ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটিতে ১৯ বছর পার

তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটিতে ১৯ বছর পার

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৮:০০

২০০৪ সালে গঠিত হয়েছিল রাজবাড়ী জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি। এরপর কেটে গেছে ১৯ বছর। কমিটির অনেকেই নিষ্ফ্ক্রিয়। কেউ চলে গেছেন রাজবাড়ীর বাইরে। এত বছর পর সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে, এতে উজ্জীবিত নেতাকর্মীরা।
আগামী ৪ মার্চ রাজবাড়ী রেলওয়ে ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে জেলা যুবলীগের সম্মেলন। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণায় নেতাকর্মীর মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। নতুন কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক স্থবিরতা দূর হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে চালাচ্ছেন জোর লবিং। যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবিসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন টাঙিয়ে তাঁরা দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন। যুবলীগ নেতারা বলছেন, ত্যাগী, পরীক্ষিত ও পরিচ্ছন্ন ইমেজের নেতৃত্ব চাইছেন তাঁরা।
সূত্র জানায়, রাজবাড়ী জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ১৯৯৬ সালে। এরপর ২০০৪ সালে ওই কমিটি ভেঙে দিয়ে জহুরুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং আবুল হোসেন ও শাহ মো. জাহাঙ্গীর জলিলকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এরপর আর কমিটি হয়নি। বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় থাকছেন দীর্ঘদিন। যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মো. জাহাঙ্গীর জলিল জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে সাংস্কৃতিক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন। নতুন করে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর নেতৃত্ব পেতে তৎপর নেতাকর্মীর মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক নেতার সংখ্যাই বেশি।

সভাপতি পদে যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে তাঁরা হলেন সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান শরীফ, সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান শামীম, রাজবাড়ী সরকারি কলেজের সাবেক জিএস আশরাফুল ইসলাম আশা, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হরিপদ সরকার রানা ও আল মাসুদ। সাধারণ সম্পাদক পদে সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত হাসান, যুবলীগ নেতা রামিম হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ রাজীব, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এরশাদের নাম শোনা যাচ্ছে।
সভাপতি প্রার্থী আসাদুজ্জামান শামীম বলেন, ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নেওয়ার পর যুবলীগ করবেন ভেবে রেখেছেন। কিন্তু সম্মেলন না হওয়ায় তাঁরা যুবলীগে যেতে পারেননি। ৪ মার্চের সম্মেলন সামনে রেখে তাঁরা এখন উজ্জীবিত। আগামী নির্বাচনে রাজবাড়ীর দুটি আসনে আওয়ামী লীগের বিজয়ে যাঁরা বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবেন, তাঁদেরই নেতৃত্বে আনার দাবি জানান তিনি।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শওকত হাসান বলেন, দলের দুর্দিনে যাঁরা হাল ধরেছিলেন, তাঁদের যেন মূল্যায়ন করা হয়। বিশেষ করে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর ক্ষেত্রে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীকে মনোনীত করার দাবি তাঁর।
জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মো. জাহাঙ্গীর জলিল বলেন, নতুন কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে আবার যুবলীগ প্রাণ ফিরে পাবে। নতুন কমিটিতে যেন ত্যাগী, পরীক্ষিত কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাঁরা দুর্দিনে রাজপথে ভূমিকা রেখেছেন।
জেলা যুবলীগের অপর যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হোসেন বলেন, সম্মেলন সফল করতে আটটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজবাড়ী এসে সম্মেলন প্রস্তুতি সভা করে গেছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫ জনের বেশি জীবনবৃত্তান্ত দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
রাজবাড়ী জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম বলেন, সম্মেলন সফল করতে তাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তরুণ ও নবীন মিলে যারা আগামীতে ভালো নেতৃত্ব দিতে পারবে, লেজুড়বৃত্তির বাইরে গিয়ে একটি শক্ত নেতৃত্ব তৈরি করবে, যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকবে না- এমন নেতৃত্বই তিনি আশা করছেন।

আরও পড়ুন

×