ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

আট মাসেও বাস্তবায়ন হয়নি শাবি শিক্ষার্থীদের দাবি

আট মাসেও বাস্তবায়ন হয়নি শাবি শিক্ষার্থীদের দাবি

শাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রেস ব্রিফিং। ছবি-সমকাল

শাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ০৯:১০ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ | ০৯:১০

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার পর তীব্র আন্দোলনের মুখে দেওয়া হয়েছিল অনেক আশ্বাস। জানুয়ারিতে ওই আন্দোলনের সময় বিভিন্ন দাবি আদায়ে শাবির ২৭ শিক্ষার্থী ১৬৩ ঘণ্টা আমরণ অনশন করেন। পরে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। ওই সময় তাঁরা শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেন, সরকারের ওপর মহলের অনুরোধে এবং আশ্বাসে তাঁরা সেখানে গেছেন। শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হবে। তবে আট মাসের বেশি সময় পরও অধিকাংশ দাবি বাস্তবায়ন হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। শেষ পর্যন্ত উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেওয়া সেই ঘটনার আট মাস পেরিয়ে গেলেও উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এখনও বহাল তবিয়তে আছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আন্দোলনে আহত সজল কুণ্ডুর একক কর্মসূচিতে সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করে রোববার প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব অভিযোগ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার রাজ এ সময় বলেন, শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় আমরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচটি দাবি এবং দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে আট দফা প্রস্তাবনা নিয়ে কথা বলেছিলাম। তখন মন্ত্রী নিজের এখতিয়ারভুক্ত দাবি ও প্রস্তাবনাগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন এবং বাকি দাবিগুলো উচ্চ মহলকে জানানোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। তবে আট মাস পরও দাবিগুলোর অধিকাংশই বাস্তবায়িত হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ১৬ জানুয়ারি পুলিশের হামলার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সজল কুণ্ডুকে অন্তত নবম গ্রেডের চাকরি এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ বা চাকরি কোনোটাই পাননি সজল। উল্টো তাঁর কাছ থেকে ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনার দায়িত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রথম দিকে তাঁর শারীরিক জটিলতার চিকিৎসা নিয়মিত করা হলেও গত তিন মাস ধরে তাও বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নামে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, সব প্রতিশ্রুতি অবিলম্বে বাস্তবায়ন এবং অন্যায়ভাবে কেড়ে নেওয়া ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার তিন দফা দাবিতে ৪ সেপ্টেম্বর থেকে সজল একাই কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়াচ্ছেন। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সজলের দাবিগুলোর সঙ্গে সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করছি।

এ সময় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদিন, সাবরিনা শাহরিন রশিদ, পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী নওরিন জামান, ব্যায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী হালিমা খানম, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রক্তিম সাদমান উপস্থিত ছিলেন। 

এর আগে ১৩ জানুয়ারি রাতে হলের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গেলে প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজা অসদাচরণ করেন বলে অভিযোগ তোলেন ছাত্রীরা। এ নিয়ে তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন শাবি শিক্ষার্থীরা। পরে ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই হামলার ৪০ জনের বেশি শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর তীব্র আন্দোলন শুরু করেন শাবি শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন

×