ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

এবার বাবা-সৎমার নৃশংসতার বলি আরেক শিশু

এবার বাবা-সৎমার নৃশংসতার বলি আরেক শিশু

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ | ১১:০০

সুনামগঞ্জে বাপ-চাচার হাতে বর্বর হত্যার শিকার শিশু তুহিনের ঘটনায় দেশবাসী যখন বিমূঢ়, ঠিক তখনই নড়াইলের লোহাগড়ায় বাবা ও সৎমায়ের নৃশংসতার বলি হলো আরেক শিশু রমজান (৭)। 

বুধবার বিকেলে একটি ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত রমজান লোহাগড়া পৌরসভার সিংগা গ্রামের ইলিয়াস শেখের (ইলু শেখ) ছেলে। 

এ ঘটনায় পুলিশ শিশুটির বাবা ও মামাকে আটক করেছে। আরেক অভিযুক্ত সৎমা তহমিনা বেগম পলাতক।

গ্রামবাসী ও নিহতের আত্মীয়রা জানান, সিংগা গ্রামের ভ্যানচালক ইলিয়াস শেখের দ্বিতীয় স্ত্রী মাবিয়ার ছেলে রমজান। ইলিয়াস স্ত্রী-সন্তান থাকা অবস্থায় একই গ্রামের মাবিয়াকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দুই স্ত্রী নিয়ে তার সংসারে সুখ ছিল না। এক পর্যায়ে ইলিয়াস শেখ মাবিয়াকে তাড়িয়ে দিলে শিশু সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতেই আশ্রয় হয় তার। এ নিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন মাবিয়া। মামলার রায়ে মাবিয়া ও তার সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ ইলিয়াসকে প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা দিতে বলা হয়। বছর তিনেক আগে মাবিয়া মারা গেলে ইলিয়াস শেখ টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এদিকে নানাবাড়িতে থেকেই বড় হচ্ছিল রমজান।

রমজানের নানার পরিবার জানায়, সিংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র রমজান বুধবার সকালে স্কুলে যায়। ক্লাস শেষে সাড়ে ১২টার দিকে তার বাড়ি ফেরার কথা। কিন্তু বিকেল হয়ে গেলেও বাড়িতে না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এক পর্যায়ে বিকেলে ইলিয়াসের বাড়ির পাশের একটি ডোবায় রমজানের লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ সন্ধ্যায় লাশ উদ্ধার করে।

নিহত শিশুর খালা লাকি বেগম অভিযোগ করেন, অর্থ-সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্যই রমজানকে তার পিতা ও সৎমা তহমিনা বেগম মিলে হত্যা করে লাশ ডোবায় লুকিয়ে রেখেছিল।

লোহাগড়া থানার এসআই সাইফুল জানান, লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করা হয়েছে। তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শিশুটিকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

লোহাগড়া থানার ওসি মো. মোকাররম হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। শিশুটিকে কে বা কারা হত্যা করেছে; তদন্ত করে বের করা হবে এবং খুনিকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের পিতা ইলিয়াস ও মামা ইউসুফকে আটক করা হয়েছে। তবে সৎমা পলাতক।

আরও পড়ুন

×