ঢাকা রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক

অবশেষে খানাখন্দ মেরামত শুরু

অবশেষে খানাখন্দ মেরামত শুরু

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক (ফাইল ছবি)

টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২২ | ১২:০০ | আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২২ | ০০:১৪

বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের গাফিলতির কারণে যাত্রীদুর্ভোগের আরেক নাম হয়ে ওঠে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। সড়কের বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। গত কয়েক দিন ধরে এ সড়কে তীব্র যানজটে নাকাল মানুষ। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সড়কের টঙ্গীর মিল গেট এলাকায় স্থায়ী মেরামত কাজ শুরু করেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থা ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেড।

এ বিষয়ে বিআরটি প্রকল্পের সেতু কর্তৃপক্ষ অংশের প্রকল্প পরিচালক মহিরুল ইসলাম খান জানান, বর্ষায় সড়ক মেরামত করা যায় না। এ জন্য অক্টোবরের মাঝামাঝি কাজ ধরা হয়। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে সাত দিন কাজে বিঘ্ন ঘটে। টঙ্গী মিল গেটের ওই অংশে ৮০০ মিটার সড়কের নিচের কাজ করা ছিল না। সেটি শেষে বৃহস্পতিবার রাত থেকে সড়ক মেরামতের কাজ ধরা হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত ১৫০ মিটার কাজ হয়েছে। আশা করছি, শনিবারের মধ্যে পুরো অংশের গর্ত ও খানাখন্দ মেরামত করা সম্ভব হবে।

তিনি আরও জানান, সড়ক সম্প্রসারণে টঙ্গী ব্রিজের পর থেকে পশ্চিম পাশে ১৫ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করতে তিন বছর লেগেছে। নতুন যে সড়ক করা হচ্ছে, সেটি টঙ্গী বাজার থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত প্রশস্ত হবে। এ কাজ শেষ করতে এক মাস লাগতে পারে। তবে সপ্তাহখানেক পর এই সড়কে চলাচলকারীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবেন।

এদিকে, মেরামত কাজের জন্য আগামী ৪৮ ঘণ্টা বিকল্প সড়ক ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। এক্ষেত্রে ঢাকা প্রবেশে বনমালা রেলগেট থেকে টঙ্গী-পূর্ব থানা দিয়ে স্টেশন রোড হয়ে ঢাকায় এবং ধীরাশ্রম রেলগেট-হায়দারাবাদ চৌরাস্তা-নিমতলী ব্রিজ-স্টেশন রোড হয়ে ঢাকায় যেতে বলা হয়েছে। আর ময়মনসিংহের দিকে যেতে ঢাকা থেকে টঙ্গীর স্টেশন রোড ও মিরেরবাজার হয়ে ভোগড়া বাইপাস এবং কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ৩০০ ফুট হয়ে উলুখোলা ব্রিজ থেকে মিরেরবাজার হয়ে ভোগড়া বাইপাস রোড ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া সরাসরি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের হাতে একটু বাড়তি সময় নিয়ে বের হতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন জানান, যানজট নিরসন ও মানুষের ভোগান্তি কমাতে টঙ্গী মিল গেট এলাকায় সড়কের স্থায়ী মেরামত কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি, শনিবারের মধ্যে সংস্কারকাজ পুরোপুরি শেষ হবে। এ জন্য ঢাকামুখী গাড়ি বন্ধ রেখে ময়মনসিংহমুখী গাড়িগুলোকে দুই লেন; একইভাবে ময়মনসিংহমুখী গাড়ি বন্ধ করে ঢাকামুখী গাড়িগুলোকে দুই লেন করে বের করা হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, মিল গেট এলাকায় সড়কের এক পাশ বন্ধ করে সংস্কার কাজ করছেন শ্রমিকরা। অন্য পাশে দুটি লেন করে গাজীপুর ও ঢাকাগামী যান চলাচল করছে। ফলে মহাসড়কের চেরাগ আলী থেকে স্টেশন রোড পর্যন্ত থেমে থেমে গাড়ি চলাচল করছে। তবে টঙ্গীর স্টেশন রোডের পরে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

জয়দেবপুর-টঙ্গী সড়ক দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম। উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলা মিলিয়ে এ সড়কে দিনে গড়ে ৬০ হাজার যান চলাচল করে। ২০১৭ সালের গোড়ার দিকে বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০২০ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে সময় বাড়ানো হয়।

সংশ্নিষ্টরা জানান, টঙ্গী ব্রিজ থেকে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত মহাসড়কে ভালোর চেয়ে ভাঙাচোরা রাস্তায় বেশি। এ মহাসড়কে গত ৯ বছরের বেশি সময় চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। এ জন্য পুরো রাস্তার বিভিন্ন অংশে খোড়াখুড়ি করা হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে রাস্তার মাঝে ফেলে রাখা হয়েছে নির্মাণসামগ্রী। ফ্লাইওভারের গার্ডার, বিআরটি পিলার তো আছেই। সড়কের কোনো কোনো অংশ এতটাই সরু যে, একটি মাত্র গাড়ি যেতেও কষ্ট হয়। কাজের সুবিধার্থে কোনো কোনো জায়গায় একটি খোলা রেখে সব লেন বন্ধ রাখা হয়। এতে দিনের বেশিরভাগ সময় যানবাহনে চলাচলকারীদের ভোগান্তি সব মাত্রা ছাড়িয়ে যায়।

আরও পড়ুন

×