ঢাকা সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫

কেসিসির অভিযানে রিকশা বন্ধ, নগরবাসীর দুর্ভোগ

কেসিসির অভিযানে রিকশা বন্ধ, নগরবাসীর দুর্ভোগ

খুলনা ব্যুরো

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ | ০৯:১৮

খুলনায় পাঁচ দিন ধরে রিকশা চলাচল বন্ধ রয়েছে। রিকশা থেকে ব্যাটারি ও ইঞ্জিন অপসারণে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) নির্দেশের প্রতিবাদে রিকশা বের করছে না মালিক পক্ষ। 

এতে দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা পড়েছেন সব চেয়ে বেশি সংকটে। নগরীতে হাতেগোনা কয়েকটি প্যাডেল রিকশা চললেও ভাড়া চাইছে কয়েকগুণ।

খুলনা নগরীতে কোনো গণপরিবহন নেই। নগরীর ভেতরে চলাচলের জন্য মানুষ ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও রিকশার ওপর নির্ভরশীল। কয়েক বছর ধরে রিকশায় ব্যাটারিচালিত ইঞ্জিন সংযোজন করা হয়েছে। এতে রিকশায় গতি বেড়েছে; কিন্তু গতি নিয়ন্ত্রণের কোনো উপায় যানটিতে নেই। ফলে ভয়াবহ আকারে বেড়েছে সড়ক দুর্ঘটনা। এ অবস্থায় রিকশা থেকে ইঞ্জিন অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিল নগরবাসী।

কেসিসি থেকে জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে রিকশা থেকে ব্যাটারি ও ইঞ্জিন খুলে ফেলতে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল কেসিসি। পরে বিভিন্ন মহলের সুপারিশে তিন মাস সময় বৃদ্ধি করে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। পুলিশ কমিশনারের অনুরোধে আরও ১৫ দিন সময় বাড়িয়ে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ব্যাটারি ও ইঞ্জিন অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে কেসিসির এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১৪ অক্টোবর থেকে ব্যাটারি ও ইঞ্জিনচালিত রিকশা চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন মালিক ও চালকরা। ১৬ অক্টোবর থেকে কেসিসির অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে নগরীতে ব্যাটারিচালিত কোনো রিকশা চলছে না।

গত কয়েকদিন নগরীতে ঘুরে ব্যাটারিচালিত কোনো রিকশার দেখা পাওয়া যায়নি। যে সামান্য কয়েকটি রিকশা দেখা গেছে সেগুলোর ব্যাটারি ও ইঞ্জিন খুলে রাখা হয়েছে। রিকশা না থাকায় নগরের গলির সড়কগুলো থেকে মানুষকে হেঁটে প্রধান সড়কে গিয়ে ইজিবাইক ব্যবহার করতে হচ্ছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সমস্যা হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

কেসিসির সিনিয়র লাইসেন্স অফিসার ফারুক হোসেন তালুকদার সমকালকে বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে মালিকরাই বেশি আগ্রহী। কারণ একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা থেকে প্রতিদিন ২৫০ টাকা ভাড়া পাওয়া যায়। অন্যদিকে প্যাডেলচালিত রিকশার ভাড়া ৬০ টাকা। দেখা যায়, একজন রিকশাচালক ওই রিকশার মালিককে ২৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে নিজের সংসারের খরচ তুলতে তাকে সারাদিনই ছুটতে হয়। অন্যদিকে প্যাডেল রিকশায় মালিককে ৬০ টাকা দিয়ে একবেলা চালালেই তার সংসার খরচ উঠে যায়। এ জন্য সাধারণ চালকরা প্যাডেল রিকশা চালাতে চাইলেও মালিক পক্ষের কারণে পারছে না।

খুলনার সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশার কারণে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আহত হচ্ছে, পঙ্গু হচ্ছে। নগরবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই এটা বন্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, যে কোনো ভালো কাজের শুরুতে কষ্ট হয়। আর দু-একটা দিন হয়তো কষ্ট হবে, এর পর ব্যাটারি খুলে সবাই রাস্তায় নামবে। তখন কোনো সমস্যা থাকবে না।

আরও পড়ুন

×