ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

২০ বছর পর সাক্ষ্য দিলেন মামলার বাদী তৈমূর

২০ বছর পর সাক্ষ্য দিলেন মামলার বাদী তৈমূর

নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ী সাব্বির হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিনে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আসামি জাকির খানকে আদালতে আনা হয়। ছবি-সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ০৮:২০

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাব্বির আলম খন্দকার হত্যায় ২০ বছর পর আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। এতে তিনি দায়ী করেছেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (দ্বিতীয়) আদালতের বিচারক শাম্মী আক্তারের আদালতে সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এ সময় তাঁকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। কাঠগড়ায়ও উপস্থিত ছিলেন মামলাটির আসামি জাকির খান।

সাব্বির খন্দকার বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা তৈমূর আলম খন্দকারের ছোট ভাই। জাতীয় পার্টির (না-ফি) নেতা সাব্বির বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনেরও সহসভাপতি ছিলেন। ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে হাঁটতে বেরিয়ে বাড়ির অদূরে আততায়ীদের গুলিতে নিহত হন তিনি।

এ ঘটনায় মামলা করেন তৈমূর খন্দকার। তিনি গতকাল আদালতে ভাই হত্যার বর্ণনা দেন। তৈমূর খন্দকার বলেন, জাকির খানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ঝুটের ব্যবসায় বাধা, হত্যাসহ নানা অভিযোগে মামলা রয়েছে। মাদক ও ঝুট ব্যবসায় সন্ত্রাসীদের বাধার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন সাব্বির। এ কারণে জাকির খান তাঁকে হত্যা করায়।

আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রবিউল হোসেন, হুমায়ুন কবির, রাজিব মণ্ডলসহ কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে তৈমূর আলম খন্দকারকে জেরাকারী রবিউল হোসেন বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) জেরা শেষ হয়নি। তাঁরা জেরার জন্য আদালতের কাছে আরও একদিন সময় চেয়েছেন। আদালত তা আমলে নিয়ে ৬ মার্চ বাকি জেরার তারিখ নির্ধারণ করেন।

অপর আইনজীবী হুমায়ুন কবির দাবি করেন, পাসপোর্ট অনুযায়ী ঘটনার সময় জাকির খান দেশের বাইরে ছিলেন। তিনি কীভাবে হত্যায় জড়িত? মামলার এজাহারেও জাকির খানের
নাম নেই জানিয়ে তাঁর মোয়াক্কেলের বিরুদ্ধেকরা মামলাগুলোকে রাজনৈতিক হিসেবে উল্লেখ করেন।

সাব্বির হত্যার দীর্ঘদিন পর বাদীর সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুর রহিম। তাঁর আশা, আগামী তারিখগুলোতে বাদীপক্ষ সাক্ষী উপস্থাপন করতে পারলে এ মামলার বিচারকাজ দ্রুত শেষ হবে।

নিহত সাব্বির খন্দকারের বড় মেয়ে খন্দকার ফাতেমা-তুজ জোহরা শবনমও বাদীপক্ষের আইনজীবী। তিনি বলেন, তাঁর বাবার কাছে জাকির খানের বিরুদ্ধে কিছু তথ্য-প্রমাণ ছিল। সন্ত্রাসীদের ভয় না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন তিনি। এসব কারণেই হত্যার শিকার হতে হয়।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সাব্বির আলম হত্যার পর থাইল্যান্ড চলে যান জাকির খান। দীর্ঘ দেড় যুগ তিনি থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়াসহ কয়েকটি দেশে পালিয়ে ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন থানায় কয়েক ডজন মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ২০০৩ সালে মাসদাইর এলাকায় সাব্বির খন্দকার হত্যা, ১৯৯৫ সালে দেওভোগ এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদ হত্যাও রয়েছে। গত বছর দেশে ফেরেন জাকির। ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে পিস্তলসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আরও পড়ুন

×