ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

ওসি, এসআই ও সাবেক প্রেমিকাসহ চারজনের বিরুদ্ধে যুবকের মামলা

ওসি, এসআই ও সাবেক প্রেমিকাসহ চারজনের বিরুদ্ধে যুবকের মামলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ | ০৮:৩৬

চট্টগ্রামে ভুয়া ইভটেজিংয়ের ঘটনা সাজিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়ার অভিযোগে ওসি, এসআই ও সাবেক প্রেমিকাসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশি মামলা করেছেন এক যুবক। 

বৃহস্পতিার শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. শফি উদ্দিনের আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। নালিশি মামলাটি চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনারকে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি দায়ের করেছেন চট্টগ্রামের প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ'র ছাত্র রুবাইয়াত সায়েম।

মামলায় আসামি করা হয়েছে- রুবাইয়াতের সাবেক প্রেমিকা ইয়াসমিন সুমি, তার ভাই কামরুল ইসলাম, নগরীর পাঁচলাইশ থানার তৎকালিন ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ ও এসআই আবু তালেব।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ সমকালকে বলেন, মোবাইল কোর্টে কথিত ঘটনা সাজিয়ে সাজা দেওয়ার অভিযোগ এনে এক যুবক নালিশি মামলা দায়ের করার পর শুনানি শেষে আদালত ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে মহানগর পুলিশের ডিসি ডিবিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আরজিতে বাদি অভিযোগ করেন, ১ নম্বর আসামি শাহানা ইয়াসমিন সুমি ও রুবায়েত কলেজ জীবন থেকে বন্ধু ছিলেন। তারা উভয়েই একসঙ্গে চট্টগ্রামে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ'তে ভর্তি হন। এক সঙ্গে পড়াশোনার কারণে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক তৈরি হয়। বিষয়টি সুমির ভাই কামরুল ইসলাম জানতে পারেন। তারা প্রেমের সর্ম্পক মেনে না নেওয়ায় ২০১৬ সালের ১৯ নভেম্বর তাদের সর্ম্পক নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু তারপরও কামরুল কিছু সন্ত্রাসী নিয়ে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল বাদীকে ধরে কেবি আমান আলী রোডের আগমনী জুয়েলারিতে আটকে রাখেন। তারা র‌্যাবের হাতে বাদিকে তুলে দেন। এর পরদিন ২০১৭ সালের ১১ এপ্রিল বাদিকে র‌্যাব নগরীর পাঁচলাইশ থানা পুলিশের হাতের তুলে দেন। কিন্তু থানা পুলিশ বাদির বিরুদ্ধে কোন নিয়মিত মামলা না করে বেআইনি ভাবে থানায় আটকে রাখেন। ১১ এপ্রিল দুপুরে বাদিকে থানা পুলিশ একটি গাড়িতে তুলে প্রর্বতক মোড়ের দিকে নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে গাড়িটি বদনাশাহ মাজারের সামনে থামায়। সেখানে ১ নম্বর আসামি সুমি, ২ নম্বর আসামি কামরুলসহ তাদের কিছু লোকজনকে দেখতে পাই। তারপর বেশ কয়েক মিনিট পরে সেখানে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ শিকদার স্বশরীরে হাজির হন। ম্যাজিস্ট্রেট জানান, আমি আমার সাবেক প্রেমিকা সুমিকে ইভটিজিং করেছি। আমাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়ে চলে যান ম্যাজিস্ট্রেট। পরে আমাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমি আপিল করি। ১৮ দিন কারাভোগ করার পর জামিনে মুক্তি পাই।

রুবাইয়াত বলেন, আপিল শুনানি শেষে আদালত চলতি বছরের গত ১৭ জুন কারাভোগ করা ১৮ দিনকে মূল সাজা ধরে বাকি সাজা মওকুফ করে দেন। এরপরই মোবাইল কোর্টের কথিত রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এবং ভুয়া সাজা দেওয়ায় আইনি প্রতিকার চেয়ে চট্টগ্রাম ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছি। আরজিতে সাবেক প্রেমিকা ও তার ভাই কামরুলকে  বেআইনিভাবে এ ঘটনায় সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়েছে ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ ও এসআই আবুর বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন

×