমিকদের বাঁচানোর স্বার্থে মজুরি ৩০০ টাকা করতে হবে।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন পাল বলেন, মালিক শ্রমিকের মধ্যে চুক্তির ১৯ মাস অতিবাহিত হলেও তারা শ্রমিকদের বেতন বাড়াননি। এখন বলছে, তারা ১৪ টাকা বেতন বাড়াবে। তাই আমরা আজকে এই কর্মসূচি পালন করছি।
তিনি বলেন, আমরা প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করছি। শুক্রবার পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচি চলবে। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে আমরা বাগান সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেব। প্রয়োজনে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হব।
- বিষয় :
- চা-শ্রমিক
- বেতন বৃদ্ধি
- সিলেট
- হবিগঞ্জ