৫ টাকায় স্যানিটারি প্যাড পাবেন চবি ছাত্রীরা

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে এই ভেন্ডিং মেশিন -সংগৃহীত ছবি
চবি সংবাদদাতা
প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ০৭:৩১
ছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) 'স্যানিটারি ন্যাপকিনের' ভেন্ডিং মেশিন উদ্বোধন করা হয়েছে। যার ফলে পাঁচ টাকার কয়েন ফেললেই মেশিন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেরিয়ে আসবে একটি প্যাড। এই সুযোগ পাবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি অনুষদ ও একটি আবাসিক হলের ৯ হাজারের অধিক ছাত্রী।
মঙ্গলবার ব্যাবসায় প্রশাসন অনুষদ অডিটরিয়ামে এর উদ্বোধন করেন অনুষদটির ডিন প্রফেসর এসএম সালামত উল্লা ভূঁইয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ, সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ, কলা ও মানববিদ্যা অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ, জীববিজ্ঞান অনুষদ, আইন অনুষদ, বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউট এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা হলে স্থ্পন করা হয়েছে এই মেশিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের এমবিএর শিক্ষার্থী তৌসিফ আহমেদের উদ্যোগে এটি বাস্তবায়ন হয়েছে। অর্থিক সহয়তা দিয়েছে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এলজি।
তৌসিফ সমকালকে জানান, 'ফেসবুকে ভারতের স্কুলগুলোতে স্যানিটারি ন্যপকিনের ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনের খবর দেখে এই পরিকল্পনা মাথায় আসে তার। তবে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছিল না। ২০১৯ সালের অক্টোবরে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা, সমাধান ও বাস্তবায়নে 'আইডিয়া প্রতিযোগিতা' আয়োজন করে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এলজি। সেখানে অংশ নেন তিনি। প্রতিযোগিতায় চারজনের মধ্যে তার আইডিয়া চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়। পুরষ্কার হিসেবে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে 'এলজি' চবিতে স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনে সাড়ে চার লাখ টাকা অনুদান দেয়। আর সেই অনুদানেই এটি বাস্তবায়িত হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এস এম সালামত উল্লা ভূঁইয়া বলেন, এই উদ্যোগের মধ্য দিয়ে নারী শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এক বিরাট অগ্রগতি সাধিত হবে। আমাদের দেশে নারীর বিশেষ প্র্রয়োজনকে মাথায় রেখে কখনো কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় না। সেখান থেকে এরকম একটি উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে।
এধরণের উদ্যোগের ফলে ঋতুস্রাব নিয়ে পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি লাইলুন নাহার। তিনি বলেন, 'পিরিয়ড নিয়ে সমাজে এখনও অনেক নেতিবাচক ধারণা ও কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। তবে এটি প্রতিটা নারীর একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তারপরও দোকান থেকে প্যাড কিনে কাগজে মুড়িয়ে বাড়ি আনতে হয়। পিরিয়ড হওয়া মানে লজ্জায় থাকতে হয় নারীদের। আমাদের স্কুলগুলোতে পাঠ্য বইয়ে এসব বিষয় বিস্তারিত থাকলেও তা পড়ানো হয় না। যার ফলে এই বিশ শতকেও পিরিয়ড বিষয়টি ট্যাবু থেকে যাচ্ছে।'
ছাত্রীরাও বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সায়মা আক্তার নিশু বলেন, 'খুবই ভালো এবং প্রয়োজনীয় একটা উদ্যোগ। এখন ব্যাপারটা কন্টিনিউ করা গেলেই হয়। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্ব নিয়ে উদ্যোগটাকে আরো বিস্তৃত এবং দীর্ঘস্থায়ী করতে পারে।'
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি ড. মো. সাহিদুর রহমান, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শাহনেওয়াজ মাহমুদ সোহেল, ড. সজীব কুমার ঘোষ ও এলজি কোম্পানির বাংলাদেশ অ্যাম্বাসেডর ডি. কে. সন।